স্টাফ রিপোর্টার: মাস দেড়েক আগেই শিক্ষা দুর্নীতিতে যে নেতাকে বহিষ্কার করেছিল পার্টি, সেই বহিষ্কৃত নেতার নাম-সহ বিজ্ঞাপনই আবার ছাপা হয়েছে পার্টির মুখপত্রের প্রথম পাতায়। যা নিয়ে কলকাতা সিপিএমে (CPM) হুলস্থুল। অস্বস্তিতে পড়ে গিয়েছে আলিমুদ্দিনও।
শিক্ষা দুর্নীতিতে কলকাতার দুই নেতাকে গত জুন মাসের প্রথমে বহিষ্কার করে সিপিএম। কলেজের পরিচালন সমিতির মাথায় বসে আর্থিক তছরুপের অভিযোগ ওঠে টালিগঞ্জ ১ নম্বর এরিয়া কমিটির সম্পাদক গৌতম বন্দ্যোপাধ্যায় এবং বেহালা পূর্বের পার্টি সদস্য তথা সাক্ষরতা আন্দোলনের নেতা পার্থ দাসের বিরুদ্ধে। দু’জনকেই ৬ মাসের জন্য সাসপেন্ড করেছিল আলিমুদ্দিন। তারপর বহিষ্কার করা হয় তাঁদের। টালিগঞ্জে ক্যালকাটা ইনস্টিটিউট অফ ইঞ্জিনিয়ারিং ম্যানেজমেন্ট কলেজের পরিচালন সমিতির মাথায় বসেই গৌতম ও পার্থ আর্থিক অনিয়ম করেছেন বলে অভিযোগ ওঠে। এরপরই বিতর্ক দানা বাধে।
বহিষ্কৃত ওই সিপিএম নেতা গৌতম বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম-সহ ক্যালকাটা ইনস্টিটিউট অফ ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট-এর একটি বিজ্ঞাপন সিপিএমের মুখপত্র ‘গণশক্তি’-তে গত রবিবার প্রথম ও সোমবার পিছনের পাতায় প্রকাশিত হয়েছে। পার্টির নির্দেশ সত্ত্বেও কলেজ ও দলের পদও ছাড়েননি। তাঁদের বিরুদ্ধে টাকা নয়ছয়ের ব্যাপারে অভিযোগ জমা পড়েছিল সিপিএম রাজ্য কমিটিতে। তদন্ত করে দেখার জন্য তদন্ত কমিশনও গঠন করে পার্টি। সংখ্যাগরিষ্ঠের সম্মতিতে কলকাতা জেলা পার্টির সম্পাদমণ্ডলীতে দুই নেতাকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত পাস হয় গত জুন মাসের প্রথম দিকে। এই বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত অনুমোদন করে রাজ্য কমিটিও।
গত ১৭ আগস্ট বিজয়গড়ে একটি সাধারণ সভা করে কলকাতা জেলা সিপিএমের সম্পাদক কল্লোল মজুমদার সেখানকার পার্টি সদস্যদের জানিয়ে দিয়েছিলেন গৌতম বন্দ্যোপাধ্যায় ও পার্থ দাসকে বহিষ্কার করার বিষয়টি। কিন্তু তারপরই বিতর্ক শুরু হয়েছে। বহিষ্কৃত নেতা গৌতম বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম-সহ ওই ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের বিজ্ঞাপন সিপিএমের মুখপত্রে পরপর দু’দিন প্রকাশ হওয়ায় চাঞ্চল্য পড়ে গিয়েছে পার্টির মধ্যে। বিষয়টি কলকাতা জেলা সিপিএমের তরফে আলিমুদ্দিনের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়েছে। বিজ্ঞাপনে কলেজের সম্পাদক পদে গৌতমবাবুর নাম রয়েছে। এটা কি ভুলবশত, নাকি সব জেনেশুনেই বিজ্ঞাপন নেওয়া হয়েছে, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
যেহেতু পার্টির মুখপত্রে এই বিজ্ঞাপন তাই তা নিয়ে স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠেছে পার্টির মধ্যে। পার্টির একাংশের এও প্রশ্ন, ওই নেতাকে বহিষ্কার করাটা শুধুই কি আইওয়াশ? পার্টির কি কেউ জানতেন না যে, বহিষ্কৃত ওই নেতা বেসরকারি কলেজের সম্পাদক পদে রয়েছেন? এই বিষয়ে সিপিএম নেতৃত্ব মুখ খুলতে চাননি। তাঁরা যে যথেষ্ট অস্বস্তিতে, তা স্পষ্ট।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.