সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: প্রায় দু’বছর বাদে ফের রাজস্থানে রশিদপুরা খোরি স্টেশনে ট্রেন চলাচল শুরু হয়েছে। কিন্তু, সেটা বড় কথা নয়। শিকার জেলার এই প্রান্তিক স্টেশনটি খবরের শিরোনামে উঠে এসেছে অন্য কারণে। রেলের কর্মীরা নন, গোটা দেশের একমাত্র এই স্টেশনটি পরিচালনা করেন স্থানীয় গ্রামবাসীরাই।
[গরু পাচার ও গো-হত্যার শাস্তি মৃত্যু, বেপরোয়া মন্তব্য বিজেপি বিধায়কের]
ভারতের রেলপথের দৈর্ঘ্য ১ লক্ষ ২০ হাজার কিমি। দীর্ঘ এই রেলপথে অখ্যাত বা প্রান্তিক স্টেশনের সংখ্যা নেহাত কম নয়। এমন অনেক স্টেশন আছে, যেখানে যাত্রী সংখ্যা হাতেগোনা। ফলে বেশি ট্রেনও চলে না। এই সমস্ত স্টেশনে টিকিট বিক্রির জন্য আলাদা করে কর্মী নিয়োগ করে না রেল। চুক্তির ভিত্তিতে স্থানীয় কোনও ব্যক্তিকে টিকিট বিক্রির দায়িত্ব দেওয়া হয়। কিন্তু, আস্ত একটি স্টেশনে পরিচালনা করছেন গ্রামবাসীরা! এমন ঘটনার কথা মনে করতে পারছেন না রেলকর্তারাই। রেলের উত্তর-পশ্চিম জোনের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক তরুণ জৈন বলেন, ‘আমি এমন কোনও স্টেশনের কথা জানি না।’ তবে রশিদপুরা খোরি স্টেশনের অভিনবত্বের কথা স্বীকার করলেও, এবিষয়ে অবশ্য মুখ খুলতে চাননি দিল্লিতে রেলের সদর দপ্তরের আধিকারিকরা।
[মদ-মাংসের ‘টোপে’ ভোট দেয় গরিব মানুষ, বিতর্কিত মন্তব্য মন্ত্রীর]
স্টেশনটি পরিচালনার দায়িত্ব পুরোপুরি স্থানীয় বাসিন্দারের হাতে কেন ছেড়ে দিল রেল? রাজধানী জয়পুর থেকে ১২৫ কিমি দূরে ছোট্ট রেলস্টেশন রশিদপুরা খোরি। আশেপাশের তিনটি গ্রামের মানুষ এই স্টেশনের উপর নির্ভরশীল। কিন্তু, সেভাবে লাভজনক না হওয়ায় বেশ কয়েকবার এই স্টেশন দিয়ে ট্রেন চলাচল বন্ধ করে দিয়েছিল রেল। রেল সূত্রে খবর, ব্রিটিশ আমলে, ১৯২৯ সালে রশিদপুরা খোরি স্টেশনে প্রথমবার ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। পরবর্তীকালে ২০০৫ সালেও লোকসানের কারণে এই স্টেশনে ফের ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। শিকারপুর জেলার রেল সালাহকার সমিতির সদস্য জগদীশ বুরদক জানিয়েছে, শেষবার পরিষেবা বন্ধ হওয়ার আগে পর্যন্ত রশিদপুরা খোরি স্টেশনে পাঁচটি ট্রেন দাঁড়াত। তাই এই ট্রেন চলাচল বন্ধ হওয়ায় বিপাকে পড়ে আশেপাশের তিন গ্রামের মানুষ। রেলের কাছে লাগাতার রশিদপুরা খোরি স্টেশন দিয়ে চালু করার দাবি জানাতে থাকেন তাঁরা। শেষপর্যন্ত রাজিও হন রেলকর্তারা। তবে শর্ত দেওয়া হয়, এই স্টেশন থেকে পর্যাপ্ত পরিমাণ আয়ের ব্যবস্থা করে দিতে হবে গ্রামবাসীদেরই। তাঁদের নিশ্চিত করতে হবে, এই স্টেশন দিয়ে ট্রেন চালিয়ে মাসে যেন রেলের কমপক্ষে ৪০ হাজার টাকা আয় হয়।
[নোটার থেকেও কম ভোট, উপনির্বাচনের ফল নিয়ে বিজেপিকে কটাক্ষ স্বামীর]
স্থানীয় একটি স্কুলের প্রধানশিক্ষক প্রতাপ সিং বুরদক বলেন, ‘আমরা রেলকে জানাই, কোনও কর্মী নিয়োগ করার দরকার নেই। গ্রামের ২৫ হাজার বাসিন্দাই স্টেশনটি পরিচালনা করবেন এবং লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করে দেবে। সেই আশ্বাসে ২০০৯ সালে জানুয়ারিতে মাত্র তিন মাসের জন্য সাময়িকভাবে একটি ট্রেনকে এই স্টেশনে দাঁড় করাতে রাজি হয় রেল।’ এরপরই রীতিমতো কমিটি গড়ে ট্রেনে সময়সূচি প্রচারের কাজে নেমে পড়েন গ্রামবাসীরাই। সকলেই ট্রেনটি ব্যবহার করার জন্য অনুরোধ করা হয়। সাড়াও মেলে। গ্রামবাসীদের দাবি, প্রথম দিকে অনেকে একাধিক টিকিটও কাটতেন। এভাবে ধীরে ধীরে স্টেশন পুরোপুরি চালু হয়ে যায়। রশিদপুরা খোরি স্টেশনে আরও চারটি ট্রেনের স্টপেজ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় রেল। এখন তো এই প্রান্তিক স্টেশনে ব্রজগেজ লাইনও বসেছে। এই কাজের জন্য দু বছর ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকার পর, ডিসেম্বরেই ফের চালু হয়েছে রশিদপুরা খোড়া স্টেশন। এখনও স্টেশনটির পরিচালনা করেন গ্রামবাসীরাই।
[২১ দিনে ডেঙ্গু চিকিৎসার বিল ১৬ লক্ষ টাকা, তবুও বাঁচল না আক্রান্ত বালক]
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.