সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: অবশেষে জামিন পেলেন হাথরাস ষড়যন্ত্র মামলার অন্যতম অভিযুক্ত সাংবাদিক সিদ্দিক কাপ্পান (Siddique Kappan)। এর আগে মথুরা আদালত ও এলাহাবাদ হাই কোর্ট তাঁর জামিনের আবেদন খারিজ করে দিয়েছিল। কিন্তু শুক্রবার কাপ্পানকে জামিন দিল শীর্ষ আদালত (Supreme Court)। তবে শর্তসাপেক্ষে। ২০২০ সালের অক্টোবরে তাঁকে গ্রেপ্তার করেছিল উত্তরপ্রদেশ (Uttar Pradesh) পুলিশ।
সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছে, কাপ্পানকে তিনদিনের মধ্যে ট্রায়াল কোর্টে নিয়ে যেতে হবে। এবং সেখান থেকে তাঁকে জামিনে মুক্ত করতে হবে। কিন্তু সেই সঙ্গে বেশ কিছু শর্তও দিয়েছে শীর্ষ আদালত। কী কী শর্ত দেওয়া হয়েছে? সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছে, দিল্লির জংপুরা এলাকার মধ্যেই থাকতে হবে তাঁকে। আদালতের অনুমতি ছাড়া তিনি ওই অঞ্চলের বাইরে যেতে পারবেন না। প্রতি সোমবার স্থানীয় থানায় হাজিরা দিতে হবে তাঁকে। প্রথম ছয় সপ্তাহ এই নিয়ম মেনে চলতে হবে কাপ্পানকে। ৬ সপ্তাহ পরে তিনি কেরলে যেতে পারবেন। কিন্তু সেখানেও প্রতি সোমবার তাঁকে স্থানীয় থানায় হাজিরা দিতে হবে। সেই সঙ্গে শীর্ষ আদালত কাপ্পানকে জানিয়েছে, তিনি যেন এই ছাড়ের অপব্যবহার না করেন।
ঠিক কী অভিযোগ ওই সাংবাদিকের বিরুদ্ধে? গত বছর ৫ অক্টোবর হাথরসের (Hathras Case) নির্যাতিতার সঙ্গে দেখা করতে যাওয়ার পথে চার সঙ্গী-সহ কাপ্পানকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পিএফআই নামক নিষিদ্ধ সংগঠনের সদস্য সন্দেহে মুজফফরনগরের আতিউর রহমান, বাহরাইচের মাসুদ আহমেদ, রামপুরের আলম নামের তিনজনও গ্রেপ্তার হন। পুলিশের দাবি, বাড়ির ঠিকানা-সহ নানা বিষয়ে কাপ্পান মিথ্যা তথ্য দিয়েছিলেন।
উত্তরপ্রদেশ সরকারের দাবি, পিএফআই (PFI) এবং তাদের ছাত্র শাখার অন্য কর্মীদের সঙ্গে হাথরাস যাচ্ছিলেন কাপ্পান। তাঁদের কাছে আপত্তিকর সামগ্রী ছিল। ওই এলাকার শান্তিভঙ্গ করাই আসল উদ্দেশ্য ছিল কেরলের ওই সাংবাদিকের। কাপ্পানের বিরুদ্ধে বিতর্কিত UAPA ধারায় মামলা করে যোগী সরকার। যার ফলে দীর্ঘদিন জামিন পাননি কেরলের ওই সাংবাদিক।
মালয়ালম নিউজ পোর্টাল ‘আঝিমুখমে’ কাজ করার পাশাপাশি ‘ইউনিয়ন অফ ওয়ার্কিং জার্নালিস্টস’ তথা KUWJ-র দিল্লি শাখার সম্পাদকের দায়িত্বও ছিল সিদ্দিকের কাঁধে। পুলিশের দাবি ১৯ বছরের দলিত তরুণীর গণধর্ষণ ও হত্যার ঘটনায় ওই সময় হাথরাসে চরম উত্তেজনা ছিল। সেই সময় সেখানকার আইনশৃঙ্খলা ভঙ্গ করার চেষ্টা করছিলেন সিদ্দিক। আর তাই তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।
২০২০ সালের সেপ্টেম্বরে চার অভিযুক্ত ওই তরুণীকে ধর্ষণ করে। পরে তাঁর মৃত্যু হয় দিল্লির হাসপাতালে। এরপরই তাঁর দেহ মধ্যরাতে গ্রামে ফিরিয়ে এনে পুলিশের তত্ত্বাবধানে গোপনে দাহ করে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে। তাঁর আত্মীয়রা দাবি করেন, তাঁদের না জানিয়েই শেষকৃত্য সম্পন্ন করা হয়েছে। এই ঘটনায় গর্জে ওঠে গোটা দেশ। উত্তরপ্রদেশের নারী নিরাপত্তা নিয়ে সরব হন বহু মানুষ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.