সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: উত্তর সেন্টিনেল দ্বীপে মৃত মার্কিন পর্যটকের দেহের সন্ধানে চলা তল্লাশি অভিযান বন্ধ করার আরজি জানালেন মানবাধিকার কর্মী ও প্রাণী বিশেষজ্ঞরা৷ তাঁদের আশঙ্কা, লাগাতার চলতে থাকা তল্লাশি অভিযানে সেন্টিনেল দ্বীপের আদিবাসীদের মধ্যে মারাত্মক প্রভাব পড়তে পারে৷ অবলুপ্ত হতে পারে গোটা প্রজাতি৷ ফলে, সেন্টিনেল দ্বীপের বাসিন্দাদের মনোভাবকে সম্মান জানিয়ে অবিলম্বে মৃত পর্যটকের দেহের সন্ধানে তল্লাশি অভিযান বন্ধ হওয়া উচিত৷
প্রায় এক সপ্তাহ কেটে গেলেও মার্কিন পর্যটকের দেহের খোঁজ এখনও পায়নি প্রশাসন৷ পালটা হামলার আশঙ্কায় সেন্টিনেল দ্বীপে হেলিকপ্টার নামানোই যাচ্ছে না৷ গোটা উপকূল ঘিরে রেখেছেন আদিবাসীরা৷ ফলে, উদ্ধারকাজে সমস্যা হচ্ছে৷ প্রাণী বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা, লাগাতার তল্লাশি অভিযান চালানো হলে আধুনিক সভ্যতায় বেড়ে ওঠা মানব শরীরের জীবাণু গোটা দ্বীপে সংক্রমণ ছড়াতে পারে৷ মানব শরীরের জীবাণু থেকেই ভয়ানক কোনও বিপদ ঘটে যেতে পারে আদিবাসী সমাজে৷ ফলে, আদিম সভ্যতা বাঁচাতে তল্লাশি অভিযান বন্ধ করা উচিত বলেই মতামত প্রকাশ করেছেন বিশেষজ্ঞরা৷ এই মত প্রকাশ করেছেন মানবাধিকার কর্মীরা৷ সেন্টিনেল দ্বীপের বাসিন্দাদের মনোভাবকে সম্মান জানানো উচিত বলেও মত প্রকাশ করা হয়েছে৷
[কাশ্মীরে নিকেশ সাংবাদিক সুজাত বুখারির হত্যাকারী জঙ্গি]
উত্তর সেন্টিনেল দ্বীপে যাওয়া দেশের আইনে অপরাধ। আন্দামানের যে জনজাতিগুলি রয়েছে, তার মধ্যে আদিম যুগে পড়ে রয়েছে জারোয়া ও সেন্টিনেলিজরা। এরা দু’দলই হিংস্র। জারোয়াদের সঙ্গে অবশ্য ইদানীং সভ্য জগতের একটা সম্পর্ক গড়ে উঠেছে। সেনা প্রহরায় হলেও জারোয়াদের দ্বীপে এখন সভ্য মানুষের প্রবেশাধিকার রয়েছে। জারোয়াদের সঙ্গে আন্দামানে গবেষণারত নৃতাত্ত্বিকদেরও যোগাযোগ গড়ে উঠেছে। সেন্টিনেলিজরা এখনও ৬০ হাজার বছর আগের সময়েই পড়ে রয়েছে৷ এখনও এরা আগুন জ্বালাতে পারে না। উত্তর সেন্টিনেল দ্বীপে ফলমূল ও পশু-পাখির কাঁচা মাংস খেয়ে এরা দিনযাপন করে৷
[“মমতায় আপত্তি নেই, কংগ্রেসকে বনবাস দিন”, স্ট্র্যাটেজি বদল মোদির]
ভারত সরকারের বরাবরই নীতি-আন্দামানের এই দুই জনজাতি, যারা সভ্যতার আলোয় আসতে নারাজ, তাঁদের আপন মনে থাকতে দেওয়া হোক। যদি তারা নিজেদের মতো ফলমূল, কাঁচা মাছ-মাংস খেয়ে সভ্য মানুষের থেকে দূরত্ব বজায় রেখে বাঁচতে চায়, তাহলে সেভাবেই তারা বেঁচে থাকুক। কিন্তু সত্যি কি সেটা সম্ভব হচ্ছে? সেন্টিনেলিজদের সংখ্যা এখন ৪০-৫০ পর্যন্ত নেমে এসেছে বলে জানা যাচ্ছে। যে কোনও একটা রোগের ঝাপটাতেই এই সংখ্যা শূন্যে চলে যেতে পারে। ভারত সরকার এইসব দ্বীপে যাওয়া এখনও নিষিদ্ধ রেখেছে৷ ফলে, কেন বেআইনি ভাবে প্রবেশ করা মার্কিন পর্যটকের দেহ খুঁজতে এত তৎপরতা? প্রশ্ন তুলছেন পরিবেশ কর্মীরাই৷
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.