ফাইল ছবি
গৌতম ব্রহ্ম: দাক্ষিণাত্য এবং দিল্লি গিয়ে কোনও সুরাহা হয়নি। সুস্থ হওয়ার ন্যূনতম আশ্বাসটুকুও পাননি ৫২ বছরের সিরোসিস অফ লিভারে আক্রান্ত রঞ্জিত কুণ্ডু। শুধু কাড়কাড়ি টাকা খরচ। অবশেষে ঘরের সামনে পিজি হাসপাতালে কার্যত নিখরচায় মিলল সুস্থ হওয়ার পাসওয়ার্ড। রঞ্জিতবাবুর শরীরে প্রতিস্থাপিত হচ্ছে তারই ১৯ বছরের ছেলে রাজের লিভারের একটা অংশ। বৃহস্পতিবার ভোর ৬টায় শুরু হয়েছে অস্ত্রোপচার। গ্যাসট্রোএনট্রোলজি বিভাগের অধ্যাপক ডাক্তার অভিজিৎ চৌধুরী এখবর জানিয়ে বলেছেন, “রাত পর্যন্ত অস্ত্রোপচার চলবে। আশা করি সুস্থ হয়ে উঠবেন রঞ্জিতবাবু।”
কলকাতা পুরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলার গৌতম হালদারের আত্মীয় রঞ্জিত হালদার। তিনিই এসএসকেএম হাসপাতালের কথা বলেন রঞ্জিতবাবুকে। এমনকী, যোগাযোগও করিয়ে দেন তিনিই। হিল্লি-দিল্লি করেও যখন কোনও লাভ হল না, আশা একপ্রকার ছেড়েই দিয়েছিলেন রঞ্জিত কুণ্ডু। কিন্তু গৌতম হালদারের কথায় ফের আশা জাগে। একবার চেষ্টা করতে তো ক্ষতি নেই! শেষ পর্যন্ত সেই চেষ্টাতেই ফল মিলল। চেন্নাই-দিল্লিতে যা হয়নি, তাই হল এসএসকেএম হাসপাতালে।
হাসপাতালের গ্যাসট্রোএনট্রোলজি বিভাগে চিকিৎসা শুরু হয় রঞ্জিতবাবুর। চিকিৎসকরা জানান, লিভার প্রতিস্থাপন করতে হবে তাঁর। এগিয়ে আসে বছর উনিশের ছেলে রাজ। তিনি রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা অনার্সের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র। যদিও সংশয়ের কোনও কারণ নেই বলে জানিয়েছেন গ্যাসট্রোএনট্রোলজি বিভাগের অধ্যাপক ডাক্তার অভিজিৎ চৌধুরী। তাঁর তত্ত্বাবধানে চলছে অস্ত্রোপচার। যদিও লিভার প্রতিস্থাপন এর আগেও হয়েছে এসএসকেএমের এই বিভাগে। এরকম ‘লাইভ ট্রান্সপ্ল্যান্ট’ও হয়েছে। বাবার দেওয়া লিভারে সুস্থ হয়েছে ছেলে। এবার উলটপুরাণ। ছেলের দেওয়া লিভার প্রতিস্থাপিত হচ্ছে বাবার শরীরে। বিশেষজ্ঞদের মতে, লিভার এমন একটি অঙ্গ যা ‘রিজেনারেট’ হয়। তাই বাবাকে লিভার দেওয়ার জন্য রাজের শারীরিক কোনও ক্ষতি হবে না। কিছুদিন তাঁকে বিশ্রামে থাকতে হবে, এই যা। তারপর ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে উঠবেন রাজ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.