সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: করোনা অতিমারিতে যখন জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে বিধ্বস্ত গোটা দেশ, তখন সমাজের কিছু মানুষ নিজের প্রাণের থেকে জাত বাঁচাতে বেশি সতর্ক। ভাবলে অবাক লাগলেও এটাই সত্যি। লকডাউনের মধ্যে সে ছবিই ধরা পড়ল নৈনিতালে। দলিতের রান্না করা খাবার খেতে অস্বীকার করলেন ২৩ বছরের এক যুবক। যে ঘটনায় নিন্দার ঝড় উঠেছে।
দীনেশ চন্দ্র মিলকানি নামের ওই যুবক গত ১৫ মে থেকে ভুমকা গ্রামের একটি সরকারি প্রাথমিক স্কুলে কোয়ারেন্টাইনে রয়েছেন। সঙ্গে রয়েছে তাঁর ভাইপো এবং আরও তিনজন। সেখানেই রান্নার দায়িত্ব ভবানী দেবীর কাঁধে। করোনা মোকাবিলায় কোয়ারেন্টাইনে থাকা মানুষগুলির জন্য রান্না করে সময় মতো তাঁদের মুখের সামনে ধরছেন। কিন্তু দীনেশ সে খাবার স্পর্শ করতে নারাজ। কারণ? উচ্চবর্ণের যুবক হয়ে একজন দলিতের রান্না ছোঁবেন না তিনি। তাঁর এমন আচরণ একেবারেই মেনে নিতে পারেননি গ্রাম প্রধান। থানায় অভিযোগ জানানোর পর মামলা রুজু হয় ওই যুবকের বিরুদ্ধে।
অন্যান্য দিনের মতোই গত ১৫ মে কোয়ারেন্টাইনে থাকা প্রত্যেকের জন্য খাবার বানিয়েছিলেন ভবানী দেবী। কোনও রকম অভিযোগ না জানিয়েই সে খাবার খান অন্যরা। কিন্তু দীনেশ বেঁকে বসেন। বলেন, তাঁর খাবার বাড়ি থেকে আসবে। এমন উত্তর পেয়ে খাবার না খাওয়ার কারণটা প্রথমে বুঝতে পারেননি ভবানী দেবী। কিন্তু যখন ওই যুবক তাঁর হাত থেকে জল পানেও অস্বীকার করেন, তখন ছবিটা পরিষ্কার হয়। গোটা ঘটনা গ্রাম প্রধান মুকেশ চন্দ্র বুদ্ধর কানে যেতেই এর তীব্র প্রতিবাদ করেন তিনি।
যদিও তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা জাতিবিদ্বেষের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন দীনেশ। তিনি সাফ জানান, এমন কোনও ব্যাপার নেই। তিনি সবসময় বাড়ির খাবার খেতেই অভ্যস্ত। সেই কারণেই কোয়ারেন্টাইন সেন্টারের রান্না খেতে চাননি। ভারতীয় দণ্ডবিধির একাধিক ধারায় তাঁর বিরুদ্ধে মামলা রুজু হয়েছে। দীনেশের কথার সত্যতা যাচাই করে দেখছে পুলিশ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.