সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মুসলিম সমাজে বিচ্ছেদের নিকৃষ্টতম ও অবাঞ্ছিত প্রক্রিয়া হল তিন তালাক৷ যদিও কিছু মানুষ মনে করে থাকেন এটি আইনত৷ তিন তালাক বিষয়ক মামলায় শুক্রবার শুনানিতে এমনই মন্তব্য শোনা গেল বিচারপতি জে এস খেহরের নেতৃত্বাধীন পাঁচ সদস্যের ডিভিশন বেঞ্চের তরফ থেকে৷
বৃহস্পতিবার থেকেই শুরু হয়েছে তিন তালাক সংক্রান্ত মামলার শুনানি৷ শুরুতেই শীর্ষ আদালত জানিয়ে দিয়েছিল বহুবিবাহ নিয়ে এই মামলায় কোনও কথা বলা হবে না৷ সে কথা মাথায় রেখেই শুক্রবারের শুনানি শুরু হয়৷ খেহরের নেতৃত্বে ডিভিশন বেঞ্চ প্রশ্ন তোলে, তিন তালাক কী প্রথাগত অনুশীলন না মৌলিক ধর্মীয় অধিকার? এটা কেবলই প্রথা না শরিয়তি আইন? অপরাধমূলক কোনও বিষয় কি শরিয়তি আইনের অঙ্গ হতে পারে? এই সমস্ত প্রশ্নের উত্তরে প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ও আইনজীবী সলমন খুরশিদ বলেন মুসলিম সমাজ শৌখিন সংস্কৃতির প্রভাবে ক্ষতিগ্রস্ত৷ তাঁর মত, আদালত ধর্মের মধ্যে মাতা গলাচ্ছে না, বরং ধর্মকে আরও সদর্থক হতে সাহায্য করছে৷
[যানজটের ক্লান্তি কাটাতে রাস্তাতেই যোগাসন এই মহিলার]
এরপরই প্রধান বিচারপতি খেহর জানতে চান ইসলাম ধর্মাবলম্বী কোন কোন দেশে বা তার বাইরে অন্য কোন দেশে তিন তালাককে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে৷ খুরশিদ বলেন পাকিস্তান, আফগানিস্তান, মরক্কো, সৌদি আরবের মতো দেশগুলিতেও এই প্রক্রিয়াকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে৷
তিন তালাকের এক ভুক্তভোগীর পক্ষ থেকে লড়তে আসা আইনজীবী রাম জেঠমালানি তিন তালাককে অসাংবিধানিক বলে অভিহিত করেন৷ তিনি বলেন, মহিলাদের প্রতি আমরা লিঙ্গবৈষম্যমূলক আচরণ করতে পারি না৷ আদালতের তরফ থেকে যে সিদ্ধান্তই নেওয়া হোক তা কখনওই বৈষম্যমূলক হওয়া উচিত নয়৷ তিন তালাক অসাংবিধানিক৷ সংবিধানের ১৪ ও ১৫ ধারায় অনুযায়ী প্রত্যেক নাগরিককে বৈষম্যমূলক আচরণ থেকে রক্ষা করা যায় এবং সমানাধিকার দেওয়া যায়৷ তিন তালাকের প্রক্রিয়াটি জঘন্য আর দূর করাই উচিত বলেই সওয়াল করেন এই দুঁদে বর্ষীয়ান আইনজীবী৷
[টিভিতে তো দেখেছেন এঁদের, জানেন এঁরা পদ্মভূষণে সম্মানিত?]
এদিন তিন তালাকের পক্ষে অল ইন্ডিয়া মুসলিম পার্সোনাল ল’ বোর্ডের তরফ থেকে সওয়াল করেন আরও এক প্রাক্তন মন্ত্রী তথা আইনজীবী কপিল সিব্বল৷ তিনি বলেন, এটি কোনও বিষয়ই নয়৷ কোনও বিচক্ষণ মুসলিম কোনও এক সকালে ঘুম থেকে উঠেই তালাক, তালাক, তালাক বলবেন না৷ তাঁর দাবি, হয় সরকারের এ বিষয়ে কোনও আইন লাগু করা উচিত, নয়তো এর সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকার মুসলিম সম্প্রদায়ের উপরই ছেড়ে দেওয়া উচিত৷ আদালতের এ ব্যাপারে কোনও হস্তক্ষেপ করা ঠিক নয় বলেই জানান তিনি৷
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.