সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: পহেলগাঁওয়ের পালটা ভারতের পাঁচ ঘা! যার মধ্যে অন্যতম আটারি-ওয়াঘা সীমান্ত বন্ধ করার সিদ্ধান্ত। তাতেই কার্যত কাহিল ইসলামাবাদ। ভাতে মারা পড়ার জোরালো সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। কারণ একমাত্র আটারি-ওয়াঘা স্থলবন্দর দিয়ে দু’দেশের মধ্যে বাণিজ্য চলত। সীমান্ত বন্ধ করার অর্থ বাণিজ্যেও তালা ঝোলানো। যার সবচেয়ে বেশি প্রভাব পড়তে চলেছে পাকিস্তানের ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পে।
পাঞ্জাবে রয়েছে ভারতের প্রথম স্থলবন্দর আটারি। অমৃতসর থেকে মাত্র ২৮ কিলোমিটার দূরে। ১২০ একর এলাকাজুড়ে বিস্তৃত। এক নম্বর জাতীয় সড়কের সঙ্গে যুক্ত। আর একমাত্র এই স্থলবন্দর দিয়েই ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে চলে বাণিজ্য। এই পথে ভারত থেকে পাকিস্তানে পাঠানো হয় সয়াবিন, মুরগির দানা, সবজি, শুকনো লঙ্কা, প্লাস্টিকের দানা এবং সুতো। আর ওয়াঘা-আটারি হয়েই আফগানিস্তান থেকে ভারতে ঢোকে খেঁজুর, শুকনো ফল, সিমেন্ট, জিপসাম, কাঁচ, লবন এবং নানা ওষধি। সীমান্ত বন্ধ হওয়ায় স্বাভাবিকভাবেই বাণিজ্যও বন্ধ হতে চলেছে। ফলে ক্ষুদ্র ও ছোট ব্যবসায়ীদের পেটে যে লাথি পড়বে তা বলার অপেক্ষা রাখে না। সবচেয়ে বেশি ভুগতে হবে সীমান্তবর্তী এলাকায় থাকা ব্যবসায়ীদের। ওয়াকিবহাল মহল বলছে, পাকিস্তানের সীমান্ত চত্বরের বহু ব্যবসায়ী ভারতের রপ্তানির উপর নির্ভরশীল ছিলেন। তাঁদের রুজি রোজগার কার্যত বন্ধ হওয়ার মুখে।
এ প্রসঙ্গে বলে রাখা দরকার, ২০১৮ সাল থেকেই দু’দেশের মধ্যে বাণিজ্য নিম্নমুখী। ২০২৩-২০২৪ সালের হিসেব বলছে, আটারি-ওয়াঘা বন্দর দিয়ে ৩ হাজার ৮৮৬ কোটি ৫৩ লক্ষ টাকার বাণিজ্য হয়েছে। ৬ হাজার ৮৭১টি পণ্যবাহী ট্রাক সীমান্ত পারাপার করেছে। ৭১ হাজার ৫৬৩ জন দু’দেশে যাতায়াত করেছেন। কিন্তু সীমান্ত বন্ধের ফলে এই সবই শূন্যে নেমে আসবে। যার ফল ভুগবেন পাকিস্তানি ছোট ব্য়বসায়ী থেকে উৎপাদকরাও। আবার আফগানিস্তান থেকে পণ্য আমদানির ক্ষেত্রে নয়াদিল্লিকেও লজিস্টিক চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হতে পারে বলে মনে করছেন কেউ কেউ।
কাশ্মীরে জঙ্গি হামলায় প্রাণ গিয়েছে ২৬ নিরীহ পর্যটকের। প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিং সাফ জানিয়ে ছিলেন, হামলার নেপথ্যে থাকা মাস্টার মাইন্ডদেরও উচিত শিক্ষা দেওয়া হবে। ‘টার্গেট কিলিং’ -এর নেপথ্যে যে পাকিস্তান ছিল তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। যদিও অভিযোগ অস্বীকার করছে তারা। সে কথাই অবশ্য কান দিতে নারাজ ভারত। তাই পহেলগাঁওয়ে জঙ্গিহানার প্রত্যুত্তরে পড়শি দেশকে কার্যত ভাতে মারার পরিকল্পনা নিয়েছে নয়াদিল্লি। সিন্ধু চুক্তি আপাতত বাতিল করে একদিকে পাকিস্তানের কৃষিকাজ, বিদ্যুৎ উৎপাদনে যেমন ধাক্কা দিয়েছে নয়াদিল্লি। তেমনই সীমান্ত বন্ধ করে ব্যবসা, বাণিজ্যেও বড় ধাক্কা দিল মোদি সরকার।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.