অর্ণব আইচ: ক্রিকেট বেটিংয়েও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা! বোলার বল ধরলেই আর্টিফিশিয়াল ইনটেলিজেন্স (AI) জানিয়ে দিচ্ছে সেই বলের ভবিষ্যৎ। আবার ব্যাটসম্যান চার বা ছয় হাঁকাতে পারবেন কি না, তা-ও আগাম জানানোর চেষ্টা করছে। আইপিএল ম্যাচ শুরু হওয়ার পর এই ধরনেরই আধুনিক অ্যাপ ব্যবহার করতে শুরু করেছে কলকাতার ক্রিকেট জুয়াড়িরা। সম্প্রতি এই চাঞ্চল্যকর তথ্য এসেছে লালবাজারের গোয়েন্দাদের হাতে।
পুলিশ জানিয়েছে, সম্প্রতি মুম্বই ইন্ডিয়ানস ও পাঞ্জাব কিংসের মধ্যে আইপিএল ম্যাচ চলছিল। লালবাজারের গোয়েন্দারা খবর পান যে, মধ্য কলকাতার হেয়ার স্ট্রিট অঞ্চলে চলছে ক্রিকেট বেটিং। একটি ঘরে পুলিশ হানা দিয়ে তিনজন ক্রিকেট জুয়াড়িকে গ্রেপ্তার করে। ধৃত তিনজন গোয়েন্দা পুলিশকে জানায়, একটি বিশেষ অ্যাপের মাধ্যমে তারা ক্রিকেট বেটিং করে। তাদের সঙ্গে যুক্ত রয়েছে, এমন কয়েকজনের নামও করে তারা। সেই সূত্র ধরেই গ্রেপ্তার করা হয় পীযূষ বাগেলা নামে তাদেরই সঙ্গী আরও এক জুয়াড়িকে। ধৃতদের জেরা করেই এই নতুন অ্যাপটির সন্ধান পান লালবাজারের গোয়েন্দা আধিকারিকরা।
পুলিশের সূত্র জানিয়েছে, এখন ক্রিকেট জুয়াড়িরা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা নির্ভর অ্যাপই ব্যবহার করতে শুরু করেছে। এই ক্রিকেট বেটিংয়ের অ্যাপে আইপিএল-এর যে ম্যাচটি খেলা হচ্ছে, সেটিকে ভিত্তি করেই পয়েন্ট ওঠানামা করতে থাকে। প্রত্যেক ক্রিকেটারের বোলিং ও ব্যাটিংয়ের শুরু থেকেই কাজ করতে শুরু করে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা। সূত্রের খবর, প্রত্যেক ক্রিকেটারের বোলিং ও ব্যাটিংয়ের পদ্ধতিকেই অনুসরণ করে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই। তাঁদের খেলা সম্পর্কে তথ্য দেওয়া থাকে অ্যাপে। কোনও ক্রিকেটার বল করতে শুরু করা বা হাত ওঠানোর সময়ই এআই বোঝার চেষ্টা করে সেই বলটি কোনদিকে যেতে পারে বা তা কারও উইকেটে আঘাত হানতে পারে কি না।
একইভাবে ব্যাটসম্যানের ক্ষেত্রেও বল আসার সঙ্গে সঙ্গে তিনি কীভাবে তার মুখোমুখি হতে পারেন, তা বোঝার চেষ্টা করে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাই। সেইমতো ব্যাটসম্যানের দিকে বল আসার আগেই কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ওই অ্যাপ জানিয়ে দেয় কোনদিকে ব্যাট হাঁকাতে পারেন তিনি। তিনি কি এক বা দুই রান নেওয়ার চেষ্টা করবেন, না কি চার বা ৬ রান পেয়ে যেতে পারেন, তা-ও জানিয়ে দেয় অ্যাপ। শুধু জুয়াড়িকে মোবাইলের ক্রিনের দিকে তাকিয়ে থাকতে হয়। সম্ভাবনার বিষয়টি স্ক্রিনে ফুটে উঠলেই জুয়াড়িরা তার উপর জুয়া খেলে। ওই বোলিং বা ব্যাটিংয়ের উপর অ্যাপের মাধ্যমেই জুয়া খেলা হয়। যদিও পুলিশের মতে, সবসময় যে অ্যাপের সম্ভাবনা মিলে যায়, তা নয়। কিন্তু আংশিকভাবে যেহেতু মিলে যায়, তাই জুয়াড়িরা অ্যাপের উপরই নির্ভর করে। টাকার লেনদেনও হয় অনলাইনে। এই ব্যাপারে আরও তথ্য পেতে তদন্ত চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.