অর্ণব আইচ: করোনাকালে চলে গিয়েছিল চাকরি। এদিকে তাঁর কাঁধে স্ত্রী এবং সন্তানের ভরণপোষণের দায়িত্ব। অর্থ উপার্জনের পথ বন্ধ হওয়ায় মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন তিনি। তারই মাঝে বাড়ি থেকে উদ্ধার পাটুলির বাসিন্দা কর্মহীন ওই প্রৌঢ়র ঝুলন্ত দেহ। মানসিক অবসাদে আত্মহত্যা (Suicide) বলেই দাবি নিহতের স্ত্রীর। তবে তাঁর মৃত্যুর প্রকৃত কারণ খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
বছর সাইত্রিশের স্ত্রী এবং মাত্র এগারো বছর বয়সি ছেলেকে নিয়ে পাটুলিতে (Patuli) ভাড়াবাড়িতে থাকতেন অমিতজ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায়। মঙ্গলবার স্ত্রী এবং ছেলে বাড়িতে ছিল না তাঁর। একাই ছিলেন অমিতজ্যোতি। বাড়িমালিক লুনা সরকার লক্ষ্য করেন দীর্ঘক্ষণ ওই প্রৌঢ়র কোনও সাড়াশব্দ পাওয়া যাচ্ছে না। প্রতিবেশীরা ডাকাডাকি করলেও কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি তাঁর। বাধ্য হয়ে পাটুলি থানায় খবর দেন তিনি। পুলিশ খবর পাওয়ামাত্রই ঘটনাস্থলে পৌঁছয়।
বাড়িতে ঢুকে দেখেন সিলিং ফ্যান থেকে ঝুলছেন অমিতজ্যোতি। তাঁর গলায় লাগানো সাদা রংয়ের ওড়নার ফাঁস। দেহ উদ্ধার করে পুলিশ। বাঘাযতীন স্টেট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় তাঁকে। তবে চিকিৎসকরা জানান ততক্ষণে ওই ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। পুলিশ অস্বাভাবিক মৃত্যু মামলা রুজু করেছে।
পুলিশই খবর দেয় তাঁর স্ত্রীকে। পরিজনদের সঙ্গে নিয়ে বাড়িতে পৌঁছন অমিতজ্যোতির স্ত্রী এবং ছেলে। প্রাথমিকভাবে পুলিশ জানতে পেরেছে, একটি বেসরকারি সংস্থায় চাকরি করতেন অমিতজ্যোতি। তবে লকডাউনের (Lockdown) সময় তাঁর চাকরিতে কোপ পড়ে। কাজ হারান ওই প্রৌঢ়। এখনও পর্যন্ত চাকরি পাননি তিনি। সে কারণে মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন। অবসাদের জেরেই আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত বলেই মনে করা হচ্ছে। তবে ওই প্রৌঢ়র প্রতিবেশীদের দাবি, অমিতজ্যোতি যে বর্তমানে কর্মহীন তা তাঁরা জানতেন না। বাড়িতে নাকি প্রায়শই খাবার কিনে আনতেন অমিতজ্যোতি, আর্থিক অনটন থাকলে কীভাবে কেনা খাবার খেতেন তাঁরা, সে প্রশ্নও উঠছে। অস্বাভাবিক মৃত্যুর রহস্য উদঘাটনে পুলিশ মৃতের স্ত্রী এবং সন্তান-সহ অন্যান্য পরিজনদের সঙ্গে কথা বলছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.