ছবি: সংগৃহীত।
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: শুক্রবার সন্দেশখালিতে তৃণমূল (TMC) নেতা শাহজাহান শেখের বাড়ি অভিযানে গিয়ে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের (ED) কর্মী-অফিসাররা স্থানীয় বাসিন্দাদের বিক্ষোভের মুখে পড়েন। বচসার জেরে স্থানীয়দের হাতে কয়েকজন আক্রান্তও হন। তারপরেই রাজ্যে আইন-শৃঙ্খলা ভেঙে পড়েছে বলে অভিযোগ তুলে আসরে নেমে পড়েন বিরোধী দলগুলির নেতারা। এমনকী, কেন্দ্রের কাছে রাষ্ট্রপতি শাসনের দাবিও জানিয়েছেন কেউ কেউ। বিজেপি (BJP) দাবি করে, এই আক্রমণ নাকি নজিরবিহীন ঘটনা। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ইস্তফা দাবি করেন বিজেপি মুখপাত্র গৌরব ভাটিয়া।
কিন্তু বিজেপি বা অন্য দলগুলি যতই দাবি করুক না কেন, কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার অভিযানে গিয়ে আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা আগেও একাধিকবার ঘটেছে। ইউপিএ আমলে তো বটেই, নরেন্দ্র মোদি সরকারের বিগত ১০ বছরে একঝাঁক এমন উদাহরণ আছে। কখনও বিজেপি শাসিত উত্তরপ্রদেশে, কখনও বিজেডি-র ওড়িশায়, কখনও বামশাসিত কেরলে মার খেয়েছেন, এমনকী, বন্দিও হয়েছেন ইডি-সিবিআই কর্মী-আধিকারিকরা। কিন্তু একাধিকবার হামলার ঘটনা ঘটলেও কেন্দ্রীয় সরকার কোনও পদক্ষেপ করেনি। এই সমস্ত ঘটনার উদাহরণ দিয়ে শনিবার তোপ দাগেন তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক ও মুখপাত্র কুণাল ঘোষ। তাঁর মত, “এজেন্সি বা তদন্তকারী দলের উপর হামলা কাম্য নয়। কিন্তু বাংলাকে একটা চক্রান্তের আবহে এনে পরিকল্পিত চিত্রনাট্য অনুযায়ী সবটা করার চেষ্টা করা হচ্ছে। আমরা তার প্রতিবাদ জানাচ্ছি। আর সিপিএমের তো নিজেদের অতীত মনে করে মুখ খোলাই উচিত নয়। বিজেপি-সিপিএমের নিজেদের অতীত ভুলে গেলে চলবে!”
সাম্প্রতিক ইতিহাস বলছে, ২০১৫ সালে তদন্তকারী সিবিআইকে আক্রমণ করেন কেন্দ্রীয় সরকারেরই আর একটি সংস্থা আয়কর দপ্তরের কর্মীরা। লখনউতে এই ঘটনা ঘটেছিল। আয়কর দপ্তরের কর্মীদের ঘুষ নেওয়ার অপরাধে গ্রেপ্তার করার কারণেই অভিযুক্তদের সহকর্মীরা চড়াও হয় সিবিআইয়ের উপর। ২০১৯ সালে দিল্লির কাছেই গ্রেটার নয়ডার সোনপুরায় সিবিআই অফিসারদের উপর হামলা করেছিল জমি মাফিয়ারা। তাঁদের মোবাইল ফোন ছিনতাই করে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। যোগী রাজ্যের যমুনা এক্সপ্রেসওয়েতে ১২৬ কোটি টাকার জমি দুর্নীতির অভিযোগে দু’জনকে গ্রেপ্তার করতে ওই অভিযান চালানো হয়েছিল। সিবিআই কর্মী-অফিসাররা গুরুতর আহত হয়েছিলেন। ২০২১ সালে ওড়িশার ঢেঙ্কানলে শিশু পর্নোগ্রাফি চক্রের সন্ধান পায় সিবিআই। স্থানীয় জনতা ও ওই চক্রের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিরা সিবিআই তদন্তকারীদের আটকে রাখে। ওই বছরেই কেরলের তিরুবনন্তপুরমে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট অফিসারদের উপর হামলা চালানো হয়েছিল।
২৬ ঘণ্টা ধরে তল্লাশি অভিযান চালানো হয়েছিল সিপিএম নেতা কে বালাকৃষ্ণনের বাড়িতে। তল্লাশি অভিযানের পর ইডি টিমকে আটকে রাখা হয়। যার নেতৃত্বে ছিলেন স্বয়ং রাজ্য পুলিশের এক ইন্সপেক্টর। যদিও এই ঘটনাগুলির ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে তেমন কোনও প্রতিক্রিয়া দেওয়া হয়নি। রাজ্যপালের কাছে রিপোর্টও চাওয়া হয়নি।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.