রূপায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়: বাংলার পার্টি নয়। বাঙালির আবেগ, সংস্কৃতি তারা বোঝে না! এই তকমা বারবার জুটেছে। আর তাই আদ্যোপান্ত বাঙালি দল হতে বাঙালির উৎসব নববর্ষকেই হাতিয়ার করল গেরুয়া শিবির। ধুতি-পাঞ্জাবি পরে দিলীপ ঘোষ (Dilip Ghosh) গাইলেন গান।
শুক্রবার, পয়লা বৈশাখের সকালে পাঞ্জাবি-ধুতি পড়ে বর্ষবরণের উৎসবে মেতে উঠলেন বঙ্গ বিজেপি নেতারা। কেউ গাইলেন গান, কেউ পড়লেন কবিতা। বর্ষবরণের আসরে চমক দিয়ে মঞ্চে দলের সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষকে গান গাইতে দেখা গেল। ধুতি-পাঞ্জাবি পরেই গিয়েছিলেন বিজেপির প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি। রাজ্য রাজনীতিতে ব্যতিক্রমী চরিত্র দিলীপ ঘোষকে লাঠি খেলতে দেখা গিয়েছে আগে। কিন্তু ‘গায়ক’ দিলীপ ঘোষকে এই প্রথম দেখল দলের কর্মীরা। সংঘের শাখায় গাওয়া দেশাত্মবোধক গান গাইলেন তিনি। আর পুরোও অনুষ্ঠান পরিচালনার দায়িত্ব দর্শকাসন থেকেই সামলাতে দেখা গেল রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারকে।
বিজেপির তরফে এইভাবে নববর্ষ উদযাপনের নজির আগে ছিল না। তবে এই বর্ষবরনের অনুষ্ঠানেও অবশ্য সামনে চলে এসেছে আদি-নব্য ভেদাভেদ। দলের দুই পুরনো নেতা প্রতাপ বন্দ্যোপাধ্যায় ও রাজু বন্দ্যোপাধ্যায়কে এদিন দেখা যায়নি। সূত্রের খবর, দলের রাজ্য সহ-সভাপতি রাজু বন্দ্যোপাধ্যায়কে নাকি আমন্ত্রণই করা হয়নি নববর্ষের অনুষ্ঠানে। ছিলেন না বনগাঁর সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শান্তনু ঠাকুর। রাজ্য কমিটি থেকে বাদ পড়া সায়ন্তন বসু উপস্থিত থাকলেও নেতৃত্বের সঙ্গে দূরত্ব রেখে কিছুটা পিছনের সারিতেই ছিলেন তিনি।
দিলীপ-সুকান্ত ছাড়াও অবশ্য ছিলেন সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায়, প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি রাহুল সিনহারা। পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় থাকলেও কলকাতায় দলের নববর্ষ পালন অনুষ্ঠানে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী কেন এলেন না তা নিয়েও আবার প্রশ্ন তুলেছেন কেউ কেউ। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান শেষে দলের নেতাদের জন্য দুপুরের মেনুতে ছিল মাটির থালায় ভাত, শুক্তো, ভাজা, ইঁচড়-চিংড়ি, কচি পাঁঠার মাংস আর মিষ্টি। নিরামিষ ছেড়ে আমিষে ফিরে বঙ্গ বিজেপি নেতারা এদিন অবাঙালি তকমা ঝেড়ে ফেলার চেষ্টাও করেছেন এদিন।
এদিন হরিনঘাটার বিজেপি বিধায়ক অসীম সরকার কবি গান করে আসর জমিয়ে দেন। পাপিয়া অধিকারীর পরিচালনায় একটি নৃত্যলেখ্য মঞ্চস্থ হয়। আবার প্রখ্যাত সঙ্গীতশিল্পী আরতী মুখোপাধ্যায়ও মঞ্চে সংগীত পরিবেশন করেন। তবে নববর্ষ উপলক্ষে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হলেও রাজনীতির বাইরে এদিন বেরতে পারেননি বিজেপি নেতারা। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানেও ছিল রাজনৈতিক বার্তা। অনেকের মতে নববর্ষের অনুষ্ঠানে রাজনীতি বাদ থাকলেই ভাল হত।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.