সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: আর্থিক অভাব যদি মানুষকে দরিদ্র করে তোলে, তাহলে বোধহয় অর্থ আনে মনের দীনতা। নইলে কি আই ফোন খুইয়ে অন্যের দারিদ্র্য নিয়ে রসিকতায় মেতে উঠতে পারেন মার্কিন তরুণী? বলতে পারেন, যে দেশের মানুষের আই ফোন কেনার সামর্থ্য নেই, তাঁদের ফোন চুরি করারও যোগ্যতা নেই? কলিন গ্রেডি নামে আমেরিকার এক যুবতী ইনস্টাগ্রামে একের পর এক পোস্টে এভাবেই বিদ্ধ করেছেন ভারতকে, ভারতবাসীকে। এনিয়ে তোলপাড় সোশ্যাল মিডিয়া। বিপাকে পড়ে পোস্টগুলি মুছে দিতে বাধ্য হন কলিন।
দিন কয়েক আগে জয়পুরে বেড়াতে এসেছিলেন ইন্ডিয়ানাপোলিসের বাসিন্দা কলিন গ্রেডি। পেশায় তিনি একজন ব্লগার এবং যোগা প্রশিক্ষক। সঙ্গে ছিল মাস পাঁচ আগে কেনা ঝকঝকে iPhone X। গোলাপি শহরের অলিগলিতে ঘুরতে ঘুরতে তাঁর সাধের আই ফোনটি হারিয়ে যায়। মার্কিন ব্লগার আর মেজাজ ঠিক রাখতে পারেননি। সোশ্যাল মিডিয়ায় তিনি গোটা গোটা অক্ষরে লেখেন, ‘আইফোনটি যে দাম দিয়ে কিনেছিলাম, এদেশের অনেক মানুষ সারাজীবনেও তা রোজগার করতে পারেন না। হয়তো জানেনই না আইফোন কীভাবে ব্যবহার করতে হয়। ফোনটা চুরি করে কোনও লাভ হবে না।’ চুরি এবং ফোন উদ্ধার পর্বের অভিজ্ঞতা জানাতে গিয়ে তিনি আরও লিখেছেন, ‘একঘণ্টা পর আমার খোয়া যাওয়া আইফোন থেকে একটি ফোন আসে। বলা হয়, ফোনটি পাওয়া গিয়েছে। সেই নম্বর ট্র্যাক করে ফোনটি ফেরত আনতে যাই। আশ্চর্যজনকভাবে দেখি, যিনি আমার ফোনটি উদ্ধার করেছেন, তিনি নিজেও আইফোন ব্যবহার করেন। সম্ভবত তাই গুরুত্ব বুঝেছেন।’
কিন্তু কলিন নিজে এটা বুঝতে অক্ষম, আইফোন হোক বা অন্য কোনও যে কোনও বস্তু, সেসব সম্পর্কে ধারণা থাক বা না থাক, হৃত দ্রব্য ভারতবাসী সযত্নেই তুলে রাখবেন, ফেরত দেওয়ার আপ্রাণ চেষ্টা করবেন। কারণ, ভারতের মূল মন্ত্র – অতিথি দেব ভবঃ। অতিথির বিন্দুমাত্র অসুবিধায় সবচেয়ে সহজে হাত বাড়িয়ে দেন ভারতবাসীই। শতকোটির দেশ নিয়ে কলিন তাই অনায়াসে লিখতে পারেন, ‘সবচেয়ে দরিদ্র আর সর্বাধিক জনসংখ্যার দেশ’। ভাগ্যিস, সর্বাধিক জনসংখ্যার দেশ। তাই হয়তো কলিনের বহু মূল্যবান আইফোনটি খুঁজে দেওয়ার মানুষের অভাব ছিল না। অথচ কলিন এটাও বোঝেননি, অর্থনীতি যেমনই হোক, মনের ঐশ্বর্যে এই দরিদ্র দেশটাই অনেক ধনী। যে উচ্চতায় পৌঁছতে বরং প্রথম বিশ্বের দেশগুলোকে পেরোতে হবে অনেকটা সময়।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.