প্রতীকী চিত্র।
রমেন দাস: যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসের মধ্যেই ছাত্রকে হেনস্তার অভিযোগ। প্রথম বর্ষের ছাত্রকে র্যাগিং করেছেন দুই গবেষক, চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে এই অভিযোগেও। যদিও আদপে কী ঘটেছে, এই বিষয়ে এখনও মুখ খোলেননি অভিযুক্ত দুই গবেষক। এক অভিযুক্তের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা হলেও তাঁকে ফোনে পাওয়া যায়নি।
কী ঘটেছে? যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের (Jadavpur University) আন্তর্জাতিক সম্পর্ক (IR) বিভাগের প্রথম বর্ষের এক ছাত্রের অভিযোগ, বুধবার বিকেলের পরে ওই একই বিভাগের দুই গবেষক মিলে তাঁকে হেনস্তা করেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি বিল্ডিংয়ের সিঁড়িতে দাঁড়িয়ে ঝামেলা শুরু করেন তাঁরা। ওই পড়ুয়ার আরও অভিযোগ, তাঁকে চেপে ধরেন এক গবেষক। অন্যজন মারধর করেন বলে অভিযোগ। শুধু তাই নয়, অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ এবং হুমকি দেওয়ারও অভিযোগ করেছেন প্রথম বর্ষের ওই ছাত্র।
কিন্তু কেন এই পরিস্থিতি? আচমকা কেন এই অভিযোগ? অভিযোগকারী প্রথম বর্ষের ওই ছাত্র ‘সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল’কে জানান, ‘আমি নির্দিষ্ট একটি সম্প্রদায়ের ছাত্র। একটি বিশেষ বিষয়ে আন্দোলন চলছে ক্যাম্পাসে। সেই আন্দোলনে আমি অংশ নিয়েছি। এই কারণেই ওদের রাগ। কেন অংশ নিয়েছি তাই। আমাকে প্রথমে শাসানি দেওয়া হয়, তারপর চেপে ধরে রাখা হয়। এক গবেষক আমাকে চড় মারে। আমাকে হুমকি দেওয়া হয়। হস্টেলে গেলে মারধর করার কথা বলা হয়। আমি কেঁদে ফেলি। তারপরেও ছাড়ছিল না।’
যদিও এই ঘটনায় ‘আক্রান্ত’ ছাত্র ইতিমধ্যেই ইমেইলে অভিযোগ জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে। সেই অভিযোগপত্রে তিনি স্পষ্টত র্যাগিংয়ের অভিযোগ করেছেন। ছাত্রের দাবি, ‘চেপে ধরে রেখেছে। মারধর করেছে। শারীরিক হেনস্তা হয়েছে। এটা তো র্যাগিং। তাই সেই অভিযোগ করেছি। আমি এখনও হস্টেলে ফিরতে পারিনি।’ যদিও অভিযুক্ত এক গবেষকের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তাঁর মোবাইল নম্বরটি বন্ধ রয়েছে।
যদিও এই বিষয়ে আক্রান্ত ছাত্রের ‘পাশে’ থাকার আশ্বাস দিচ্ছেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের এসএফআই নেত্রী তমোলিনা ঘোষ। তিনি জানান, ‘আমাদের সঙ্গে ওই অভিযোগকারী ছাত্রের কথা হয়েছে। যাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে তাঁদের সঙ্গে এসএফআইয়ের (SFI) কোনও সম্পর্ক নেই। আমরাও কর্তৃপক্ষকে আবেদন করব, এই ঘটনার উপযুক্ত তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য।’ এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই ফের সরব হয়েছে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের তৃণমূল ছাত্র পরিষদের (TMCP) নেতারা। কিশলয় রায়ের দাবি, ‘এই ঘটনা যাঁরা ঘটিয়েছেন বলে অভিযোগ, এঁদের সঙ্গে বামপন্থী ছাত্র সংগঠনের যোগ রয়েছে। বারবার এই অন্যায় মেনে নেওয়া হবে না। কর্তৃপক্ষ উপযুক্ত তদন্ত করে সঠিক পদক্ষেপ নিক, এই দাবি জানাচ্ছি।’
মাত্র বছর দেড়েক আগে নদিয়ার এক ছাত্রের মৃত্যু। মেন হস্টেলের ঘটনার পরেও বারবার বিতর্কে জড়িয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস। একের পর এক ঘটনা, শিক্ষামন্ত্রীর গাড়ি থেকে শুরু করে ছাত্রের চোখে ক্ষত, দেওয়াল লিখন বিতর্ক। শিরোনামে এসেছে বিশ্ববিদ্যালয়। এবার ফের প্রথম বর্ষের ছাত্রের হেনস্তার অভিযোগ, শোরগোল ফেলেছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.