ফাইল ছবি।
সোমনাথ রায়, নয়াদিল্লি: প্রাথমিকে নিয়োগে সামান্য ভুল হয়েছে। সুপ্রিম কোর্টে স্বীকার করে নিল প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ। বুধবার প্রাথমিক মামলার শুনানিতে পর্ষদের আইনজীবী স্বীকার করে নিয়েছেন, ২ জন পরীক্ষার্থীকে ভুল করে অতিরিক্ত এক নম্বর করে দেওয়া হয়েছে। মামলার পরবর্তী শুনানি বৃহস্পতিবার।
বুধবার দীর্ঘক্ষণ প্রাথমিক নিয়োগ মামলার শুনানি চলে শীর্ষ আদালতে। প্রায় সাড়ে ৩ ঘণ্টা ধরে চলা শুনানিতে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের আইনজীবী জয়দীপ গুপ্ত মেনে নিয়েছেন প্রাথমিকে অ্যাসিট্যান্ট টিচার নিয়োগে সামান্য অনিয়ম হয়েছে। তিনি জানান, বাংলায় একটি প্রশ্ন ভুল থাকায় সেই প্রশ্নটির যারা যারা উত্তর দিয়েছেন, তাঁরা সকলে নম্বর পেয়েছেন। কিন্তু ভুল করে দু’জন উর্দুভাষী পরীক্ষার্থীকেও ওই এক নম্বর দেওয়া হয়েছে। এ প্রসঙ্গে পর্ষদের আইনজীবী জয়দীপ গুপ্ত স্বীকার করে নেন, “এটা ভুল হয়েছে। ২৭০ জনের মধ্যে দুজনকে যদি ভুল করে নিয়োগ করা হয়ে থাকে তাহলে তাদের বাদ দিয়ে দেওয়া হোক। তদন্ত চলছে, সত্য প্রকাশ পাবে।”
পালটা সওয়াল আসে চাকরিপ্রার্থীদের আইনজীবীরও। তিনি বলেন, এটা শুধু ভুল নয়, বিরাট ভুল। তাছাড়া নিয়োগ সংক্রান্ত নির্দেশিকায় স্পষ্ট বলা হয়েছিল, বিজ্ঞপ্তি জারির দিন টেট পাস করা পরীক্ষার্থীরা আবেদন করতে পারবেন। অথচ হাই কোর্ট যে ২৭০ জনের চাকরি বাতিল করেছে তাঁদের অনেকেই পরে টেট পাস করেছেন। তাছাড়া অন্যান্য ক্ষেত্রে পরীক্ষার্থীদের নম্বর বেড়েছে কিনা, সেটা জানতে RTI করতে হয়েছিল। কিন্তু এই ২৭০ জনের ক্ষেত্রে দেখা গিয়েছে, কোনওরকম RTI ছাড়াই নম্বর বাড়ার খবর এরা জেনে গিয়েছেন। তাহলে কী পর্ষদের ভিতর থেকে কেউ এই তথ্য ফাঁস করেছেন?
চাকরিহারাদের আইনজীবী পি এস পাটোয়ালিয়ার আবার এদিন দাবি করেছেন, হাই কোর্ট কোনওরকম বক্তব্য না শুনেই চাকরি কেড়ে নিয়েছে। যেখানে বোর্ডের তরফে স্পষ্ট বলা হয়েছে, বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ম মেনে হয়েছে সেখানে চাকরি বাতিল হয় কী করে। তাছাড়া সিবিআইয়ের চার্জশিটেও দুর্নীতির উল্লেখ নেই। চাকরিহারাদের আইনজীবী বলছেন, যে আইন মেনে ২৬৯ জনের চাকরি বাতিল হয়েছে, সেই আইন মেনেই নতুন করে ১৮৩ জনকে নিয়োগ করা হয়েছে। তাহলে এদের নিয়োগ প্রক্রিয়া যদি বৈধ হয়, তাহলে চাকরিহারাদের নিয়োগ অবৈধ হয়, কী করে?
চাকরিপ্রার্থীরা এদিন একটি গুরুত্বপূর্ণ পরিসংখ্যানও তুলে ধরেছেন। তাঁরা বলছেন, পর্ষদের বিজ্ঞপ্তিতে বলা ছিল, ৪২ হাজার ৯৪৯টি শূন্যপদ আছে। অথচ দেখা যাচ্ছে চাকরি হয়েছে কমবেশি ৪০ হাজার জনের। তাহলে বাকি ২ হাজার আসন কি বিক্রি করা হল?
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.