নন্দিতা রায়, নয়াদিল্লি: বাংলাকে যে বিজেপি বহুদিন ধরেই ‘পাখির চোখ’ করেছে, তা সর্বজনবিদিত। লোকসভা নির্বাচন যত এগিয়ে আসছে বিজেপির অন্দরে বাংলা নিয়ে তৎপরতা পাল্লা দিয়ে বাড়ছে। বাংলায় ক্ষমতা দখল করতে তাঁরা প্রস্তুত বলে দলের জাতীয় মঞ্চ থেকেই দাবি করলেন দলের সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ। একইসঙ্গে এই লক্ষ্যকে সামনে রেখে চললেই সাফল্য আসবে জানিয়ে দলের নেতা-কর্মীদের মনোবল চাঙ্গা করার কাজও সেরে রাখলেন তিনি।
শুক্রবার থেকে রাজধানী দিল্লির রামলীলা ময়দানে বিজেপির দু’দিনের জাতীয় পরিষদের বৈঠক শুরু হয়েছে। সেই বৈঠকের উদ্বোধনী ভাষণে শাহ বলেন, “২০১৪ সালে বিজেপির উন্নয়নের যে যাত্রা শুরু হয়েছিল তা ছয় রাজ্য দিয়ে শুরু হলেও এগোতে এগোতে সুদূর উত্তর-পূর্বাঞ্চলে পৌঁছে গিয়েছে। বাংলায় ক্ষমতা দখলের জন্য আমরা পুরোপুরি প্রস্তুত হয়ে বসে রয়েছি। বিহার, ওড়িশায় আমরা পৌঁছে গিয়েছি।” পাশাপাশি, বাংলার শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসের প্রতি তীব্র আক্রমণ করেছেন তিনি। লড়াইয়ে হাতিয়ার হিসাবে বেছে নিয়েছেন সাম্প্রতিক জাতীয় নাগরিকপঞ্জি (এনআরসি) ইস্যু। শাহ এদিন বলেন, “অনুপ্রবেশ সমস্যা সমাধানের জন্য এনআরসির ব্যবস্থা করা হয়েছে। কিন্তু কংগ্রেস, তৃণমূল কংগ্রেস, সপা, বসপা সবাই এদের নিয়ে কাঁদছে। এরা কোথায় যাবে, কী খাবে, তাদের নিয়ে চিন্তার শেষ নেই। যেন এদের মাসতুতো ভাই।” এনআরসি ইস্যু নিয়ে আগামী দিনে বিজেপি যে বাংলায় পদক্ষেপ করতে পারে সেই সূক্ষ্ম ইঙ্গিতও এদিন শাহের কথায় ধরা পড়েছে।
তিনি আরও বলেছেন, “অনুপ্রবেশকরীরা দেশকে ঘূণের মতো সাবড়ে দিচ্ছে। আমাদের কাছে এটা ভোটব্যাংকের বিষয় নয়, দেশের নিরাপত্তার বিষয়। আর আমরা দেশের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করবই।” এদিনের বৈঠকে কৃষক ও গরিব কল্যাণ নিয়ে দু’টি প্রস্তাবও গৃহীত হয়েছে। আজ শনিবার একটি রাজনৈতিক প্রস্তাব গৃহীত হবে। ভাষণ দেবেন মোদিও। দলের জাতীয় পরিষদের বৈঠকে বিজেপি রামমন্দির নিয়ে কোন পদক্ষেপের কথা ঘোষণা করে সেদিকে নজর ছিল সকলেরই। তবে সারা দেশের নেতা-কর্মীরা যে সেই বিষয়টিকেই সবচেয়ে গুরুত্ব দিয়ে দেখছে এদিন তার প্রমাণ মিলল। শাহর এক ঘণ্টার বেশি ভাষণে প্রায় পঁয়তাল্লিশ মিনিট পরে তিনি রামমন্দিরের কথা তোলেন। আর তা বলা মাত্রই বিজেপির নেতা-কর্মীদের উচ্ছ্বাস ছিল চোখে পড়ার মতো। প্রায় হাজার দশেক দলীয় কর্মীদের উল্লাসে একসময় কান পাতা দায় হয়ে পড়েছিল সকলেরই। মঞ্চ থেকে হাত দেখিয়ে শান্ত হওয়ার জন্য শাহ-র ইশারাতেও যেন বাঁধ মানছিল না তাদের আবেগ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.