গৌতম ব্রহ্ম: বাজি বিক্রির টাকায় ঘর সারাবেন বলে স্থির করেছিলেন বেহালার এক প্রতিবন্ধী ব্যবসায়ী। কিন্তু হাই কোর্টের নির্দেশের জেরে তা অসম্ভব। ফলে বাড়ি মেরামতি কীভাবে হবে ভেবে পাচ্ছিলেন না তিনি। পাশে দাঁড়াল বেহালা এসবি পার্ক পুজো কমিটি। পাশাপাশি বাজির বিরুদ্ধে সচেতনতা মূলক বার্তাও দিচ্ছে ওই ক্লাব।
বেহালার (Behala) বাসিন্দা প্রতিবন্ধী অশোক। এলাকায় পান, বিড়ি, সিগারেটের দোকান রয়েছে তাঁর। তা দিয়ে যা আয় হয় তাতেই চলে সংসার। চলতি বছরে আমফানে (Amphan) ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তাঁর ঘর। উড়ে গিয়েছে ছাউনি। কিন্তু ওই সামান্য উপার্জনে সংসার চালিয়ে ঘর মেরামত করতে পারেননি তিনি। ভেবেছিলেন কালীপুজোর সময় বেহালা ব্লাইন্ড স্কুলের মাঠের বাজি মেলায় পসরা সাজিয়ে বসবেন। সেখান থেকে লাভের অংক যা মিলবে তা দিয়েই ফের ছাউনি তৈরি করবেন। কিন্তু পরিকল্পনাই সার! কারণ, চলতি বছরে বাজি বিক্রি সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে কলকাতা হাই কোর্ট। ফলে অশোক ভেবেছিলেন তাঁর ঘর মেরামত আর হল না। বিষয়টি জানার পরই যুবকের পাশে দাঁড়িয়ে তাঁর ঘর মেরামতের দায়িত্ব নিয়েছে বেহালা এসবি পার্ক।
জানা গিয়েছে, ওই ক্লাবের তরফে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে যে, কালীপুজোর বাজেট কাটছাঁট করে তা দিয়ে তাঁরাই মেরামত করে দেবে অশোকের বাসস্থান। পুজো উদ্যোক্তাদের এই সিদ্ধান্তে স্বাভাবিকভাবেই আপ্লুত ওই যুবক। তবে শুধু অশোকের পাশে দাঁড়িয়েছে এমনটাই নয়, বাজির বিরুদ্ধেও প্রচার চালাচ্ছে বেহালার এই ক্লাব। সচেতনতার প্রচারে ব্যবসায়ীদের থেকে পুরনো বাজি সংগ্রহ করে তাতে জল ঢেলে নষ্ট করেছেন তাঁরা। বাজির আকারে তৈরি চড়কা, রকেট মিষ্টির মাধ্যমেও সচেতন করছেন মানুষকে। উল্লেখ্য, নুঙ্গি, মহেশতলা, চম্পাহাটি মিলিয়ে সরাসরি বাজি তৈরির সঙ্গে যুক্ত ৪০ হাজার মানুষ। তবে প্রত্যক্ষ-পরোক্ষভাবে এই শিল্পের ওপর নির্ভরশীল ৩০ লক্ষ জীবন। যাদের মধ্যে রয়েছেন রিকশাওয়ালা, মুটে, কুলি, এমনকি কিছু হকার ও চায়ের দোকানও। চলতি বছরে বাজি বিক্রি নিষিদ্ধ হওয়ায় স্বাভাবিকভাবেই সমস্যায় তাঁরা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.