সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: একদিকে যখন বারবার গোমূত্রকে (Cow Urine) মহৌষধ বলে দাবি করেছেন উগ্র হিন্দুত্ববাদী এবং স্বঘোষিত আয়ুর্বেদ চিকিৎসকরা। অন্যদিকে তখন গোমূত্র পান করে অসুস্থ হয়ে পড়ার ঘটনাও সামনে এসেছে। এবার এই বিষয়েই বিশেষজ্ঞের মতামত প্রকাশ্যে এল। তবে ইন্ডিয়ান ভেটেরিনারি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (Indian Veterinary Research Institute) গবেষকার যা জানালেন, তাতে হতাশ হবেন স্বঘোষিত ‘গোরক্ষক’রা। তাঁরা জানালেন, গোমূত্র কখনই মানুষের পানযোগ্য নয়। গরুর সদ্য ত্যাগ করা প্রস্রাবে থাকে একাধিক ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া। যা মানুষের শরীরে ঢুকে বিপদ ঘটাতে পারে।
আইভিআরআই (IVRI) সূত্রে জানা গিয়েছে, গোমূত্র নিয়ে গবেষণা চালিয়েছে বারেলির ইন্ডিয়ান কাউন্সিল ফর এগ্রিকালচারাল রিসার্চ। নেতৃত্ব দেন আইভিআরআইয়ের পশু ও প্রাণী বিশেষজ্ঞ ভোজ রাজ সিং এবং তিন পিএইচডি পড়ুয়া। উল্লেখ্য, হিন্দুত্বের বাজারে গত জানুয়ারিতে গুজরাটের এক আদালতের বিচারকও বলেন, গোরক্ষা জরুরি। কারণ গোমূত্র পান করলে কঠিন অসুখ সেরে যায়। তিনি আরও বলেন, গোবর যে কোনও রকম রেডিয়েশন থেকে বাঁচাতে পারে মানুষকে। যদিও আইভিআরআইয়ের পশু চিকিৎসক তথা গবেষকার অন্য কথাই জানালেন।
বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, এসচেরিচিয়া কোলি নামের একটি ব্যাকটেরিয়া অতিসক্রিয় থাকে গোমূত্রে। যা পাকস্থলির কঠিন অসুখের কারণ হতে পারে। এছাড়াও মানুষের পক্ষে ক্ষতিকর আরও ১৪টি ব্যাকটেরিয়া রয়েছে গোমূত্রে। সব মিলিয়ে গরুর প্রস্রাব কখনই মানুষের পানযোগ্য নয়। গরু ও মহিষের ৭৩টি মূত্রের নমুনা পরীক্ষা করে বিশেষজ্ঞরা দাবি করেছেন, গরু নয়, মহিষের মূত্রে অনেক বেশি অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল গুন রয়েছে। ভোজ জানান, এস এপিডার্মিডিস, ই রাপোনটিসির মতো ব্যাকটেরিয়া রয়েছে মহিষের মূত্রে। যা অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল হিসেবে কাজ করতে পারে।
ভোজ বলেন, “অনেকেই বলেন গোমূত্র অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল, ফলে তা মহৌষধ। এভাবে সাধারণীকরণ করবেন না।” আইভিআরআইের গবেষক আরও বলেন, “অনেকে বলে থাকেন পরিশুদ্ধ ক্ষতিকর গোমূত্র ব্যাকটেরিয়া থাকে না। গোটা বিষয়টি গবেষণার। পরবর্তীকালে এই বিষয়েও গবেষণা করা হবে।” কার্যত হিন্দুত্ববাদী তথা স্বঘোষিত গোরক্ষকদের হতাশ করল ইন্ডিয়ান ভেটেরিনারি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের সাম্প্রতিক গবেষণা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.