সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ‘নাম বা ধরন যাই হোক না কেন, কাজি, দারুল বা শরিয়ত আদালতকে মান্যতা দেয় না সংবিধান।’ এক মামলার শুনানিতে স্পষ্ট ভাষায় একথা জানিয়ে দিল সুপ্রিম কোর্ট। শুধু তাই নয় আদালত আরও জানিয়েছে, এই ধরনের খাপ আদালতের সিদ্ধান্ত আইনিভাবে কখনই লাগু হতে পারে না।
ভরণপোষণ সংক্রান্ত মামলায় এলাহাবাদ হাই কোর্টের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন এক মহিলা। যেখানে হাই কোর্ট এই ধরনের খাপ আদালতের নির্দেশকে মান্যতা দিয়ে মহিলাকে ভরণপোষণ না দেওয়ার সিদ্ধান্তে সম্মতি দিয়েছিল। সোমবার শীর্ষ আদালতে এই মামলা উঠলে বিচারপতি সুধাংশু ধুলিয়া ও বিচারপতি আহসানুদ্দিন আমানুতুল্লার বেঞ্চ ২০১৪ সালে বিশ্বলোচন মদন বনাম ভারত সংঘের মামলার উদাহরণ তুলে ধরেন, এবং জানান, এই ধরনের শরিয়া আদালত ও ফতোয়ার কোনও আইনি অনুমোদন নেই। আবেদনকারী মহিলার পক্ষে রায় দিয়ে আদালত জানিয়েছে, মামলাকারীর আবেদনের দিন থেকে ভরণপোষণ বাবদ প্রতি মাসে ৪ হাজার টাকা করে দিতে বলে তাঁর প্রাক্তন স্বামীকে।
বিচারপতি আমানুতুল্লা বলেন, “কাজির আদালত, দারুল আদালত বা শরিয়া আদালত নাম যাই হোক না কেন, সাংবিধানিক ভাবে এদের কোনও আইনি মর্যাদা দেওয়া হয়নি। এদের নির্দেশ কোনওভাবেই বাধ্যতামূলক নয়, এবং বল প্রয়োগের মাধ্যমে তা প্রয়োগ করাও সম্ভব নয়। এই সিদ্ধান্ত তখনই প্রাসঙ্গিক হতে পারে যখন অপর পক্ষ স্বেচ্ছায় এদের নির্দেশ মেনে নেয়। এবং যদি তা সংবিধানের আইনকে লঙ্ঘন না করে।”
উল্লেখ্য, এই মামলার সূত্রপাত ২০০২ সালে। ওই বছরের ২৪শে সেপ্টেম্বর মামলাকারী মহিলা ইসলামি রীতিনীতি মেনে দ্বিতীয় বিবাহ করেন। ২০০৮ সালে এই স্বামীর সঙ্গে বিবাহবিচ্ছেদের আবেদন জানান দারুল কাজা আদালতে। ওই বছরই মহিলা ভরণপোষণের জন্য পারিবারিক আদালতের দ্বারস্থ হন। ২০০৯ সালে বিবাহবিচ্ছেদ মঞ্জুর হলেও ভরণপোষণের দাবি খারিজ হয়। শরিয়া আদালত জানায়, যেহেতু ওই স্বামী তাঁকে পরিত্যাগ করেননি তিনি নিজে বাড়ি ছেড়ে চলে গিয়েছেন ফলে তিনি ভরণপোষণ দিতে বাধ্য নন। এই সব আদালতের তীব্র সমালোচনা করে তার রায় বাতিল করল শীর্ষ আদালত।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.