সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: কাজের পরিবেশ নেই। যা করতে চাইছেন, তা করতে পারছেন না। এই কারণেই আকাদেমি ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন প্রখ্যাত নাট্যব্যক্তিত্ব শাঁওলি মিত্র। অবশেষে সে জট কাটল বলেই মনে করা হচ্ছে। সোমবার পার্থ চট্টোপাধ্যায় জানিয়ে দিলেন, মুখ্যমন্ত্রীর হস্তক্ষেপে সমস্যা মিটেছে। অতএব আকাদেমিতে নিজের দায়িত্বেই থাকবেন শাঁওলি। যেমন কাজ করছিলেন তা চালিয়ে যাবেন।
[ ‘কাজ করতে অসুবিধা’, বাংলা আকাদেমি ছাড়ছেন শাঁওলি মিত্র ]
শাঁওলির আচমকা নেওয়া সিদ্ধান্তে চমকে গিয়েছেন রাজ্যের সারস্বত মহল। রাজ্যে পরিবর্তনের অন্যতম মুখ ছিলেন পদ্মশ্রী এই অভিনেত্রী। সিঙ্গুর-নন্দীগ্রাম গণআন্দোলনের সময় সক্রিয় ভূমিকায় দেখা গিয়েছিল তাঁকে। সাধারণ মানুষের পাশে দাঁড়াতে সেদিন দ্বিধা করেননি। পালাবদলের পর বাংলা আকাদেমির কাজে যোগ দেওয়ার অনুরোধ করা হয় তাঁকে। আকাদেমির উদ্যোগে রবীন্দ্র রচনাবলী প্রকাশের কাজ শুরু করেন। পরে মহাশ্বেতা দেবীর প্রয়াণের পর আকাদেমির সাধারণ কাজের ভারও তাঁর উপর গিয়েই পড়ে। ২০১২ সাল থেকে সভাপতি হিসেবে সে কাজ তিনি করেও চলেছিলেন। তাঁর আমলে বেশ কিছু মূল্যবান বই প্রকাশ করে আকাদেমি। কিন্তু তাল কাটে সম্প্রতি। শাঁওলি জানিয়েছিলেন, বেশ কিছুদিন ধরেই কাজ করতে সমস্যা হচ্ছে তাঁর। যে কাজ, যেভাবে করতে চাইছেন তা করতে পারছেন না বলেই দাবি ছিল তাঁর। পরিকাঠামোগত কিছু সমস্যা হচ্ছে। কোনও কারণে সরকার তা সুরাহাও করতে পারছে না। এ নিয়ে সপ্তাহ তিনেক আগেই মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠিও দেন তিনি। ঠিক কী কী বিষয়ে তাঁর সমস্যা হচ্ছে তা সবিস্তারে তুলে ধরেন। কিন্তু বেশ কিছুদিন কেটে গেলেও কোনও উত্তর পাননি। শাঁওলি তাই জানিয়েছিলেন, কাজ করাটাই তাঁর কাছে মুখ্য। পদের প্রতি তাঁর কোনও মোহ নেই। পদ আঁকড়ে তাই পড়েও থাকতে চান না। বাংলা আকাদেমির দায়িত্ব থেকে তাই সরে যাওয়ারই সিদ্ধান্ত ছিল তাঁর।
[ অচলাবস্থা অব্যাহত, বিনোদিনী বালিকা বিদ্যালয়ে বিক্ষোভ অভিভাবকদের ]
সোমবার পার্থ চট্টোপাধ্যায় অবশ্য জানিয়ে দিলেন, আপাতত আকাদেমিতে নিজের দায়িত্বেই থাকছেন শাঁওলি। যা কিছু সমস্যা হয়েছিল, তা মুখ্যমন্ত্রীর হস্তক্ষেপে মিটে গিয়েছে। কাজ করার ক্ষেত্রে অসুবিধাকেই অব্যাহতির কারণ হিসেবে দেখিয়েছিলেন শম্ভু মিত্রের কন্যা। তা যখন মিটে গিয়েছে, তখন কাজ করতে আর কোনও সমস্যা থাকার কথা নয় তাঁর। অর্থাৎ শাঁওলিকে সরকার যে ফেরাতে চায়, তা স্পষ্ট। পরিবর্তনের পোস্টারেও নাম ছিল গুণী এই অভিনেত্রীর। তাঁর ইস্তফা তাই নানারকম জল্পনার জন্ম দিচ্ছিল। মমতা সরকার ও দলের একাংশ গুণীজনদের কাজে বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে, দমবন্ধ একটা পরিবেশ তৈরি করা হচ্ছে, এরকম একটা অভিযোগও উঠছিল ইতিউতি। কারও আবার দাবি, উনি তো অসুস্থতার কারণে সরে যেতে চেয়েছেন. যদিও শাঁওলি জানিয়েছিলেন, তিনি যা সমস্যা সবই মুখ্যমন্ত্রীকে খুলে বলেছেন। কিন্তু সেখান থেকে কোনও উত্তর না পেয়েই সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এরপরই যে তাঁকে ধরে রাখতে সক্রিয় সরকার, তা শিক্ষামন্ত্রীর মন্তব্যেই পরিষ্কার হল। পার্থর মন্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় শাঁওলি জানান, তিনি সরে যাবেন মনস্থির করেই ফেলেছিলেন। সরকারের প্রস্তাব যদি আসে, তাহলে তিনি পুনরায় কাজে যোগ দেওয়া নিয়ে ভেবে দেখবেন।
[ চালকহীন মেট্রোর মক রেকে স্টেশনের নামে ভুরিভুরি ভুল, আপনার চোখে পড়েছে? ]
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.