ছবি : প্রতীকী
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: দেশজুড়ে দ্রুত বাড়ছে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ। সেই সঙ্গে বাড়ছে একে অপরের প্রতি অবিশ্বাসও। নিজেকে ও পরিবারের সদস্যদের বাঁচানোর তাগিদে অচেনা মানুষের থেকে দূরে থাকতে চাইছেন। মাঝে মধ্যে তো আবার করোনা আক্রান্তদের পরিবারের লোকদের সঙ্গে হাতাহাতিতেও জড়িয়ে পড়ছে প্রতিবেশীরা। তবে উত্তরপ্রদেশের একটি ঘটনার কথা প্রকাশ্য আসার পর করোনা থেকে বাঁচতে মানুষ কতটা বেপরোয়া ও নির্মম হয়ে উঠেছে তার প্রমাণ পাওয়া গেল। করোনা আক্রান্ত সন্দেহে এক যুবতীকে বাস থেকে ছুঁড়ে ফেলে দিল একটি বাসের চালক। এর ফলে মর্মান্তিকভাবে মৃত্যু হয়েছে ওই যুবতীর। নৃশংস এই ঘটনাটি ঘটেছে উত্তরপ্রদেশের যমুনা এক্সপ্রেসওয়ে (Yamuna Expressway) -তে। মৃত যুবতীর নাম অনশিকা যাদব জানা গিয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, দু’বছর আগে উত্তরপ্রদেশের ফিরোজাবাদ জেলার শিকোহাবাদের বাসিন্দা অনশিকার পরিবার দিল্লির মান্ডয়ালি এলাকায় বসবাস করতে শুরু করে। গত ১৫ জুন মায়ের সঙ্গে সরকারি বাসে চেপে দিল্লি থেকে শিকোহাবাদে আসছিলেন ১৯ বছরের ওই যুবতী। যমুনা এক্সপ্রেস ধরে আসার সময় আচমকা শরীর খারাপ লাগতে শুরু করে তাঁর। বিষয়টি বাসের চালককে জানিয়ে তার কাছ থেকে সাহায্য চান ওই যুবতীর মা। কিন্তু, এতেই ঘটে যায় বিপত্তি। কোনও কারণে উত্তরপ্রদেশ রাজ্য পরিবহণ সংস্থা (UPSRTC) -এর কর্মী ওই বাসচালকের মনে হয়, মেয়েটির করোনা হয়েছে। এরপরই সাহায্য করার বদলে ওই যুবতীকে ছুঁড়ে বাস থেকে ফেলে দেয় সে। অনশিকার মা বারবার তার পায়ে ধরে অনুরোধ জানালেও কোনও কাজ হয়নি। চোখের সামনে পাশবিক এই ঘটনা দেখে সাহায্য করতে এগিয়ে আসেনি বাসের অন্য যাত্রীরাও। ফলে রক্তাক্ত অবস্থা আধঘণ্টায় রাস্তায় পড়ে থাকার পর মৃত্যু হয় ওই যুবতীর।
মৃত যুবতীর দাদা বিপিন যাদবের অভিযোগ, ওই বাসচালক প্রথমে একটি কম্বল অনশিকার শরীরে ছুঁড়ে দেয়। তারপর সেটি দিয়ে জড়িয়ে ধরে টেনে হিঁছড়ে তাঁকে বাস থেকে ফেলে দেয়। এই ঘটনার পরে স্থানীয় পুলিশ থানায় অভিযোগ জানাতে গেলেও তারা ডায়েরি নিতে রাজি হয়নি। কারণ হিসেবে, যুবতীটির ময়নাতদন্তের রিপোর্টে থাকা হার্ট অ্যাটাকের কথা উল্লেখ করে। পরে ওই যুবতীর পরিবার এই ঘটনার বিচার চেয়ে দিল্লি মহিলা কমিশনের দ্বারস্থ হতেই বদলে যায় ছবিটা। গত ৯ জুলাই কমিশনের তরফে উত্তরপ্রদেশ পুলিশের কাছে এই বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ জানানো হয়। তারপরই প্রকাশ্যে আসে এই নৃশংস ঘটনার খবর।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.