সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মহারাষ্ট্রের মহানাটকে ফের মহানাটকীয় পরিবর্তন। যেমন নাটকীয়ভাবে শপথ নিয়েছিলেন, তার চেয়েও নাটকীয় দেবেন্দ্র ফড়নবিসের বিদায়। ফের একটা ঘটনাবহুল দিনে বলিউড সিনেমার চিত্রনাট্যের মতো আমূল বদলে গেল ছবিটা। মঙ্গলবার সকালে আস্থা ভোটের জন্য সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ, তার কিছুক্ষণ পর উপমুখ্যমন্ত্রী অজিত পাওয়ার ও পরে মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়নবিসের ইস্তফা। মাত্র সাড়ে তিনদিনের মধ্যে ফড়নবিস সরকারের পতন। কর্নাটকে আস্থাভোটের আগেই যেভাবে ইস্তফা দিয়েছিলেন বি এস ইয়েদুরাপ্পা, সেই ছবিই দেখা গেল মহারাষ্ট্রেও। ফড়নবিসের ইস্তফার পর মঙ্গলবার রাতেই রাজভবনে গিয়ে সরকার গঠনের দাবি জানায় ‘মহারাষ্ট্র বিকাশ আগাড়ি’ জোট। আগামিকাল, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬.৪০ মিনিটে জোটের নেতা উদ্ধব ঠাকরে মুখ্যমন্ত্রী পদে শপথ নেবেন। জোটের পক্ষে ১৬৬ জন বিধায়কের তালিকা রাজ্যপালের কাছে দেওয়া হয়।
মহারাষ্ট্র বিধানসভার ফল ঘোষণার পর থেকেই একের পর এক নাটক শুরু হয় বাণিজ্যনগরীতে। অবশেষে সব সমীকরণে দাঁড়ি। মঙ্গলবার সকালে বিচারপতি এন ভি রামান্না, বিচারপতি অশোক ভূষণ ও বিচারপতি সঞ্জীব খান্নার ডিভিশন বেঞ্চ নির্দেশ দেয়, বুধবার বিকেল পাঁচটার মধ্যে মহারাষ্ট্র বিধানসভায় করতে হবে ফ্লোর টেস্ট। এই ‘ফ্লোর টেস্ট’-এ ব্যবহার করা যাবে না গোপন ব্যালট। হবে সরাসরি সম্প্রচারও। আস্থাভোটে ফড়নবিসের অবস্থা যে সুবিধার নয়, তার দেওয়াল লিখন সোমবার সন্ধ্যাতেই লেখা হয়ে গিয়েছিল মুম্বইয়ের গ্র্যান্ড হায়াত হোটেলের বলরুমে। যখন শিবসেনা-কংগ্রেস ও এনসিপি মিলে ১৬২ জন বিধায়ককে এক জায়গায় এনে ফেলেছিল। মুখ্যমন্ত্রী হওয়া নিশ্চিত হওয়ার পরই আবেগাপ্লুত উদ্ধব বলেন, “রাজ্য চালনার কথা স্বপ্নেও কখনও ভাবিনি। কংগ্রেস প্রেসিডেন্ট সোনিয়া গান্ধী এবং অন্যান্যদের ধন্যবাদ জানাতে চাই।”
ফলে বিজেপি শীর্ষ নেতৃত্ব কোনও ঝুঁকি নিতে চায়নি। মধ্যরাতের অভিযানে ফড়নবিসকে মসনদে বসালেও সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে তাতে একপ্রকার ধাক্কাই লাগে। এরপরই রাজধানীতে আলোচনায় বসেন বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। নরেন্দ্র মোদি, অমিত শাহ ও কার্যনির্বাহী সভাপতি জে পি নাড্ডার বৈঠকে ঠিক কী কী আলোচনা হয়েছে তা জানা না গেলেও মনে করা হচ্ছে, সেখান থেকেই মহারাষ্ট্রে গিয়ে পৌঁছায় ইস্তফা দেওয়ার নির্দেশ। রাজ্যপাল ভগৎ সিং কোশিয়ারির সঙ্গে দেখা করে ইস্তফা দেন উপমুখ্যমন্ত্রী অজিত পওয়ার। এর কিছুক্ষণের মধ্যেই সাংবাদিক সম্মেলন করেন দেবেন্দ্র ফড়নবিস। সেখানেই জনাদেশ অমান্য করার দায়ে শিব সেনাকে বিদ্ধ করে নিজের পদত্যাগের কথা ঘোষণা করেন। এরপর রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করে সরকারিভাবে ইস্তফা দেন।
ওয়াকিবহাল মহলের বক্তব্য, পদত্যাগ না করে কোনও উপায় ছিল না ফড়নবিসের। কারণ মহারাষ্ট্রে এখন যে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, তাতে কিছুতেই বুধবার আস্থা ভোটে সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণ করতে পারতেন না তিনি। সেক্ষেত্রে সম্মানহানি হত দলের শীর্ষনেতৃত্বের।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.