নব্যেন্দু হাজরা: অবশেষে শনিবার থেকে বউবাজারের সুড়ঙ্গ তৈরির কাজ শুরু হতে চলেছে। তবে আগের থেকে অর্ধেক গতিতে কাজ হবে। শিয়ালদহমুখী সুড়ঙ্গ খোঁড়ার কাজে বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করা হচ্ছে। শিয়ালদহ পৌঁছতে এই মেশিনের সময় লাগবে পাঁচ মাস। কলকাতা মেট্রো রেলওয়ে কর্পোরশেন লিমিটেড বা কেএমআরসিএলের তরফে সাংবাদিক সম্মেলন করে শুক্রবার সেকথা জানিয়ে দেওয়া হয়।
সংস্থার পক্ষ থেকে সুড়ঙ্গ বিশেষজ্ঞ জন ইন্ডিকট জানান, “বউবাজারের যেখান দিয়ে যাওয়ার কথা ছিল সেই একই জায়গা দিয়ে যাবে মেশিন। মেশিন প্রস্তুতকারী সংস্থার প্রতিনিধিরা থাকবেন টানেল তৈরির সময়।উর্বি নামে যে টিবিএমটি সুড়ঙ্গ খুঁড়বে তাতে থাকছে বিশেষ সেন্সর। প্রাথমিক ভাবে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে আপাতত রোজ মাত্র ১ মিটার থেকে ৩ মিটার করে টানেল বোরিং করা হবে। তারপর এই অংশ পরীক্ষা করবে কেএমআরসিএলের বিশেষজ্ঞ কমিটি। তাছাড়া বিপর্যয় মোকাবিলার জন্য সবরকম প্রস্তুতিও রাখা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, ৩১ আগষ্ট বউবাজারে মেট্রোর সুড়ঙ্গ খনন করতে গিয়ে বিভিন্ন বাড়িতে ফাটল ধরা পড়ে। তার পরেই আটকে যায় কাজ। ফের সেই কাজ শুরু হচ্ছে আজ থেকে। তবে কাজের গতি অনেক কম। এই অবস্থা পরীক্ষা করা হবে প্রায় ৭ দিন। তারপর সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে প্রতিদিন কতটা করে সুড়ঙ্গ খনন করা হবে। আপাতত ঊর্বি, এই টানেল বোরিং মেশিনের অবস্থান হচ্ছে শিয়ালদহ থেকে ১ কিলোমিটার দূরে। এই অংশে মাটির উপরে অবশ্য প্রায় ষাট শতাংশ রাস্তা। বাকি ৪০ শতাংশ রয়েছে বাড়ি।
চান্ডি, যে টানেল দিয়ে সুড়ঙ্গ খনন করার সময়ে সমস্যা হয় তাতে বউবাজারের একাধিক বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। পরিসংখ্যান বলছে, ৭৩টি বাড়ির বাসিন্দাদের সরানো হয়েছিল। তারমধ্যে ২৩টি বাড়ির কাঠামো বদল করা হয়। ২১টি বাড়ি ভেঙে ফেলা হয়েছে। ২টি বাড়ি ভাঙার কাজ চলছে। ২৭টি বাড়িতে লোক ফেরত এসেছে। আবারও যাতে নতুন করে সমস্যা তৈরি না হয়, তাই ভরসা রাখা হচ্ছে বিশেষজ্ঞদের ওপর। জন এন্ডিকট, ঘাই ক্রিস্টোফার ব্রিজ ও কে পিছুমণির সহায়তায় গোটা বিষয়টি দেখা হবে। জানানো হয়েছে, মাটির গুণমানের কারণে কোনও বিপর্যয়ের ঘটনা ঘটেনি বউবাজারে।ঊর্বি শিয়ালদহ যাওয়ার পর সেটিকে তুলে ফের বউবাজার পর্যন্ত আসতে লাগবে তিন মাস। অন্যদিকে চন্ডি নামে যে টিবিএমটি রয়েছে, সেটিকে তুলে ফেলা হবে। ৫০/৫০ মিটার গর্ত করে তা তোলা হবে। মেট্রোসূত্রে খবর, এই মুহূর্তে ঊর্বি অবস্থান করছে নির্মলচন্দ্র স্ট্রিট এবং দূর্গাপিতুরি লেনের কাছে।
অন্যদিকে, নতুন করে সুড়ঙ্গ তৈরির কাজ শুরু হতেই বউবাজারের কিছু বাড়ির বাসিন্দাদের সরানোর কাজ শুরু হয়েছে। আপাতত চারটি পরিবারকে সরানো হয়েছে। তার মধ্যেই দুটি পরিবারকে গত ছয় মাসের মধ্যে দুবার ঘর ছেড়ে হোটেলে এসে থাকতে হল। কাজ শুরুর ব্যপারে সাহায্য চেয়ে ইতিমধ্যেই রাজ্য সরকার ও কলকাতা পুরসভাকে চিঠি দিয়েছে কে এম আর সি এল।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.