শুভঙ্কর বসু: সাধ করে ছেলের নাম রেখেছিলেন অধিনায়ক। স্বপ্ন দেখেছিলেন বিশ্বজয় করবে আত্মজ। কিন্তু হল ঠিক উলটো। বিয়ের পর অধিনায়কই হয়ে গেল ‘খলনায়ক’। জন্মদাতা পিতাকে বাড়ি ছাড়া করল। নিজের বানানো বাড়িতে ঢুকতে না পেরে পুলিশকে জানিয়ে ছিলেন। কাজ হয়নি। দক্ষিণ কলকাতার বাসিন্দা সেই হতভাগ্য পিতা, চিকিৎসক বিশ্বরণ চট্টোপাধ্যায়ের আপাতত ঠাঁই হয়েছে নার্সিংহোমে।
প্রতিকার চেয়ে তিনি কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ।
গোটা জীবন ডাক্তারি করে জমানো অর্থ দিয়ে গড়িয়াহাট এলাকায় একটি বাড়ি তৈরি করেছিলেন বিশ্বরণবাবু। স্ত্রী-ছেলেকে নিয়ে সুখের সংসার। উত্তরোত্তর বিশ্বরণবাবুর ডাক্তারির পসারও বাড়তে থাকে। এরপর ছোট একটি নার্সিংহোমও তৈরি করেন ডাক্তারবাবু। কিন্তু স্ত্রীর মৃত্যুর পর সব ওলটপালট হতে শুরু করে। আস্তে আস্তে শরীর ভাঙছিল। পায়ে সমস্যার জন্য ঠিকমতো হাঁটাচলা করতে পারছিলেন না। এমতাবস্থায় তিনি ছেলের বিয়ে দেন। গত বছরের জুন মাসে বেশ ধুমধাম করে অধিনায়কের বিয়ে হয়। কলকাতা হাই কোর্টে দাখিল করা আবেদনে বৃদ্ধ চিকিৎসক জানিয়েছেন, বিয়ের পর ছেলে বদলে যায়। তার আচরণ কেমন হয়ে ওঠে। শুরু হয় বাবার উপর মানসিক নির্যাতন। অভিযোগ, বৃদ্ধকে বেদম মারের হুমকি দেয় ছেলে। আবার কখনও হুমকি দিয়ে ব্ল্যাঙ্ক চেকে সই করিয়ে নিয়েছে বউমা। ক্রমেই মানসিক নির্যাতন বদলে যায় শারীরিক অত্যাচারে। অভিযোগ, গত নভেম্বরে বাড়িতে ঢুকতে গেলে তাঁকে ঘাড় ধাক্কা দিয়ে বাড়ি থেকে বের করে দেয় ছেলে ও বউমা।
ঘটনার পরই গড়িয়াহাট থানায় ছেলের নামে অভিযোগ করেন বিশ্বরণবাবু। অভিযোগ, ঘটনার কথা জানিয়ে লিখিত অভিযোগ করলেও কোনও ব্যবস্থা নেয়নি পুলিশ। বাড়ি ঢুকতে পারেননি বিশ্বরণবাবু। আপাতত নিজের নার্সিংহোমই তাঁর ঠিকানা। কোনও উপায় না দেখে অবশেষে হাই কোর্টের দিকে তাকিয়ে বছর পঁচাত্তরের এই বৃদ্ধ। আদালত সূত্রে খবর, বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তীর এজলাসে শীঘ্রই মামলার শুনানির সম্ভাবনা রয়েছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.