সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: এনআরএস হাসপাতালে ১৬টি কুকুরছানা খুনের ঘটনায় অভিযুক্ত ৫জন ছাত্রীকে আপাতত সাসপেন্ড করা হল। মূল অভিযুক্ত নার্সিংয়ের দ্বিতীয় বর্ষের দুই ছাত্রী মৌটুসি মণ্ডল এবং সোমা বর্মন ক্লাস করতে পারবেন না। হস্টেলে থাকারও অনুমতি নেই। তদন্ত কমিটির সঙ্গে বৈঠকের পর এমনই সিদ্ধান্ত নিল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। একই শাস্তি অভিযুক্ত বাকি ৩ ছাত্রীরও। তৃতীয় বর্ষের ৩ ছাত্রী – দীপা ঘোষ, প্রিয়াঙ্কা দাস, সবিতা দাসও আপাতত ক্লাসে যোগ দিতে পারবেন না।হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের তৈরি তদন্ত কমিটি তাদের কাজ শেষ করে এদিন রিপোর্ট জমা দিয়েছে কমিটির চেয়ারম্যান তথা হাসপাতালের ডেপুটি সুপার দ্বৈপায়ন বিশ্বাসের কাছে। সূত্রের খবর, সেই রিপোর্টেই ৫ ছাত্রীকে মূল অভিযুক্ত হিসেবে দেখানো হয়েছে। তদন্ত কমিটির রিপোর্টের ভিত্তিতে সবাইকে বহিষ্কার করা হতে পারে বলে মনে করা হয়েছিল। তবে তদন্ত কমিটির সঙ্গে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বৈঠক থেকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, প্রত্যেককেই সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হল।
[কুকুর খুনের প্রতিবাদে অভিনেত্রী মিমির পোস্ট ঘিরে সোশ্যাল মিডিয়ায় ঝড়]
অন্যদিকে সূত্রের খবর, কুকুরদের নির্বীজকরণের জন্য কলকাতা পুরসভাকে চিঠি পাঠিয়েছে এনআরএস কর্তৃপক্ষ। পুরসভার এই কর্মসূচির আওতায় যাতে হাসপাতালের আশেপাশে ঘুরে বেড়ানো কুকুরদেরও আনা হয়, সেই আবেদন রয়েছে চিঠিতে। এই চিঠি পাওয়ার পর কলকাতা পুরসভার আধিকারিকদের নিয়ে বৈঠক করেন ডেপুটি মেয়র অতীন ঘোষ। জানানো হয়, সমস্ত সরকারি ক্যাম্পাসে কুকুরদের নির্বীজকরণের দায়িত্ব নিচ্ছে পুরসভা। সেইমতো সংশ্লিষ্ট জায়গাগুলিতে নোটিস পাঠিয়ে জানানো হয়েছে। ক্যাম্পাসের ভেতরেই ক্যাম্প তৈরি করে চলবে কর্মসূচি। যেখানে ক্যাম্প করার মতো জায়গা নেই, সেসব ক্ষেত্রে কুকুরদের পুরসভার ক্যাম্পে নিয়ে গিয়ে কাজ হবে।
[কুখ্যাত ডন রামুয়া হত্যার দু’দিনের মাথায় খুন প্রাক্তন শাগরেদ গুড্ডু]
গত রবিবার দুপুরে এনআরএস হাসপাতালের জঞ্জালস্তূপে বস্তাবন্দি অবস্থায় উদ্ধার হয় ১৭টি কুকুরছানা। একটিমাত্র জীবিত ছিল, বাকি ১৬টিকে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়। প্রাথমিকভাবে মনে করা হয়েছিল, খাবারে বিষক্রিয়ায় মারা গিয়েছে কুকুর শাবকরা। কিন্তু পরেরদিনই একটি ভিডিও ফুটেড প্রকাশ্যে আসায় ঘটনার মোড় ঘুরে যায়। ভিডিওতে দেখা গিয়েছে, নার্সিং হস্টেলের পেছনের একটি জায়গায় দুই ছাত্রী লাঠি দিয়ে বেধড়ক মারছেন কুকুরছানাদের। সোশ্যাল মিডিয়া ভিডিওটি ভাইরাল হওয়ার পর শোরগোল পড়ে যায়। পশুপ্রেমী একাধিক সংগঠন প্রতিবাদ, বিক্ষোভে নামেন। চাপে পড়ে ৩ সদস্যের তদন্ত কমিটি তৈরি করে এনআরএস কর্তৃপক্ষ। যার নেতৃত্বে ছিলেন হাসপাতালের ডেপুটি সুপার দ্বৈপায়ন বিশ্বাস। প্রায় দু’দিনের মাথায় তদন্ত শেষ করে রিপোর্ট দেওয়া হয়। সেই রিপোর্টেই দোষী সাব্যস্ত করা হয় মোট ৫ ছাত্রীকে। সকলের বিরুদ্ধে জামিনযোগ্য ধারায় মামলা দায়ের করে তদন্তে শুরু হলে, এদিনই অভিযুক্ত ২ নার্সিং পড়ুয়াকে জামিনে ছেড়ে দেওয়া হয়।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.