সুব্রত বিশ্বাস: সারা বছর আমজনতার জন্য কাজ করেছেন তাঁরা। করোনা আবহেও সামনের সারিতে দাঁড়িয়ে লড়াই করেছেন। আর সেই লড়াই করতে করতেই মহামারীতে প্রাণ হারিয়েছেন। এবার তাঁদের সেই লড়াইকে কুর্নিশ জানাল রেল। অথচ সম্মান যাঁরা পেলেন তাঁরাই জানতে পারলেন না।
কোভিড অকালে কেড়ে নিয়েছে এই রেলকর্মীদের প্রাণ। মৃত্যুর পরে ৬৫ ও ৬৬তম রেল সম্মান পেলেন বিনোদ প্রসাদ ও উচিৎ মণ্ডল নামের দুই রেলকর্মী। দু’জনেই হাওড়া ইলেট্রিক্যাল ইঞ্জিনয়ারিং বিভাগের কর্মী। শুক্রবার ও শনিবার হাওড়ার দু’দিন ব্যাপী অনুষ্ঠানে প্রায় ১৩০ জনকে কাজের দক্ষতার জন্য পুরষ্কৃত করা হল।
যাঁদের মধ্যে এপ্রিল মাসে কোভিড আক্রান্ত হয়ে মারা গিয়েছেন লোকাল ট্রেনের চালক বিনোদ প্রসাদ। দক্ষ ট্রেন পরিচালনার জন্য তাঁকে এই সম্মান দেওয়া হয়েছে। হাওড়ার ডিআরএম সুমিত নারুলা বলেন, “কাজে ফাঁকি দেননি কখনও, কর্মজীবনে সামান্য দুর্ঘটনা ঘটেনি তাঁর চালিত ট্রেনে।” অন্য মৃত কর্মী উচিৎ মণ্ডল শরীর খারাপ নিয়ে মে মাসে ভাগলপুরের বাড়ি ফেরার সময় ব্যান্ডেলে অসুস্থ হয়ে পড়লে তাঁকে চুঁচুড়া হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পর মৃত বলে ঘোষণা করেন ডাক্তাররা। আরটিপিসিআর টেস্ট না হলেও কোভিড সন্দেহ করা হয়েছিল। রেলের তরফে জানানো হয়েছে, উচিৎ মণ্ডল জেনারেল অ্যাসিসট্যান্টের কর্মজীবনে ছুটি নেননি। সকাল ন’টা থেকে সন্ধে সাতটা পর্যন্ত কর্মস্থল থেকে সরতেন না। ডিআরএমের কথায়, “কর্মজীবনে কখনও ফাঁকিবাজি করেননি। কাজের দক্ষতাই তাঁকে এক অন্য পরিচয় দিয়েছিল। তাই এই সম্মান প্রদান।” রেলে সম্ভবত এই প্রথম মৃত কর্মীদের সম্মান দেওয়া হল কোভিড পরিস্থিতির জন্য।
বিনোদ প্রাসাদের হয়ে এদিন সম্মান গ্রহণ করেন তাঁর ছেলে নিখিল কুমার ও উচিৎ মণ্ডলের হয়ে পুরস্কার নেন ছেলে সৌরভ। বাবার কর্মদক্ষতার স্বীকৃতি এভাবে নিতে হবে তাঁরা ভাবেননি। তবে কাজের প্রতি সম্মান ও দক্ষতা দেখানোর প্রচেষ্টা করবে বলে দু’জনই এদিন জানান। কোভিডে বহু রেলকর্মীর মৃত্যু হয়েছে, তাঁদের প্রতিও সম্মান জানানো হয় এদিন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.