অর্ণব আইচ: মোটা টাকার বিনিময়ে জয়েন্ট এন্ট্রান্স পরীক্ষা দিতে এসে পুলিশের জালে ভুয়ো পরীক্ষার্থী। আসল পরীক্ষার্থীকেও গ্রেপ্তার করেছে কাশীপুর থানার পুলিশ। ধৃতদের শিয়ালদহ আদালতে তোলা হলে তাদের জামিনের আবেদনের বিরোধিতা করেন সরকারি আইনজীবী অরূপ চক্রবর্তী। দু’জনকেই পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক।
পুলিশ জানিয়েছে, কাশীপুরের নর্থ কলকাতা পলিটেকনিক কলেজে জয়েন্ট এন্ট্রান্সের সিট পড়েছিল মহম্মদ সিবতাকুল্লার। পরীক্ষকের কাছে জমা পড়েছিল তাঁর অ্যাডমিট কার্ড। সেখানে পরীক্ষার্থীদের আধার কার্ডও দেখা হয়। সেই সময় একটি আধার কার্ড দেখে পরিদর্শকের সন্দেহ হয়। তখনই পরীক্ষার্থী মহম্মদ সিবতাকুল্লার আধার কার্ড ও অ্যাডমিট কার্ড মিলিয়ে দেখতে গিয়ে বুঝতে পারেন, দু’টির ছবি আলাদা। এরপর কাশীপুর থানায় খবর দেওয়া হয়। পুলিশ গিয়ে মহম্মদ সিবতাকুল্লাকে জেরা শুরু করতেই ভেঙে পড়ে সে। জানায়, সে মহম্মদ সিবতাকুল্লা নয়। তার নাম উজ্জ্বল সুমন। তার বাড়ি বিহারের পাটনায়। ঝাড়খণ্ডের সিংভূমের বাসিন্দা সিবতাকুল্লার হয়েই পরীক্ষায় বসতে এসেছে সে। সঙ্গে সঙ্গেই পুলিশ উজ্জ্বলকে গ্রেপ্তার করে। তাকে জেরা করে একটি হোটেল থেকে গ্রেপ্তার করা হয় আসল পরীক্ষার্থী সিবতাকুল্লাকে। জানা গিয়েছে, পুরো বিষয়টির পিছনেই রয়েছে আন্তঃরাজ্য জাল পরীক্ষার্থী চক্র।
জানা গিয়েছে চক্রটি এই রাজ্য, বিহার ও ঝাড়খণ্ড তিনটি রাজ্যেই সক্রিয়। পড়াশোনায় ভাল, এবং টাকার প্রয়োজন, এমন কিছু তরুণদের জোগাড় করে চক্রটি। তাঁদের মোটা টাকার লোভ দেখিয়ে জয়েন্ট এন্ট্রান্স-সহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষা দিতে রাজি করানো হয়। এরপর ভিনরাজ্য থেকে কলকাতার হোটেলে নিয়ে গিয়ে তাঁদের থাকা, খাওয়া থেকে শুরু করে যাতায়াত ও অন্যান্য খরচও জোগায় ওই চক্র। নকল পরীক্ষার্থী বাবদ আসল পরীক্ষার্থীর কাছ থেকে নেওয়া হয় প্রচুর টাকা। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, আরও কয়েকটি কেন্দ্রে ভুয়ো পরীক্ষার্থী পাঠিয়েছে এই চক্রটি। এর আগেও বিহারে ভুয়ো পরীক্ষার্থীদের একটি বড় চক্র ধরেছিলেন লালবাজারের গোয়েন্দারা। ধৃত দু’জনের মোবাইল থেকে কয়েকজনের ফোন নম্বরও উদ্ধার হয়েছিল। সেই সূত্র ধরে চক্রের মাথাদের হদিশ চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.