ফাইল ছবি
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: পহেলগাঁও হামলার জবাবে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ভারতের অপারেশন সিঁদুর নিয়ে প্রশ্ন তুললেন জম্মু ও কাশ্মীরের প্রান্তন মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা মুফতি। মঙ্গলবার সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে মেহবুবা বলেন, ‘পহেলগাঁওয়ে যারা হামলা চালিয়েছিল সেই জঙ্গিরা তো আজও ধরা পড়ল না। তাহলে অপারেশন সিঁদুরে আমাদের লাভ কী হল?’ মেহবুবার এহেন মন্তব্য প্রকাশ্যে আসার পর স্বাভাবিকভাবেই বিতর্ক শুরু হয়েছে।
পিপলস ডেমোক্রেটিক পার্টি (পিডিপি)-র প্রধান মেহবুবা এদিন সংবাদ মাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে বলেন, “পহেলগাঁওয়ের ঘটনার পর বহু মানুষকে আমরা হারিয়েছি। আমাদের বাড়িঘর গুঁড়িয়ে গিয়েছে। কোটি কোটি টাকার সম্পত্তি নষ্ট হয়েছে। পহেলগাঁও সন্ত্রাসে যারা দোষী তাদের তো এখনও ধরা যায়নি। তাহলে এসব করে আমাদের কী লাভ হল?” শুধু তাই নয়, পাকিস্তানের মুখোশ খুলতে বিশ্বজুড়ে প্রতিনিধি দল পাঠানোর সিদ্ধান্ত কেন্দ্রীয় সরকার নিয়েছে সে প্রসঙ্গে মেহবুবা বলেন, “সরকার এখন যে পদক্ষেপ নিয়েছে তা আগে করা উচিত ছিল। পরমাণু শক্তিধর রাষ্ট্রের কাছে যুদ্ধ কোনও বিকল্প হতে পারে না। দুই দেশের মধ্যে যা হয়েছে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ ও কূটনৈতিক পদ্ধতিতে মেটানো সম্ভব ছিল। যেখানে ছোরায় কাজ চলে যেত সেখানে আপনি তলোয়ার বের করেছেন।”
গত ২২ এপ্রিল পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলায় মৃত্যু হয়েছিল ২৬ জনের। তার পরেই ৭ মে পাকিস্তানের জঙ্গিঘাঁটি ধ্বংস করার জন্য ‘অপারেশন সিঁদুর’ শুরু করে ভারতীয় সেনা। গুঁড়িয়ে দেওয়া হয় পাকিস্তান ও পাক অধিকৃত কাশ্মীরে থাকা জঙ্গিদের আঁতুড়ঘর। ভারতের হামলার পালটা জম্মু ও কাশ্মীর থেকে গুজরাট পর্যন্ত বেলাগাম ড্রোন হামলা শুরু করে পাক সেনা। শুরু হয় দুই দেশের যুদ্ধ পরিস্থিতি। তবে পাক হামলা রুখে দেওয়া তো বটেই, পাকিস্তানের একের পর এক সেনাঘাঁটিতে হামলা চালায় ভারত। সেই হামলায় স্পষ্ট বার্তা দেওয়া হয়, বাড়াবাড়ি করলে পাকিস্তানের কপালে আরও দুঃখ রয়েছে। এই পরিস্থিতিতে দুই দেশের সংঘর্ষ বিরতি হলেও ভারতের তরফে বার্তা দেওয়া হয়, অপারেশন সিঁদুর এখনও শেষ হয়নি। পাকিস্তানে প্রভেশন পিরিয়ডে রাখা হয়েছে।
তবে এই ঘটনার পর থেকেই অপারেশন সিঁদুর ও মোদি সরকারের সমালোচনায় সরব হয়েছেন মুফতি। পহেলগাঁওয়ের ঘটনায় কাশ্মীরিদের হাত থাকতে পারে বলে বার্তা দিয়েছিলেন ফারুক আবদুল্লা। তার বিরোধিতায় সরব হন মুফতি। শুধু তাই নয়, সিন্ধু জলচুক্তি আপাতত বাতিলের ফলে ঝিলাম নদীতে তুলবুল প্রকল্প পুনরায় শুরু করার আহ্বান জানান ওমর আবদুল্লা। যার ফলে ঝিলাম নদী ফের নৌযান চলাচলের উপযোগী এবং শীতকালে নিম্নাঞ্চলের বিদ্যুৎ প্রকল্পগুলির উৎপাদন ক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে বলে উল্লেখ করেন। এই প্রকল্পের বিরোধিতা করে মুফতি বলেন, ‘এই মন্তব্য উস্কানিমূলক ও বিপজ্জনক। উপত্যকার মানুষেরও দেশের অন্যান্য মানুষের মতো শান্তি প্রাপ্য। জলের মতো অপরিহার্য এবং জীবনদায়ী উপাদানকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করা অমানবিক। আন্তর্জাতিকভাবে এটা সকলের জন্য ঝুঁকি ডেকে আনবে।’
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.