সুব্রত বিশ্বাস: দ্য বার্নিং ট্রেন!
ফিল্মের পর্দায় জ্বলন্ত ট্রেনকে থামিয়ে বিপর্যয় রুখেছিলেন বিনোদ খান্না, ধর্মেন্দ্ররা। আর বাস্তবে দাউদাউ জ্বলতে থাকা ছুটন্ত ট্রেনের বহু যাত্রীকে বাঁচিয়ে রিয়েল হিরো হয়ে দাঁড়ালেন চালক বিদু্ৎ মণ্ডল। তাঁরই উপস্থিত বুদ্ধির জোরে বিরাট অনর্থের হাত থেকে রেহাই পেল আপ উদ্যান আভা তুফান এক্সপ্রেস।
[ বেপরোয়া জিপের ধাক্কা মোটর বাইকে, শিশু-সহ প্রাণরক্ষা আরোহীদের ]
সোমবার বিকেলের ঘটনা। ট্রেন তখন ছুটছে ঝাড়খণ্ডের থাপারনগর পার করে। ৪.১০ মিনিট নাগাদ বিদ্যুবাবু দেখতে পান, ট্রেনে আগুন লেগেছে। ইঞ্জিন লাগোয়া এসএলআর কোচ থেকে রেরোচ্ছে লেলিহান শিখা। তিনি বুঝে যান, হাওয়ার তোড়ে ট্রেনটিতে ছড়িয়ে পড়তে পারে আগুন। তিনি এমার্জেন্সি ব্রেক কষে ট্রেনটি দাঁড় করিয়েই পরের বগির সঙ্গে যুক্ত এসএলআর-এর কাপল খুলে আলাদা করেন। এসএলআর-ডি মডেলের পণ্যবাহী কোচটির মাঝে একাংশ প্রতিবন্ধী যাত্রীদের জন্য সংরক্ষিত। সেই কামরার আতঙ্কিত যাত্রীদের তড়িঘড়ি নামিয়ে নেওয়া হয়। হুড়োহুড়িতে আঘাত পান অনেকেই। এর পরেই ওই আগুন লাগা এসএলআর বগিটিকে তড়িঘড়ি ইঞ্জিন লাগানো অবস্থায় সরিয়ে নিয়ে যান চালক। এর পর নিরাপদ জায়গায় নিয়ে গিয়ে ইঞ্জিনটি খুলে আলাদা করে দেন তিনি। খবর পেয়ে ধানবাদ ও নিরসা থেকে দমকলের ইঞ্জিন ঘটনাস্থলে আসে। আসেন পদাধিকারীরা। আগুন লাগার কারণ খতিয়ে দেখতে এক কমিটি গঠন করেছে রেল। তারাই আগুনের উৎস খুঁজে দেখছে। পরে উলটোদিক থেকে একটি ইঞ্জিন এসে যাত্রীবাহী কামরাগুলিকে পরের স্টেশন মুগমাতে নিয়ে যায়। এসএলআরটি তড়িঘড়ি জ্বলে ওঠার মূল কারণ, পাঁচ টনবাহী ওই কামরাতে ছিল সবই জ্বলনশীল পদার্থ। যার মধ্যে ছিল রেডিমেড গুডস, রবার গুডস, খালি জুয়েলারি বক্স ও বিড়ি। ফলে আগুন লাগতেই তা দাউদাউ করে জ্বলে ওঠে।
[ মুসলিমদের ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাতের অভিযোগ, পালটা সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ প্রিয়া ]
পূর্ব রেলের আসানসোল বিভাগ জানিয়েছে, কোনওরকম আহত বা নিহতের মতো ঘটনা ঘটেনি। তবে আগুন লাগার কারণ খতিয়ে দেখতে তদন্ত কমিটি গঠন হয়েছে। ট্রেনে আগুন লাগার ঘটনা আগেও ঘটেছে অনেকবার। অসংখ্য যাত্রী মারাও যান। তবে এদিন এসএলআর বগিতে আগুন লাগলেও সেই একই বগিতে প্রতিবন্ধীদের জন্য নির্ধারিত জায়গা ছিল। সেখানে যাত্রীও ছিল। তবে আশঙ্কাজনক কোনও ঘটনা ঘটেনি বলে স্বস্তি প্রকাশ রেলের। এদিন সকাল সাড়ে ন’টা নাগাদ উদ্যান আভা তুফান এক্সপ্রেস হাওড়া থেকে ছেড়ে শ্রীগঙ্গানগর যাচ্ছিল। পথের মাঝে এই ঘটনায় তীব্র আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। যাত্রীদের পাশাপাশি আতঙ্কিত পরিজনরাও। তাঁরাও উদ্বেগের সঙ্গে রেলের অনুসন্ধান দপ্তরগুলিতে ফোন করা শুরু করেন। এজন্য আলাদা কাউন্টারও খোলা হয়।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.