ক্ষীরোদ ভট্টাচার্য: প্রতিমুহূর্তে শেষ দিনের অপেক্ষা। চার দেওয়ালের কুঠুরিতে দিন চলে গিয়ে কখন রাত আসে, ওরা বলতেও পারে না। আইনের চোখে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত এমন ৩০ জন কয়েদিও করোনা ভ্যাকসিন পাওয়ার অধিকারী। রাজ্যের সংশোধনাগারের শীর্ষকর্তারা অন্তত এমনটাই মনে করছেন। একই বক্তব্য সমাজকর্মীদেরও।
আইন বলছে, রাষ্ট্র যতক্ষণ না মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করছে, ততক্ষণ আইনমাফিক সব অধিকার পাবে একজন ফাঁসির আসামী। যাবজ্জীবন কারাবাসের কয়েদির ক্ষেত্রেও একই নিয়ম প্রযোজ্য। ফলে করোনা প্রতিষেধক পেতেও তাদের আইনত কোনও বাধা নেই। রাজ্যের কারামন্ত্রী উজ্জ্বল বিশ্বাস বলেন, “এখন কারারক্ষীদের করোনা ভ্যাকসিন দেওয়া হচ্ছে। ফাঁসির আসামীদের টিকা দেওয়া যেতেই পারে। কোনও সমস্যা নেই।”
সংশোধনাগার দপ্তরের এক শীর্ষকর্তার কথায়, “নিয়ম অনুযায়ী ফাঁসির আসামিরাও ভ্যাকসিন পেতে পারে। তবে কবে দেওয়া হবে, এখনও ষ্পষ্ট নয়। কিছু সময় অপেক্ষা করতে হবে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অনুমতি লাগবে।” একই বক্তব্য রাজ্যের কারা অধিকর্তা পীযূষ পাণ্ডেরও। পশ্চিমবঙ্গে মৃত্যুদণ্ডাজ্ঞাপ্রাপ্ত কয়েদিদের মধ্যে সবচেয়ে হাই প্রোফাইল আফতাব আনসারি। প্রেসিডেন্সি সংশোধনাগারে কড়া নিরাপত্তার ঘেরাটোপে বন্দি আফতাবের ফাঁসির হুকুম হয়েছে আমেরিকান সেন্টারে হামলা-সহ রাষ্ট্রদ্রোহিতার দায়ে। মাঝেমধ্যে তার বায়না সামলাতে কারাকর্তাদের হিমশিম খেতে হয়। এর বাইরে রাজ্যের বিভিন্ন সংশোধনাগারে আরও ২৯ জন কয়েদি রয়েছে। এদের মধ্যে কয়েকজন রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করেছে। এদের সবাই তা হলে করোনা ভ্যাকসিন পেতে পারে?
সমাজকর্মী সুজাত ভদ্রের জবাব, “ফাঁসির আসামীরও করোনা ভ্যাকসিন পাওয়ার অধিকার আছে। কারণ, প্রাণভিক্ষার আবেদন যতক্ষণ খারিজ না হচ্ছে, ততক্ষণ সে সব সুযোগ পাওয়ার অধিকারী।” সুজাত ভদ্রের কথায়, “নিম্ন আদালত ফাঁসির আদেশ দেওয়ার পর ওই বন্দি স্বাভাবিক নিয়মেই উচ্চ আদালতে যাবে। বেশ কিছু সময় ধরে বিচারপ্রক্রিয়া চলবে। এই সময়ে ওই কয়েদি জেলে অন্য বন্দিদের সঙ্গেই থাকবে। ফলে করোনার মতো সংক্রামক রোগের শিকার সহজেই হতে পারে। আবার মৃত্যুদণ্ডও খারিজ হতে পারে। কম সাজা হতে পারে।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.