কৃষ্ণ কুমার দাস: খাস কলকাতায় (Kolkata) রাতে নয়, বরং প্রকাশ্য দিনের আলোয় সম্প্রতি হেনস্তার শিকার হয়েছিলেন সাংসদ তথা অভিনেত্রী মিমি চক্রবর্তী (MP, actor Mimi Chakraborty)। সোমবার জিম থেকে বাড়ি ফেরার সময় বালিগঞ্জ এলাকার এক মদ্যপ ট্যাক্সি ড্রাইভার সাংসদকে লক্ষ্য করে অশ্লীল ইঙ্গিত করে। শুধু তাই নয়, কটূক্তিও করে সাংসদকে। এরপরই পুলিশে অভিযোগ দায়ের হলে তড়িঘড়ি ব্যবস্থা নিয়ে ঘটনায় অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। সেই সূত্রেই শুক্রবার আলিপুর আদালতে গিয়ে গোপন জবানবন্দি দেন মিমি চক্রবর্তী।
উল্লেখ্য, সাংসদ-অভিনেত্রী হাজারো কাজে ব্যস্ত থাকলেও একজন দায়িত্বশীল নাগরিক হিসেবে কিন্তু নিজের কর্তব্য এড়িয়ে যাননি। বরং নিজে আলিপুর আদালতে গিয়ে গোপন জবানবন্দি দিয়ে এসেছেন। এদিন বিচারবিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে গোপন জবানবন্দি দিয়ে সাংসদ-অভিনেত্রী সাফ জানিয়ে দেন যে, “আমার কলকাতা প্রশাসন কিংবা রাজ্যের বদনাম হোক চাই না। আজ দোষী ছাড়া পেয়ে গেলে আমার শহর আর নিরাপদ থাকবে না। ভবিষ্যতে এরকম আরও অপ্রীতিকর পরিস্থিকির সম্মুখীন হতে পারেন মহিলারা। তাই এই মামলায় পুলিশি তদন্তে সহযোগিতা করতে আজ নিজে এসে জবানবন্দি করে গেলাম।”
অভিযুক্ত ট্যাক্সি চালক আপাতত গড়িয়াহাট থানায় পুলিশ হেফাজতে রয়েছে। আগামী ২০ তারিখ কোর্টে তোলা হবে তাকে। পুলিশ সূত্রে খবর, তদন্ত শেষে অভিযুক্তকে জেল হেফাজতে পাঠানোর জন্য আবেদন জানাবেন তদন্তকারী অফিসার।
প্রসঙ্গত গত সোমবার বেলা দেড়টা নাগাদ জিম করে বালিগঞ্জ ফাঁড়ি সংলগ্ন এলাকা দিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন মিমি, তখনই এক ট্যাক্সি অভিনেত্রীর গাড়ি লক্ষ্য করে ওভারটেক করার চেষ্টা করে। এবং তাঁকে দেখে কু-ইঙ্গিতও করে। এরপরই গাড়ি থামিয়ে কথা বলতে গেলে সাংসদ-অভিনেত্রীর ড্রাইভারের সঙ্গে অভব্য আচরণ করে ওই ব্যক্তি। বাক-বিতণ্ডার মাঝেই সাংসদ মিমি চক্রবর্তীকে উদ্দেশ্য করে কটূক্তি করাও শুরু করে ওই ট্যাক্সি ড্রাইভার। ঘটনার পরই গড়িয়াহাট পুলিশ স্টেশনে গিয়ে অভিযোগ দায়ের করেন মিমি চক্রবর্তী। ঘটনার জেরে সংবিধানের ৩৫৪, ৩৫৪এ, ৩৫৪ডি এবং ৫০৯ ধারায় অভিযোগ দায়ের হয় ওই ট্যাক্সি চালকের বিরুদ্ধে। সোমবার রাতেই ওই যুবককে গ্রেপ্তার করায় কলকাতা পুলিশকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন সাংসদ তথা অভিনেত্রী মিমি।
এদিনই সাংসদ মিমি জানিয়ে দিয়েছিলেন যে, “আজকে যদি আমি ওকে ছেড়ে দিতাম, তাহলে পরের দিন ও অন্য কোনও মেয়ের গায়ে হাত দেওয়ার সাহস পেত। নিরাপদে বাড়ি ফেরার জন্য একটা ট্যাক্সিতে মেয়েরা চালককে বিশ্বাস করেই উঠবে। কিন্তু কিছু মানুষের জন্য এই বিশ্বাসটা নষ্ট হোক, আমি মোটেই চাই না। তাই একজন কর্তব্যশীল নাগরিক হিসেবে এই ধরনের মানুষকে উচিত শিক্ষা দেব ভেবেছিলাম। ধন্যবাদ কলকাতা পুলিশকে যে তাঁরা অতি তৎপরতার সঙ্গে বিষয়টির পদক্ষেপ করেছেন।” আর আজ শুক্রবার সেই কর্তব্যপরায়ণ মানসিকতা থেকেই আলিপুর আদালতে গিয়ে নিজে বয়ান রেকর্ড করে এলেন মিমি চক্রবর্তী।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.