সুব্রত বিশ্বাস: ভোর সাড়ে পাঁচটা। উত্তরপ্রদেশের কৌশম্বী জেলার কোখরাজ নাগ এলাকার বিদনপুর রেল স্টেশনে তখন গুটিকয়েক যাত্রী। হঠাৎই তাঁরা লক্ষ্য করেন, এলাহাবাদগামী একটি মালগাড়ি ইঞ্জিনের কাপলিংয়ে জড়িয়ে রয়েছে এক তরুণীর দেহ। মালগাড়ি ছুটছে। তরুণীর দেহ লাইনের উপরে আছাড় খাচ্ছে। রক্তে ভেজা শরীর। বারবার আঘাতে তরুণীর দেহ বিভৎসভাবে ঘুরছে। এই ভয়াবহ দৃশ্য দেখে যাত্রীরা চিৎকার চেঁচামেচি করে মালগাড়িটিকে দাঁড় করান। তারপর রেলকর্মীরা ইঞ্জিনের সামনের কাপলিংয়ে জড়িয়ে থাকা দেহটি নামিয়ে আনেন। দেখেন বহু আগেই তরুণীর মৃত্যু হয়েছে। তাঁর দেহ কোনওভাবে জড়িয়ে গিয়েছে কাপলিংয়ের সঙ্গে।
[ ইয়েদুরাপ্পা মসনদে বসলেও কর্ণাটকের ভবিষ্যৎ রাজ্যপালের হাতেই ]
উত্তর-মধ্য রেলের এলাহাবাদ ডিভিশনের ভরওয়ারি স্টেশনের সহকারি স্টেশন মাস্টার সোম চন্দ্র জানান, ভোর প্রায় সাড়ে পাঁচটা নাগাদ আপলাইন দিয়ে এলাহাবাদের দিকে যাচ্ছিল মালগাড়িটি। ডাউন লাইনের প্যাসেঞ্জার ট্রেনের চালক জানান, মালগাড়ির ইঞ্জিনের সামনের কাপলিংয়ে এক তরুণীর দেহ ফেঁসে যায়। এরপরেই পরবর্তী বিদনপুর স্টেশনে খবর দেওয়া হয়। ততক্ষণে মালগাড়িটি দাঁড় করিয়ে দেয় স্টেশনের যাত্রীরা।
ঘটনায় মামলা দায়ের করে তদন্ত শুরু করেছে রেলপুলিশ। অনুমান, তরুণীর লাইনের উপর চলে এসে ইঞ্জিনের সামনে পড়ে যায়। যদি তাকে মেরে ঝুলিয়ে দেওয়া হত, তাহলে চালকের নজর এড়াত না। তাই এমন সন্দেহ উড়িয়ে দিয়েছে পুলিশ।
[ আইনের বাইরে যেতে পারেন না রাজ্যপাল, তোপ চিদম্বরমের ]
তবে এ ধরনের ঘটনা এই প্রথম নয়। বেশ কয়েক বছর আগে হাওড়াগামী একটি দূরপাল্লা ট্রেনের চালক হেডলাইটের আলোয় লক্ষ্য করেন ট্রেনের সামনে কে যেন দৌড়চ্ছে। ট্রেনের সামনে এত জোরে দৌড়চ্ছে যে আতঙ্কে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। তখনই ব্রেক কষেন। লিলুয়ায় ট্রেন থেকে নেমে তিনি দেখেন, কাপলিংয়ে ফেঁসে রয়েছেন এক ব্যক্তি। তারই মাথা দেখা যাচ্ছিল উইন্ডস্ক্রিন দিয়ে।
কাপলিংয়ে মোটা লোহার তৈরি বড়শির আদলে হয়। ইঞ্জিনকে অন্য বগির সঙ্গে জুড়তে সাহায্য করে এটি। ফলে তাতে দেহ বা পোশাক আটকে দুর্ঘটনা ঘটা কিছু অসম্ভব নয়। কিন্তু এমন দুর্ঘটনায় স্বভাবতই আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন বিদনপুর রেল স্টেশনের যাত্রীরা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.