অর্ণব আইচ: ফের শহরে দৌরাত্ম্য বানজারা গ্যাংয়ের। এবার বেসরকারি হাসপাতাল চত্বরে হানা দিয়ে এক অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপকের কাছে থেকে টাকা হাতিয়ে নিল দুই নাবালক-নাবালিকা। ভিক্ষা করার নাম করে এসে ওই বৃদ্ধের টাকাসুদ্ধ মানিব্যাগ হাতিয়ে ভিড়ের মধ্যে মিশে যায় তারা। এই বিষয়ে শনিবার ওই অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপকের পুত্রবধূ শেক্সপিয়ার সরণি থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন। এদিনই অন্য এক মহিলার অভিযোগ, ভিক্ষা চাওয়ার নাম করে তাঁর মানিব্যাগ হাতিয়ে নিয়েছে অল্পবয়সী দু’জন, যারা বানজারা গ্যাংয়ের সক্রিয় সদস্য বলে ধারণা পুলিশের।
পুলিশ জানিয়েছে, প্রথম ঘটনাটি ঘটেছে এজেসি বোস (AJC Bose Road) রোডের উপর একটি বেসরকারি হাসপাতালে। এদিন সল্টলেক থেকে ওই অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক দীপেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায় তাঁর স্ত্রীর চিকিৎসার জন্য এই হাসপাতালটিতে আসেন। সঙ্গে ছিলেন তাঁদের পুত্রবধূ মহুয়া চক্রবর্তী। মহুয়া জানিয়েছেন, যে গাড়িটি করে তাঁরা এসেছিলেন, সেটি হাসপাতাল চত্বরের ভিতর ঢুকে পড়ে। তিনি তাঁর বৃদ্ধা শাশুড়িকে ধরে হাসপাতালের ভিতর নিয়ে যাওয়ার জন্য ব্যস্ত ছিলেন। তাঁর শ্বশুর ব্যাগের ভিতর থেকে একটি মানিব্যাগ বের করে গাড়িভাড়ার টাকা মেটাচ্ছিলেন। তখনই ভিক্ষার থালা নিয়ে সেখানে চলে আসে দুই নাবালক-নাবালিকা। তারা ক্রমাগত ভিক্ষার থালা তাঁর শ্বশুরের সামনে ধরে ভিক্ষা চায়। তাদের দেখে হাসপাতালের এক কর্মী সেখান থেকে চলে যেতে বলেন।
অভিযোগ, তবুও তারা ক্রমাগতই বিরক্ত করতে থাকে তাঁকে। এরপর হঠাৎই তারা দৌড়ে বাইরে চলে যায়। পুলিশ জেনেছে, বাইরে দাঁড়িয়ে ছিল তাদের গ্যাংয়ের লোকজনেরা। তাদের ভিড়ে মিশে যায় এই দুজন। এরপর বৃদ্ধ প্রাক্তন অধ্যাপক তাঁর স্ত্রী ও পুত্রবধূকে নিয়ে হাসপাতালে ভিতর আসেন। চিকিৎসার জন্য ফি দেওয়ার সময় দেখেন, চুরি হয়ে গিয়েছে তাঁর মানিব্যাগ। তার ভিতরে ছিল টাকা। মহুয়া চক্রবর্তী হাসপাতালের ওই কর্মীকে নিয়ে শেক্সপিয়ার সরণি থানায় যান। পুলিশের কাছে তিনি অভিযোগ দায়ের করেন। তার ভিত্তিতে চুরির মামলা দায়ের হয়।
সিসিটিভির ফুটেজের সূত্র ধরে তদন্ত চলছে। জানা গিয়েছে, একইদিনে এই এলাকায় অন্য এক মহিলাকে বিরক্ত করতে শুরু করে কয়েকজন কিশোর-কিশোরী। তাঁর হাতে-পায়ে ধরতে শুরু করে তারা। সেই অছিলায় তাঁর কাছ থেকে টাকা ভরতি ব্যাগ নিয়ে পালায় তারা। পুলিশের সূত্র জানিয়েছে, ইতিমধ্যেই বানজারা গ্যাংয়ের কিছু সদস্যকে কলকাতা পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। কিন্তু পুজোর আগে বিভিন্ন এলাকায় দৌরাত্ম্য বেড়েছে তাদের। কখনও ফাঁকা স্টেশন চত্বর, আবার কখনও ফুটপাথে থাকে তারা। এক জায়গায় বেশিদিন থাকে না এই বানজারারা। মূলত মহিলা ও শিশুদের অথবা কিশোর-কিশোরীদের চুরির কাজে লাগায়। যদিও দলের নিয়ন্ত্রণ থাকে পুরুষদের হাতে। তারাই গ্যাং চালায়। সিসিটিভি ফুটেজের সূত্র ধরে অভিযুক্তদের শনাক্ত করার চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.