রূপায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়: যাদবপুর কাণ্ডে কলকাতা রাজপথে মিছিল বাম ছাত্রদের। ‘মানবিকতা’র খাতিরে সেই মিছিলে পা মিলিয়েছে সিনিয়র থেকে জুনিয়র ডাক্তারদের একাংশ। অন্যদিকে কলকাতার কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসকে ‘লাল সন্ত্রাস’ মুক্ত করার দাবিতে পথে নেমেছে বিজেপির যুবমোর্চা। মিছিল, পালটা মিছিলে দক্ষিণ কলকাতার বিস্তীর্ণ এলাকা কার্যত অবরুদ্ধ। ব্যাপক সমস্যায় নিত্যযাত্রীরা।
গত শনিবার যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে ওয়েবকুপার বার্ষিক সাধারণ সভা ছিল। অভিযোগ, ওইদিন সকাল থেকে বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে অশান্তি তৈরির চেষ্টা শুরু করে বাম ছাত্ররা। ছাত্র সংসদ নির্বাচন-সহ একাধিক দাবিতে সুর চড়াতে থাকে তারা। শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে পৌঁছনোর আগে ব্যানার, ফেস্টুন নিয়ে বিক্ষোভ দেখাতে থাকে একদল বাম ছাত্র। ওঠে স্লোগান। পালটা তাতে বাধা দেয় টিএমসিপি। দু’পক্ষের হাতাহাতি, ধস্তাধস্তি শুরু হয়। তারই মাঝে শুরু হয় ওয়েবকুপার বার্ষিক সাধারণ সভা। আচমকা সভাস্থলে পৌঁছে যায় বিক্ষোভকারীরা। তুমুল উত্তেজনার পরিস্থিতি তৈরি হয়। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে থাকা তৃণমূলের শিক্ষাবন্ধু সমিতির অফিসেও ব্যাপক ভাঙচুর শুরু হয়। আগুনও লাগিয়ে দেওয়া হয়। এরপর ব্রাত্য বসুর গাড়ির চাকার হাওয়াও খুলে দেওয়া হয়। ধাক্কাধাক্কিতে চোট পান খোদ শিক্ষামন্ত্রী। এদিকে মন্ত্রীর গাড়ির চাকায় এক ছাত্র আহত হন বলে অভিযোগ ওঠে। এই অভিযোগকে ভিত্তি করে বাংলায় বাম ছাত্র আন্দোলনের ‘মরা গাংয়ে’ এসএফআই ‘জোয়ার’ আনতে চাইছে বলে মত রাজনৈতিক মহলের।
সোমবার রাজ্যের সমস্ত কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে বন্ধের ডাক দিয়েছিল এসএফআই। যা নিয়ে জেলায়-জেলায় অশান্তি বাঁধে। এদিকে বিকেলে যাদবপুর থানা থেকে মিছিলের ডাক দিয়েছিল যাদবপুরের বাম ছাত্র সংগঠনগুলি। গোলপার্কের দিকে গন্তব্য ছিল তাঁদের। কিন্তু মাঝপথেই মিছিল আটকে দেওয়া হয়। সেই মিছিলে যোগ দেন জুনিয়র ডাক্তারদের একাংশ। এ প্রসঙ্গে চিকিৎসক আন্দোলনের অন্যতম মুখ দেবাশিস হালদার জানান, “আজ কোনও ডাক্তারদের আন্দোলনের মুখ হয়ে নয়, মানবিকতার খাতিয়ে এই মিছিলে যোগ দিয়েছি। যাদবপুরে যে ঘটনা ঘটেছে তা মেনে নেওয়া যায় না।” ছিলেন সিনিয়র চিকিৎসক উৎপল বন্দ্যোপাধ্যায়।
এদিকে যাদবপুর কাণ্ডের পালটা পথে নেমেছে বিজেপিও। তাঁদের দাবি, তৃণমূল-সিপিএম ভাই-ভাই। ক্যাম্পাসগুলি ‘লাল সন্ত্রাস’ মুক্ত করতে হবে। এ প্রসঙ্গে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী বলেন, “যাদবপুরে অনেক সেকু-মাওরা রয়েছে। তাদের অফিসে তালা ঝোলানো হক। গুন্ডামি বন্ধ করা হোক এখনই।” যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের দাবিও জানিয়েছেন তিনি। সবমিলিয়ে এদিন যাদবপুর কাণ্ডে বাম-বিজেপির মিছিলে উত্তাল গোটা কলকাতা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.