সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ফের আতঙ্ক বউবাজারে। সোমবার সকালেও ভেঙে পড়ল একাধিক বাড়ি। গতকাল বউবাজার এলাকার দুর্গা প্রিটোরিয়া লেন ও স্যাঁকরা পাড়ার একাধিক বাড়িতে ধরা পড়েছিল ফাটল। ভেঙে পড়েছিল ৪টি বাড়ি। সোমবার হিদারাম ব্যানার্জি লেনেও একই ঘটনা চোখে পড়ল। ফের ধস নামল কয়েকটি বাড়িতে। ফলে মেট্রো কর্তৃপক্ষের আশ্বাসের পরেও কাটল না আতঙ্কের রেশ। তবে সোমবার পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে দিল্লি থেকে আসার কথা রয়েছে বিশেষজ্ঞ দলের। এছাড়া জার্মানি থেকেও বিশেষজ্ঞদের ডাকা হয়েছে। তাঁরা এসে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে রিপোর্ট দেবেন। পরপর দু’দিন এমন ঘটনার পর বউবাজারের পরিস্থিতি সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে মঙ্গলবার মেট্রো কর্তৃপক্ষের সঙ্গে নবান্নে বৈঠকে বসবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, শনিবার সন্ধ্যায় প্রথমে ভূমিকম্পের মতো এলাকার বেশ কয়েকটি বাড়ি কাঁপতে শুরু করে। বাড়ির গায়ে ও মেঝেতে ফাটল দেখা যায়৷ আতঙ্কে রাস্তায় বেরিয়ে আসেন বাড়ির বাসিন্দারা৷ তাঁরা দেখেন, রাস্তাতেও ফাটল ধরেছে৷ এরই মধ্যে এলাকার একটি তিনতলা বাড়ির দেওয়াল থেকে একটি বড় চাঙড় খসে পড়ে৷ রবিবার বেলার দিকে দুর্গা প্রিটোরিয়া স্ট্রিটের ২টি বাড়ি ভেঙে পড়ে। সন্ধের পর আরও দুটি বাড়ি ভাঙার খবর মেলে। ঘটনার পরই তৎপর হয়ে ওঠেন কলকাতা পুরসভার মেয়র। খবর পেয়ে তিনি মেট্রো কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বৈঠকে বসেন। পরিস্থিতি দেখে মেট্রো কর্তারা মেনে নেন যে টানেল বোরিংয়ের কাজের জন্যেই বাড়ি ভেঙে পড়েছে।
কিন্তু টানেল তৈরির আগে তো পরীক্ষানিরীক্ষা করেছিল মেট্রো রেল কর্তৃপক্ষ। তা সত্ত্বেও কেন এমন ঘটনা ঘটল, তা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন। যদিও এনিয়ে কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, যে গভীরতায় টানেল খোঁড়া হয়েছিল, সেখানে জলস্তর ছিল না। ছিল ‘অ্যাকুইফার’। অর্থাৎ এখানে মাটি ও জল একসঙ্গে মিশে ছিল। জলের তোড়ে মাটি আলগা হয়ে এই বিপত্তি ঘটেছে। কিন্তু পরীক্ষার পরও কেন এই সমস্যা ধরা পড়েনি, তা তাঁরা খতিয়ে দেখছেন। দিল্লি থেকে ডাকা হয়েছে জিওফিজিওলজিস্টদের। তাঁরা এসে পরীক্ষা করে রিপোর্ট দেবেন। ইতিমধ্যেই ইঞ্জিনিয়ররা টানেল বন্ধ করার কাজ শুরু করেছেন। টানেলের দুই প্রান্ত সিল করে দেওয়া হচ্ছে।
যদিও এক ইঞ্জিনিয়রের ব্যাখ্যা, ‘ঘটনার দায় একা কারও উপর চাপানো যাবে না। কলকাতা শহরের মাটির চরিত্র এমনই, যেখানে সুড়ঙ্গ খোঁড়ার সময়েই সতর্ক না হলে এধরনের বিপদ ঘটতেই পারে। তবে ফাটল দেখে মনে হচ্ছে, এটা স্থায়ী। আর বাড়বে না। বৃষ্টি না হলে বড় বিপদের আশঙ্কা নেই।’ তবে এই সমস্যার চটজলদি কোনও সমাধান আছে বলেও মনে করছেন না বিশেষজ্ঞ ইঞ্জিনিয়াররা। ফলে এই মুহূর্তে বউবাজারের ঘটনা পুরসভার মূল মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.