সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ‘ওয়ানাক্রাই, পেটিয়া’-র পর এবার ‘লকি’-র আতঙ্ক জাঁকিয়ে বসেছে সাইবার দুনিয়ায়। ‘লকি’ হল এক নতুন র্যানসমওয়্যার বা কম্পিউটার ভাইরাস যার মাধ্যমে হ্যাকাররা কোনও ব্যক্তি বা সংস্থার কম্পিউটার সিস্টেমের সমস্ত ফাইল হ্যাক করে সেটা লক করে দেয়। ফলে, ব্যবহারকারী ওই কম্পিউটার আর ব্যবহার করতে পারেন না। ফাইল খোলা বা আনলক-এর জন্য মোটা রকমের ‘মুক্তিপণ’ চাওয়া হয়। একমাত্র ‘র্যানসম’ বা মুক্তিপণ মেটানো হলে তবেই কম্পিউটার ফের সচল করা হয়। জানা গিয়েছে, ভারতীয় মুদ্রায় মুক্তিপণের পরিমাণ প্রায় ১.৫ লক্ষ টাকা। লকি নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকার ইতিমধ্যেই বিশেষ সতর্কতা জারি করেছে।
[এবার আপনার স্মার্টফোনেও হানা দিতে পারে ‘র্যানসমওয়্যার’ ভাইরাস!]
‘ইন্ডিয়ান কম্পিউটার এমারজেন্সি রেসপন্স টিম’ (সিইআরটি) জানিয়েছে, কোনও সন্দেহজনক মেল পাঠানো হলে সেই মেল যেন খোলা না হয়। এ বিষয়ে দেশের সব সরকারি ও বেসরকারি সংস্থাকে সাবধান করেছে সার্ট। ক্ষতি করার ক্ষমতার বিচারে লকি র্যানসমওয়্যারকে ‘হাই রিস্ক’ বলে উল্লেখ করেছে সার্ট। রবিবার টুইটারে এই কথা জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় ইলেকট্রনিক্স ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রকের অতিরিক্ত সচিব অজয় কুমার। ২০১৬-র শুরুতেই লকি-র হানার খবর প্রকাশ্যে আসে। তবে পেটিয়া এবং ওয়ানাক্রাই যেভাবে বিশ্বজুড়ে প্রভাব বিস্তার করতে সক্ষম হয়েছিল প্রথমদিকে তেমনটা করতে পারেনি লকি। কমোডো, সিম্যানটেক, ম্যালওয়্যার-এর মতো সাইবার নিরাপত্তা সংস্থাগুলি গত মাসেই লকি সম্পর্কে সতর্কবার্তা দিয়েছিল।
এদিকে ‘সিইআরটি’ জানিয়েছে, যদি মেলের সাবজেক্টে ‘ডকুমেন্টস’, ‘ফোটো’, ‘প্লিজ প্রিন্ট’, ‘স্ক্যানস’, ‘পিকচার্স’ এবং ‘ইমেজস’-এর মতো কোনও সাধারণ ও পরিচিত শব্দ থাকে তা হলে সেই মেল না খোলাই ভাল। তবে শুধু ওই শব্দগুলোই নয়, হ্যাকাররা অন্য ভাবেও কম্পিউটার সিস্টেমে হামলা চালাতে পারে। তাই কোনও রকম সন্দেহজনক মেল দেখলেই সেটাকে এড়িয়ে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছে ‘সিইআরটি’। গুরুত্বপূর্ণ ফাইলের প্রতিদিন ব্যাক আপ নিয়ে রাখার কথাও জানিয়েছে সার্ট। লকির হাত থেকে রক্ষা পেতে বিভিন্ন সংস্থাকে অ্যান্টি-স্প্যাম সফটওয়্যার ইনস্টল করতে এবং স্প্যাম-লিস্ট আপডেট করতে পরামর্শ দিয়েছে সার্ট।
[র্যানসমওয়্যার’ হানা তিরুপতিতেও, ত্রাহি ত্রাহি রব মন্দিরে]
গত জুনে আমেরিকা, ইউরোপ, এশিয়া ও অস্ট্রেলিয়ার সাইবার সিস্টেমে বড়সড় আঘাত হেনেছিল পেটিয়া। পেটিয়ার দাপটে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল ইউক্রেন। একাধিক বহুজাতিক সংস্থা, ওষুধ নির্মাণকারী সংস্থা এমনকী, আমেরিকার কয়েকটি হাসপাতালের কম্পিউটার ব্যবস্থাও ভেঙে পড়েছিল। ভারতও ওই সাইবার হামলা থেকে রেহাই পায়নি। মে মাসে বিশ্বের শতাধিক দেশে হামলা করেছিল কম্পিউটার ভাইরাস ‘ওয়ানাক্রাই র্যানসমওয়্যার’। ‘ওয়ানাক্রাই’-এর হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলির মধ্যে ভারত ছিল তিন নম্বরে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.