সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: যৌন পিপাসু দুই ব্যক্তির হাতে চূড়ান্ত হেনস্তার শিকার হয়েছিলেন ২৮ বছরের যুবতী। প্রথমবার মুখ ফিরিয়ে নিয়েছিল পুলিশ। নিজেকে কোনওক্রমে সামলে নিয়ে দ্বিতীয়বার তাদের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করতে যাচ্ছিলেন তিনি। কিন্তু তখনই ফের ঘটল বিপত্তি। যুবতীর অভিযোগের হাত থেকে রক্ষা পেতে তাঁর গায়ে আগুন লাগিয়ে দিল দু’জন। আপাতত হাসপাতালে বাঁচার আপ্রাণ লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন নির্যাতিতা।
ফের যোগী আদিত্যনাথের রাজ্য সাক্ষী থাকল নারকীয় এই ঘটনার। পুলিশ জানাচ্ছে, গত ২৯ নভেম্বর উত্তরপ্রদেশের সীতাপুরে নিজের শ্বশুরবাড়ি থেকে ফিরছিলেন ওই যুবতী। সেই সময়ই রাস্তায় দুই ব্যক্তি তাঁর পথ আটকায়। সম্পর্কে ভাই হয় তারা৷ ওই মহিলাকে অশালীন মন্তব্যের পাশাপাশি শ্লীলতাহানিরও চেষ্টা করে বলে অভিযোগ। কোনওক্রমে সেখান থেকে পালিয়ে সোজা তাম্বোর থানায় পৌঁছান যুবতী। কিন্তু দুই ব্যক্তির বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করতে চাইলেও পুলিশ তাঁকে ফিরিয়ে দেয়। শ্বশুরবাড়ি ফিরে গোটা ঘটনা পরিবারকে জানান তিনি। এরপর তাঁর পরিবার ১০০ ডায়াল করে পুলিশকে বিষয়টি খুলে বলে। সব শুনে যুবতীর বাড়ি পৌঁছায় পুলিশের একটি দল। কিন্তু তখনও তাঁর অভিযোগ নেওয়া হয়নি। উলটে বলা হয়, থানায় গিয়ে লিখিতভাবে অভিযোগ জানাতে হবে।
পুলিশের নির্দেশমতো গত শনিবার থানার উদ্দেশে রওনা দেন নির্যাতিতা। পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা থানাতেই অপেক্ষা করছিলেন যুবতীর জন্য। কিন্তু সেখানে আর পৌঁছতে পারলেন না তিনি। মাঝরাস্তায় ফের দুই ভাই তাঁকে ঘিরে ধরে। যুবতী যাতে কোনওভাবেই অভিযোগ জানাতে না পারেন, তারই ‘ব্যবস্থা’ করে তারা। যুবতীকে রাস্তার পাশের একটি মাঠে নিয়ে গিয়ে তাঁর গায়ে আগুন লাগিয়ে চম্পট দেয় দুই অভিযুক্ত। যুবতীর চিৎকার শুনে ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন স্থানীয়রা। তারাই এরপর উদ্ধার করে তাঁকে হাসপাতালে ভরতি করেন। আপাতত মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন তিনি। তাঁর শরীরের প্রায় ৬০ শতাংশ পুড়ে গিয়েছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। তবে ইতিমধ্যেই পুলিশ তাঁর বয়ান নিয়েছে। অভিযুক্তদের নামও জানিয়েছেন যুবতী।
তাঁর অভিযোগের উপর ভিত্তি করে রবিবার দুই অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তবে পুলিশের গাফিলতিতে বিরক্ত ডিজিপি ও পি সিং। তিনি বলেন, রাজেশ ও রামুকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সেই সঙ্গে তাম্বোর থানার এসএইচও ওম প্রকাশ সরোজকে সাসপেন্ড করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যেই সাসপেন্ড করা হয়েছে থানার হেড কনস্টেবলকেও। আউটপোস্ট-ইন-চার্জ মনোজ কুমারের গাফিলতি খতিয়ে দেখতে কাজে নেমেছে তদন্তকারীদের একটি দল। পুলিশ তৎপর হলে এমন ঘটনা এড়ানো যেত বলেই মনে করছেন ডিজিপি। এই ঘটনাই আরও একবার চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল যোগীর রাজ্যে মহিলাদের নিরাপত্তাহীনতা ও পুলিশের বদান্যতার ছবিটা৷
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.