সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: শুধু দেশ নয়। গোটা পৃথিবীজুড়ে আর্থিক বৈষম্যের ভয়াবহ সত্য তুলে ধরল ‘অক্সফ্যাম’ নামে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। বিশ্বজুড়ে দারিদ্র দূরীকরণ এবং মানবাধিকার রক্ষার্থে দীর্ঘদিন ধরেই কর্মরত এই সংগঠন সম্প্রতি ‘টাইম টু কেয়ার’ শীর্ষক একটি রিপোর্ট পেশ করেছে। আর তাতেই জানা গিয়েছে যে, ভারতের ৬৩ জন ধনকুবেরের হাতে যে ধনসম্পদ কুক্ষিগত রয়েছে, তা কেন্দ্রীয় বাজেটের থেকেও অনেকটাই বেশি।
‘অক্সফ্যাম’(Oxfam) -এর রিপোর্ট অনুযায়ী, মুকেশ আম্বানি, আজিম প্রেমজি, সুনীল মিত্তলদের মতো ৬৩ জন ধনকুবেরের হাতে যে সম্পত্তি গচ্ছিত রয়েছে, তা ২০১৮-’১৯ অর্থবর্ষে ২৪,৪২,২০০ কোটি টাকার কেন্দ্রীয় বাজেটের থেকেও বেশি। ভারতের জনসংখ্যার ৭০ শতাংশের সম্পত্তির অন্তত চার গুণ বেশি সম্পদের অধিকারী এই ১ শতাংশ বিত্তবানেরা। তবে দেশের পাশাপাশি গোটা বিশ্বেই এই আর্থিক বৈষম্য রয়েছে এবং তা অনেকটাই প্রকট। বিশ্বের ৪৬০ কোটি তথা ৬০ শতাংশ মানুষের কাছে যা সম্পত্তি রয়েছে, তার থেকেও বেশ সম্পদ গচ্ছিত আছে ২,১৫৩ জন ধনকুবেরের হাতে। শুধু তাই নয়। অর্থনৈতিক বৈষম্যের ছবিটা ঠিক কতখানি নিদারুণ, তার আরও উদাহরণ মিলেছে এই রিপোর্টে। জানা গিয়েছে যে, পরিচারিকার কাজ করা কোনও মহিলা ২২,২৭৭ বছরে যা আয় করবেন, তা মাত্র ১ বছরেই উপার্জন করতে সক্ষম হবেন কোনও টেকনোলজি সংস্থার এক সিইও। আবার মাত্র ১০ মিনিটে ওই সিইও যা আয় করেন, সেই অর্থ নিজের ঘরে আনতে ওই পরিচারিকার লেগে যাবে গোটা একটা বছর।
ভয়ংকর এক সত্য এটাও যে, অধিকাংশ ক্ষেত্রেই মহিলাদের গার্হস্থ্য কাজকর্মের বদলে কোনও আয় হয় না। পরিসংখ্যান অনুযায়ী, পৃথিবীজুড়ে মহিলারা ৩২৬ কোটি ঘণ্টার দৈনিক এমন কাজ করছেন, যার বিনিময়ে তাঁদের কোনও আয় হচ্ছে না। অক্সফ্যাম ইন্ডিয়ার সিইও অমিতাভ বেহরের মতে, শুধু ভারত নয়। বিশ্বজুড়ে ধনী-দরিদ্রের এই ফারাক আরও বেশি করে দৃশ্যমান হয়ে উঠেছে গত এক দশকে। এই সময়ই ধনকুবেরদের সংখ্যাও গিয়েছে বেড়ে। কিন্তু এই ফারাক ঘোচাতে প্রয়োজন সঠিক সরকারী নীতির। বেহরের কথায়, ‘‘বৈষম্য দূরীকরণে এমন নীতি থাকা প্রয়োজন, যাতে ধনী-দরিদ্রের ব্যবধান কমানো সম্ভব হয়। কিন্তু খুব কম সরকারই সে লক্ষ্যে কাজ করছে।’’
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.