বুদ্ধদেব সেনগুপ্ত: শুভেন্দু অধিকারীর (Suvendu Adhikary) মন্ত্রিত্ব ছাড়ার মতো বঙ্গ রাজনীতিতে ধাক্কা দেওয়া একটা পর্ব। শুক্রবার দুপুরে এই ঘটনার পর নানা প্রতিক্রিয়া নানা মহলে। সমর্থন, বিরোধিতা, সমালোচনা – সবই চলছে জোরকদমে। তার মধ্যে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীর (Adhir Ranjan Chowdhury) প্রতিক্রিয়া বেশ তাৎপর্যপূর্ণ। সাপ আর সাপুড়ের সঙ্গে তিনি তুলনা করেছেন বিষয়টিকে। শুভেন্দু অধিকারীর পদত্যাগ নিয়ে তৃণমূলের সমালোচনা করে বাম পরিষদীয় দলনেতা সুজন চক্রবর্তীর মত, তাঁকে দলে টেনে বিজেপিও সুবিধা করতে পারবে না।
দীর্ঘদিনের জল্পনা সত্যি করে শুক্রবার বেলার দিকেই রাজ্যের সেচ, জলসম্পদ ও পরিবহণ মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী তাঁর ইস্তফাপত্র পাঠিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রীর সচিবালয়ে। পাশাপাশি তাঁকে এই দপ্তরগুলিতে কাজের সুযোগ করে দেওয়ার জন্য মুখ্যমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন শুভেন্দু। বিকেলের মধ্যে মুখ্যমন্ত্রী তাঁর পদত্যাগপত্র গ্রহণও করেছেন। একুশের নির্বাচনের আগে শাসকদলের কাছে এ এক বড় ধাক্কা, নিঃসন্দেহে।
এ বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানতে চাওয়া হলে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী বলেন, “তৃণমূলের অন্তর্জলি যাত্রা শুরু হল। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সাপুড়ের মতো বিজেপিকে বাংলায় ডেকে এনেছিলেন। ‘বিজেপি বহিরাগত’, এ কথা ওঁর মুখে মানায় না। ঠিক যেমন সাপুড়েকে সাপের ছোবলে মরতে হয়, তেমনই তৃণমূলের ললাটে লেখা রয়েছে।” বহরমপুরের সাংসদের আরও বক্তব্য, “শুভেন্দুকে তৃণমূল কখনও মর্যাদা দেয়নি। স্রেফ কাজ করিয়ে নিয়েছে। আমি নন্দীগ্রামে গিয়ে দেখেছি, জীবনের ঝুঁকি নিয়ে শুভেন্দু আন্দোলন করেছিলেন।” তিনি মনে করেন, শুভেন্দু অধিকারী না থাকলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মুখ্যমন্ত্রী হতে পারতেন না। এরপর অধীর চৌধুরী বলেন, “শুভেন্দু কোথায় যাবেন সেটা তাঁর রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত। কিন্তু তৃণমূল যে ধুলিসাৎ হয়ে যাবে সন্দেহ নেই। আর বাম-কংগ্রেসের এই জোট থাকবে এবং আরও মজবুত ও শক্তিশালী হবে।”
অধীর চৌধুরীর ঠিক এই কথার প্রতিধ্বনিই শোনা গেল রাজ্যের আরেক বিরোধী দলের নেতা তথা বাম পরিষদীয় দলনেতা সুজন চক্রবর্তীর (Sujan Chakraborty) বক্তব্যে। তিনি সাফ জানালেন, “এ তো হওয়ারই ছিল। বোঝাই যাচ্ছে তৃণমূল ক্রমশ কমজোরি হচ্ছে। তৃণমূল থেকে লোক ভাঙিয়ে নিয়ে গিয়ে বিজেপি যে খুব সুবিধা করতে পারবে, তেমনটা নয়। জনগণ সব বুঝছেন। বিজেপি-তৃণমূলের এই আঁতাঁতের মাঝে তাঁদের কাছে একমাত্র বিকল্প বামেরাই।” মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বিঁধে সুজন চক্রবর্তীর আরও কটাক্ষ, “ভাঙাগড়ার রাজনীতি এখানে উনিই এনেছিলেন। আগে তৃণমূল বাম, কংগ্রেসের মতো দল থেকে নেতা, কর্মীদের ভাঙাত। এখন নিজের ঘর ভাঙছে। এখন তিনি বুঝছেন ভাঙন কেমন। তবে এসব ভাঙাগড়ার খেলা বিজেপি আর তৃণমূলই খেলুক।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.