দীপঙ্কর মণ্ডল: মিল্লি আল আমিন কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ পদ থেকে সরে গেলেন অধ্যাপক বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়। বেশ কড়া ভাষায় তিনি পদত্যাগপত্র লিখেছেন। তা উচ্চশিক্ষা দপ্তরে পাঠিয়ে দিয়েছেন বৈশাখীদেবী।
পরিস্থিতি যে এমনটা হবে, তার আঁচ মিলেছিল বুধবারই। কলেজের দীর্ঘকালীন সমস্যা কাটাতে ওইদিন মিল্লি আল আমিন কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষা বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায় এবং পরিচালন সমিতির সদস্যদের বৈঠকে ডেকেছিলেন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। কিন্তু অভিযোগ, বৈঠকের শুরুতেই শিক্ষামন্ত্রী অধ্যক্ষার উদ্দেশে অবমাননাকর মন্তব্য করেন। তাঁকে করোনা ভাইরাসের সঙ্গে তুলনা করেন শিক্ষামন্ত্রী। পরিচালন সমিতির সদস্যদের সামনে তাঁর এই মন্তব্য স্বভাবতই প্রবল অপমানিত বোধ করেন অধ্যাপক বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়। সূত্রের আরও খবর, বৈঠকে হাজির সকলকে চা দেওয়া হলেও, অধ্যক্ষার সঙ্গে সেই সৌজন্যমূলক আচরণও করা হয়নি। সেইসঙ্গে, পরিচালন সমিতির যে অংশ বৈশাখীর বিরুদ্ধে, শিক্ষামন্ত্রী তাঁদেরই পক্ষ নিয়ে কথা বলেন বলেও অভিযোগ। এমনকী অধ্যক্ষার সঙ্গে অপমানজনক আচরণ করার জন্য কলেজের যে শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তাঁকেই শিক্ষা দপ্তরের উচ্চ পদে বসানো হবে বলে খবর। এসব শুনে বৈশাখীদেবী অত্যন্ত ব্যথিত হন। কার্যত কাঁদতে কাঁদতে তিনি বিকাশ ভবন ছেড়ে চলে যান।
সূত্রের খবর, এরপরই অধ্যক্ষার পদ ছেড়ে দেওয়ার ব্যাপারে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ হন অধ্যাপক বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়। বৃহস্পতিবার তিনি সংবাদ প্রতিদিনকে বলেন যে বুধবার বিকাশ ভবনের বৈঠকে তিনি সমস্ত অপমান মাথা নিচু করে সহ্য করেছেন। কারণ, নিজের জন্য কখনও তিনি শিক্ষামন্ত্রীর দ্বারস্থ হননি। সহকর্মীদের সুবিধার জন্যই বারবার তাঁর কাছে তদ্বির করেছেন। কিন্তু তারপরও শিক্ষামন্ত্রী যেভাবে প্রকাশ্যে তাঁর বিরুদ্ধে সংবাদমাধ্যমে তোপ দেগেছেন, তাতে তিনি আহত। এই পরিস্থিতিতে তিনি অধ্যক্ষ পদে থাকা উচিত কাজ বলে মনে করছেন না। তাই শুক্রবার বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর পদত্যাগপত্র পাঠান উচ্চশিক্ষা দপ্তরে। তা পাঠানো হয় শিক্ষামন্ত্রীকেও।
এর আগেও বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায় মিল্লি আল আমিন কলেজের অধ্যক্ষের পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছিলেন। কিন্তু তখন তাঁর পদত্যাগপত্র গৃহীত হয়নি। পার্থ চট্টোপাধ্যায় তাঁকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষা হিসেবে কাজ চালানোর নির্দেশ দেন এবং কলেজের আভ্যন্তরীণ সমস্যা মিটিয়ে দেওয়ার আশ্বাসও দেন। পরবর্তী সময়ে সেই প্রেক্ষাপট অনেকটাই বদলে গিয়েছে। তাই এবার বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়ের কলেজের দায়িত্ব ছেড়ে যাওয়া নিশ্চিত। এদিকে, শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় বিকেলে সাংবাদিক বৈঠক করবেন বলে জানা গিয়েছে। সেখানে তিনি এ প্রসঙ্গে মুখ খুলতে পারেন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.