অর্ণব আইচ ও নিরুফা খাতুন: তিলজলায় ৯ বছরের শিশুকন্যাকে ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় ১৮ মাসের মধ্যে দোষীকে ফাঁসির সাজা শোনাল আদালত। বৃহস্পতিবার আলিপুর পকসো আদালতের বিচারক দোষী অলোক কুমার সাউয়ের মৃত্যুদণ্ড ঘোষণা করেন। গত বছরের মার্চ মাসে এই ঘটনা ঘটেছিল। পুলিশ দ্রুত তদন্ত শেষে করে চার্জশিট দাখিল করে। শুরু হয় বিচার। বুধবার চূড়ান্ত রায় ঘোষণা হয়। এদিনও অবশ্য অলোক নিজেকে নির্দোষ প্রমাণের জন্য প্রাণপণ চেষ্টা করে। কিন্তু কোনও যুক্তি ধোপে টেকেনি। বিচারক ‘বিরলতম, নিষ্ঠুর হত্যাকাণ্ডে’র তকমা দিয়ে তাকেই দোষী সাব্যস্ত করেন। আর বৃহস্পতিবার তার ফাঁসির সাজা ঘোষণা করেন।
ঘটনা ২০২৩ সালের ২৬ মার্চের। এক রবিবার বিকেলে দেখা যায়, তিলজলা থানা এলাকার বাসিন্দা ৯ বছরের এক কন্যা নিখোঁজ। দীর্ঘক্ষণ খোঁজাখুঁজির পরও তাকে না পাওয়ায় থানায় অভিযোগ জানাতে যান পরিবারের সদস্যরা। অভিযোগ, পুলিশ অভিযোগ নিতে গড়িমসি করেছিল। তার জেরে স্থানীয় বাসিন্দারা ক্ষুব্ধ হয়ে বিক্ষোভ দেখান। পরে চাপে পড়ে পুলিশ তৎপরতার সঙ্গে পদক্ষেপ নেয়। এই সময় তিলজলা থানার ওসিকেও বদলি করা হয়েছিল।
ঘটনার তদন্ত শুরু করে এলাকার প্রতিটি বাড়িতে ওই নিখোঁজ শিশুর খোঁজে তল্লাশি চালায় পুলিশ। কিন্তু কোথাও পাওয়া যায়নি। শেষে অলোক কুমার সাউ নামে এক ব্যক্তির কথাবার্তায় সন্দেহ হয়। তার বাড়িতে চিরুণি তল্লাশি তরে পুলিশ। তাকে জিজ্ঞাসাবাদও করা হয়। কিন্তু কথায় প্রচুর অসংগতি মেলায় পুলিশ আরও খুঁটিনাটি তল্লাশি শুরু করে। রান্নাঘরের পিছনের স্ল্যাবে একটি বস্তার ভিতর থেকে শিশুকন্যাকে পাওয়া যায়। হাসপাতালে নিয়ে গেলে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা। তদন্তে ধীরে ধীরে স্পষ্ট হয়, অলোক কুমার সাউই ওই মেয়েটিকে বাড়িতে ডেকে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণের পর খুন করেছে। যদিও প্রথমদিকে এই ঘটনার সঙ্গে তন্ত্রসাধনার যোগ রয়েছে বলে ধারণা করা হয়েছিল। কিন্তু পুলিশ পরে সেসব উড়িয়ে জানায়, ধর্ষণই ছিল উদ্দেশ্য।
অলোক কুমার সাউকে মূল অভিযুক্ত করে তিনমাসের মধ্যে চার্জশিট পেশ করে পুলিশ। এই মামলায় মোট ৪৫ জন সাক্ষী ছিলেন। শুরু হয় বিচারপ্রক্রিয়া। শেষ পর্যন্ত বুধবার আলিপুরের পকসো আদালতের বিচারক দোষী সাব্যস্ত করেন এবং বৃহস্পতিবার ফাঁসির সাজা শোনান।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.