স্টাফ রিপোর্টার: হাসপাতালের বেড থেকে পড়ে মৃত্যু হল তেরো বছরের এক কিশোরীর। মর্মান্তিক এই ঘটনা নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজের। সোদপুরের (Sodepur) মহিষপোতার বাসিন্দা ওই কিশোরী ফাল্গুনী দেবনাথ (১৩) ব্লাড ক্যানসারে আক্রান্ত ছিল। সোমবার নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজে ( Nil Ratan Sircar Medical College and Hospital) ভরতি করা হয় সপ্তম শ্রেণির পড়ুয়া ওই কিশোরীকে। ফাল্গুনীর মা ওয়ার্ডে মেয়ের সঙ্গেই ছিলেন।
মঙ্গলবার সকাল সাতটা নাগাদ মা বাথরুমে যান। সেখান থেকেই মেয়ের চিৎকার শুনতে পান। দৌড়ে এসে দেখেন মেয়ে বেড থেকে মেঝেতে পড়ে গিয়েছে। অভিযোগ, এরপর মেয়েকে কোলে নিয়েই বসেছিলেন মা। সময় পেরিয়ে যায়। শত ডাকাডাকিতেও আসেননি একজন চিকিৎসক। টানা চার ঘণ্টা পর মায়ের কোলেই মৃত্যু হয় ওই কিশোরীর। সোদপুরের মহিষপোতার বাসিন্দা ওই কিশোরীর মৃত্যুতে হাসপাতালের দিকেই অভিযোগের আঙুল তুলেছে ফাল্গুনীর পরিবার। কীভাবে চিকিৎসাধীন একটি মেয়ে বেড থেকে পড়ে গেল, কেন সে সময় আশপাশে কোনও নার্স ছিলেন না, সে নিয়েই উঠছে প্রশ্ন।
কিশোরীর বাবার অভিযোগ, “আমার মেয়েটাকে ওরা চিকিৎসা না দিয়েই মেরে ফেলল। মেয়ে পড়ে যাওয়ার পর আমি দৌড়ে ডাক্তারবাবুকে ডাকতে যাই। উনি জানান রাউন্ডে আছি, পরে আসছি। কিন্তু তিন ঘণ্টা মেয়েটা পড়ে থাকলেও কেউ আসেনি।” নীলরতন মেডিক্যাল কলেজের সুপার ডা. করবী বড়াল জানিয়েছেন, মৃতের পরিবার লিখিত অভিযোগ করলে নিশ্চয়ই আমরা বিষয়টি খতিয়ে দেখব। যদিও চিকিৎসায় গাফিলতির সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ফাল্গুনীর ওয়ার্ডের চিকিৎসক। তাঁদের পাল্টা দাবি, রক্তের ক্যানসারে ভুগছিল মেয়েটি। হাসপাতালে ভরতি করার সময় থেকেই সে সংকটজনক ছিল। সোমবারই পরিবারকে বলা হয়েছিল দুই ইউনিট রক্ত লাগবে। কিন্তু তাঁরা সে রক্ত জোগাড় করেননি। মঙ্গলবার ফাল্গুনী বেড থেকে পড়ে যাওয়ার পর লগবুকে সিটি স্ক্যানের উল্লেখ করে দেওয়া হয়। মাথার কোথায় চোট লেগেছে তা সিটি স্ক্যান না করলে জানা অসম্ভব। ওয়ার্ডের দায়িত্বে থাকা চিকিৎসকের দাবি, ফাল্গুনীকে কোলে নিয়েই বসেছিলেন মা। সিটি স্ক্যান করাতেও যাননি। প্রশ্ন উঠছে, অভিভাবকরা না গেলেও কেন গুরুত্ব বুঝে কিশোরীকে নিয়ে গেলেন না নার্সরা। ফাল্গুনীর বাবার কথায়, হাসপাতালের অপদার্থতার জন্য অকালে আমার মেয়েটাকে চলে যেতে হল।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.