সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বিজেপি-শিব সেনা সম্পর্ক নিয়ে রাজনৈতিক মহলে দেদার রসিকতা চালু। কেউ কেউ বলে থাকেন, এ আসলে ননদ-জা সম্পর্ক। এই ভাল তো, এই খারাপ। কিন্তু সাম্প্রতিক অতীতে তা ক্রমশ খারাপের দিকেই যাচ্ছিল। নানা ইস্যুতে বিজেপির কড়া সমালোচনা করছিলেন শিব সেনা নেতারা। এবার বিজেপির সঙ্গ ছাড়ার কথা স্পষ্ট করে দিলেন উদ্ধব তনয় আদিত্য ঠাকরে। জানিয়ে দিলেন, একক দল হিসেবে আগামী নির্বাচনে মহারাষ্ট্রে সরকারের আসারও স্বপ্ন দেখছেন তিনি।
[ বিয়ের আগে প্রেম! স্কুলের চাকরি খুইয়ে বিপাকে এই শিক্ষক দম্পতি ]
সম্পর্ক দীর্ঘদিনের। দেশ, জাতীয়তাবাদ, হিন্দুত্ব নানা ইস্যুতে মতের যথেষ্ট মিল। কিন্তু মোদি-শাহর হাত ধরে যে নয়া বিজেপির উত্থান হয়েছে, তার সঙ্গে মানিয়ে নিতে পারেননি শিব সেনার নেতারা। ফলে সংঘাত অনিবার্য হয়ে পড়েছে। যে নোট বাতিল ও জিএসটিকে শাসকদলের নেতারা সামনে এনেছেন নির্বাচনী বৈতরণী পার হতে সেই ইস্যুতেই বিজেপিকে সমালোচনায় বিঁধেছে শিব সেনা। এক্ষেত্রে বরং তাদের অনেকটা মিল আছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের রাজনীতির সঙ্গে। প্রসঙ্গত দিনকয়েক আগে মমতার সঙ্গে দেখাও করেন উদ্ধব ঠাকরে। সেখানে উপস্থিত ছিলেন উদ্ধব পুত্র আদিত্যও। তারপরই আদিত্যর এ ঘোষণা বেশ ইঙ্গিতপূর্ণ।
[ জিএসটি এসে কী লাভ হল গ্রাহকদের? কেন্দ্রের ঘরে হাজারো অভিযোগ ]
থানে জিলা পরিষদ দখল করেছে শিব সেনা। তারপরই এই তরুণ তুর্কির ঘোষণা, বিজেপির সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করবে শিব সেনা। বরং একক দল হিসেবে তাঁরা লড়াই করবেন। এবং তাঁর আশা, সরকারও গড়তে পারবেন। কিন্তু রাজনৈতিক অঙ্ক এত সহজ নয়। আবেগ আর বাস্তবের মধ্যে বিস্তর সমীকরণ খেলা করে। তাহলে কোন যুক্তিতে আদিত্য এই কথা বলছেন? রাজনৈতিক মহলের ধারণা, বিনা যুক্তিতে আদিত্য এ হুঁশিয়ারি দেননি। বরং নেপথ্যে বেশ অঙ্ক কষেই তিনি এ কথা বলছেন। নোট বাতিল থেকে জিএসটি ইস্যুতে জেরবার হয়েছে বিজেপি। ক্রমাগত আক্রমণে কোণঠাসা হয়েছে শাসকদল। যদি গুজরাট ভোটের ফল তাদের পক্ষেও যায়, তবু রাহুল গান্ধী শাসকদলকে যে চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলেছেন তা অভূতপূর্ব। আগামী নির্বাচনে রাহুল যে আরও ক্ষুরধার হয়ে উঠবেন তা বোঝাই যায়। এদিকে কংগ্রেসে শুরু হয়েছে নতুন যুগ। কংগ্রেসকে জাগিয়ে ক্ষমতায় ফেরানোই রাহুলের সামনে নয়া চ্যালেঞ্জ। পাশাপাশি আঞ্চলিক দলগুলিও বৃহত্তর স্বার্থে রাজনৈতিক বিরোধিতার ক্ষেত্রে একজোট হতে চাইছে। এ বিষয়ে অনেকটাই এগিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তৃতীয় ফ্রন্ট গঠন করা তাঁর দীর্ঘদিনের স্বপ্ন। নোট বাতিলের সময় এ ব্যাপারে তিনি এগিয়েওছিলেন। এবং পাশে পেয়েছিলেন শিব সেনাকে। বিজেপির জোটসঙ্গী হয়েও দেশের কথা মাথায় রেখে সমালোচনায় সোচ্চার হয়েছিল বাল ঠাকরের উত্তরসূরীরা।
[ বিহারের মন্দিরে হামলা চালাতে পারে লস্কর, সতর্ক করল ইন্টেলিজেন্স ব্যুরো ]
এদিকে মোদিকে সামনে রেখেই ক্ষমতায় এসেছিল বিজেপি। তুমুল জনপ্রিয়তা ছিল তাঁর। কিন্তু হালআমলে সে হাওয়া খানিকটা কমেছে। ফলে অদূর ভবিষ্যতে ক্ষমতাবদলের ইঙ্গিত বেশ ভালই পাচ্ছেন বিরোধীরা। ফলে বিজেপি বিরোধিতার হাওয়ায়, মহারাষ্ট্রে ক্ষমতায় ফেরা সুবিধে হবে বলেই মনে করেন এই তরুণ নেতা। তার উপর ভিত্তি করেই আদিত্যর এ হুঁশিয়ারি বলে মত রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের একাংশের।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.