সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: পেহলু খানকে পিটিয়ে মারার ঘটনায় অভিযুক্ত ছয়জনকেই বেকসুর খালাস বলে ঘোষণা করল রাজস্থানের আদালত। ‘বেনিফিট অফ ডাউটের’ ভিত্তিতে ওই ছয় অভিযুক্তকে বুধবার মুক্তি দিলেন আলোয়ারের অতিরিক্ত জেলা বিচারক। রাজস্থান সরকার এই রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে যাওয়ার কথা জানিয়েছে।
পেহলু ছিলেন দুধ ব্যবসায়ী। রমজানের আগে দুধের চাহিদা বাড়ে। বাড়তি দুধের জোগান দিতেই ২০১৭ সালের ১ এপ্রিল রাজস্থানের জয়পুরের একটি পশুমেলা থেকে গরু কিনে হরিয়ানার বাড়িতে ফিরছিলেন তিনি। কিন্তু রাজস্থানের আলোয়ারের কাছে জয়পুর-দিল্লি জাতীয় সড়কের উপর পেহলুদের গাড়িটি দাঁড় করায় কয়েকজন স্বঘোষিত গোরক্ষক। গোরক্ষকরা পেহেলুকে প্রবল মারধর করে। পশু কেনার প্রমাণপত্র হিসাবে বিল দেখালেও দুষ্কৃতীদের মারধরের হাত থেকে রেহাই পাননি পেহলু। গুরুতর জখম অবস্থায় পেহলুকে স্থানীয় সরকারি হাসপাতালে ভরতি করা হয়। তিনদিন পর হাসপাতালেই পেহলুর (৫৫) মৃত্যু হয়।
মারধরের ঘটনাটি মোবাইল ক্যামেরায় ভিডিও রেকর্ডিং করে কয়েকজন। মুহূর্তের মধ্যে ওই ভিডিও ভাইরাল হয়। ভিডিও ফুটেজ খতিয়ে দেখে পুলিশ কয়েকজনকে শনাক্ত করে। পরে ঘটনায় জড়িত থাকার কারণে নয়জনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তবে তিনজন নাবালক হওয়ায় তারা আগেই জামিনে ছাড়া পেয়ে গিয়েছে। জুভেনাইল আদালতে ওই তিনজনের বিচার চলছে। বুধবার বাকি ছয় অভিযুক্তও আদালতের ‘বেনিফিট অফ ডাউটের’ কারণে মুক্তি পেল। অভিযুক্তদের আইনজীবী তাঁর সওয়ালে দাবি করেন, ভাইরাল হওয়া ভিডিও ফুটেজের সত্যতা যাচাই করতে ফরেনসিক পরীক্ষা করা হয়নি। তাই প্রমাণ হিসাবে ওই ভিডিও ফুটেজ গ্রাহ্য নয়। আদালত এদিন তার রায় ঘোষণা করতে গিয়ে জানায়, অভিযুক্তদের শাস্তি দেওয়ার জন্য শুধুমাত্র ওই ভিডিও রেকর্ডিং যথেষ্ট নয়। তাই ‘বেনিফিট অফ ডাউটের’ ভিত্তিতে ওই ছয় অভিযুক্তকে মুক্তি দেওয়া হল। মারধরের ওই ঘটনার তদন্তে নেমে পুলিশ দু’টি এফআইআর দায়ের করে। যার একটি গোরক্ষকদের বিরুদ্ধে। অন্যটি পেহলু ও তাঁর ছেলের বিরুদ্ধে। যথাযথ অনুমতি ছাড়াই এক রাজ্য থেকে অন্য রাজ্যে পশু নিয়ে যাওয়ার কারণে পেহলু ও তাঁর ছেলের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করে পুলিশ।
এদিন রায় ঘোষণার পর সরকারি আইনজীবী যোগেন্দ্র খাতানা বলেছেন, আদালতের নির্দেশ হাতে পেলে বিষয়টি পর্যালোচনা করে দেখে উচ্চ আদালতে আবেদন করা হবে। পেহলু মিও মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষ। মিও পঞ্চায়েত প্রধান শের মহম্মদ এদিন জানিয়েছেন, তাঁরা এই রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে যাবেন। ৭ আগস্ট এই মামলার শুনানি শেষ হয়। পেহলুর দুই ছেলে ছাড়াও ৪০ জনেরও বেশি এই মামলায় সাক্ষী দেন। ঘটনার দিন পেহলুর সঙ্গে তাঁর দুই ছেলেও ছিলেন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.