ছবি: প্রতীকী
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: চিকিৎসার নামে অসুস্থ মহিলার চোখ উপড়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠল এক তান্ত্রিক দম্পতির বিরুদ্ধে। শুধু তাই নয়, ওই মহিলার সারা শরীরে ত্রিশূল বিধিঁয়ে গর্তও করে দেওয়া হয়। পাশবিক এই অত্যাচারের জেরে মৃত্যু হয় ওই মহিলার। বিষয়টি জানতে পেরে ওই তান্ত্রিক দম্পতিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। নারকীয় এই ঘটনাটি ঘটেছে ঝাড়খণ্ডের গারওয়া এলাকার কোন্ডিরা গ্রামে। ধৃতদের নাম সতেন্দ্র ওঁরাও এবং আলম দেবী।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, কয়েক সপ্তাহ ধরে অসুস্থ ছিলেন গারওয়ার কোন্ডিরা গ্রামের বাসিন্দা রুদনী দেবী। কিন্তু, ডাক্তারের কাছে না গিয়ে তাঁকে এলাকায় তান্ত্রিক হিসেবে পরিচিত ওই দম্পতির কাছে নিয়ে যান পরিবারের লোকেরা। এরপর রুদনী দেবীর চিকিৎসা শুরু করে ওই দম্পতি। কিছুক্ষণ বাদে অসুস্থ ওই মহিলার শরীরে শয়তান বাসা বেঁধেছে বলে জানায় আলম দেবী ও সতেন্দ্র ওঁরাও। তবে তারা ওই শয়তানকে তাড়িয়ে দিতে সক্ষম হবে বলেও জানায়। রুদনী দেবীর পরিবারের সম্মতিতে শুরু হয় তাঁর চিকিৎসা। সারা শরীরে ত্রিশূল বিধিঁয়ে গর্ত করে দেয় তান্ত্রিকরা। এরপর উপড়ে ফেলা হয় রুদনী দেবীর দুটি চোখও। এমনিতেই গুরুতর অসুস্থ ছিলেন রুদনী দেবী। তার উপর অমানুষিক এই অত্যাচার আর সহ্য করতে পারেননি। কিছুক্ষণ যন্ত্রণায় ছটফট করার পর মারা যান।
এরপরই ওই মহিলার মারা যাওয়ার খবর চেপে গিয়ে মৃতদেহটি পুড়িয়ে ফেলার চেষ্টা করেন পরিবারের লোকেরা। যদিও শেষ রক্ষা হয়নি, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে ওই তান্ত্রিক দম্পতি-সহ মৃতের বাড়ির কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করে।
এপ্রসঙ্গে গারওয়া এলাকার এসডিপিও নীরজ তিওয়ারি বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে প্রত্যন্ত এলাকায় ঘুরে ঘুরে কুসংস্কারের বিরুদ্ধে প্রচার চালিয়েছে। সাধারণ মানুষের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধির চেষ্টা করেছি। কিন্তু, তারপরেও এই ধরনের মর্মান্তিক ঘটনা ঘটছে। আসলে সবকিছু জানার পরেও নিজেদের স্বভাব বদলাতে চাইছে না অনেকে। এই ঘটনা তারই প্রমাণ। তবে আমরাও হাল ছাড়ছি। এই ঘটনায় অপরাধীদের উপযুক্ত শাস্তি দিলে বাকিদের মনে আতঙ্কের সৃষ্টি হবে। তার ফলে এই ধরনের অমানবিক ঘটনার সংখ্যা ক্রমশই কমবে।’
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.