রূপায়ণ গঙ্গোপাধ্যায় : রাজ্যে CAA বিরোধী গন্ডগোলের পিছনে রয়েছে বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী ও শহুরে নকশালরা। শনিবার বিকেলে রাজভবনে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে দেখা করে মৌখিক রিপোর্ট দিল রাজ্য বিজেপি। তাতে CAA নিয়ে রাজ্যের বর্তমান পরিস্থিতি প্রধানমন্ত্রীকে জানায় বিজেপি নেতৃত্ব। এমনটাই খবর দলীয় সূত্রে। এমনকী তৃণমূলের CAA বিরোধী আন্দোলন যে রাজ্যে পিছিয়ে পড়ছে এটাও প্রধানমন্ত্রীকে জানান বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ।
প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাতের পর রাজভবনের বাইরে বেরিয়ে দিলীপ ঘোষের দাবি, ‘প্রধানমন্ত্রী CAA নিয়ে কী আন্দোলন ও ঝামেলা চলছে তা জানতে চান। বললাম, আগে মুখ্যমন্ত্রী এগোচ্ছিলেন। এখন আমরা এগোচ্ছি আর মুখ্যমন্ত্রী পিছিয়ে পড়ছেন।’
CAA’র সমর্থনে জনমত গঠনে রাজ্যজুড়ে বিজেপি এক কোটি পরিবারের কাছে যাবে এটাও আজ মোদিকে জানান বিজেপি নেতৃত্ব। এখনও পর্যন্ত নাগরিকত্ব আইনের সমর্থনে বঙ্গ বিজেপি যেসব মিছিল ও মিটিং করেছে তার কোলাজ—সহ এই সম্পর্কিত একটি পুস্তিকা প্রধানমন্ত্রীর হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে দলের তরফে। সিএএর পক্ষেই যে বাংলার মানুষ রয়েছে এটা বোঝাতেই বিজেপির সভা ও মিছিলে যে ভাল ভিড় হয়েছে তার ছবি প্রধানমন্ত্রীকে তুলে দেয় দলীয় নেতৃত্ব।
রাজ্যে দু’দিনের সফরে এসেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। শনিবার বিকেলে কলকাতা বিমানবন্দর থেকে হেলিকপ্টারে রেস কোর্স হয়ে রাজভবনে আসেন তিনি। শনিবার বিকেল চারটে নাগাদ রাজভবনে মোদির সঙ্গে দেখা করতে আসে রাজ্য বিজেপির ১৫ জনের প্রতিনিধিদল। সেই দলে ছিলেন রাজ্যের দায়িত্বপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় নেতা কৈলাস বিজয়বর্গীয়, শিবপ্রকাশ, কেন্দ্রীয় নেতা রাহুল সিনহা, মুকুল রায়, রাজ্য সভাপতি দিলীপ ছাড়াও সুব্রত চট্টোপাধ্যায়, কিশোর বর্মন, সায়ন্তন বসু, রাজু বন্দ্যোপাধ্যায়, বিশ্বপ্রিয় রায়চৌধুরি, সাংসদ রূপা গঙ্গোপাধ্যায়, ডা. সুভাষ সরকার ও শমীক ভট্টাচার্য—সহ রাজ্য বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব। পরে আসেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়। নিরাপত্তার কড়াকড়ির জন্য রাজভবনের গেটে গাড়ি ও মোবাইল রেখেই ভিতরে যেতে হয় বিজেপি নেতাদের। তাঁদের সঙ্গে আধঘণ্টা বৈঠক করেন নরেন্দ্র মোদি। সূত্রের খবর, রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির কথা উল্লেখ করে কুমারগঞ্জে গণধর্ষণের ঘটনা নিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে রিপোর্ট দেয় বিজেপি নেতৃত্ব। সবকথা শোনার পর CAA’র সমর্থনে রাজ্যজুড়ে আরও বেশি করে সভা করার পরামর্শ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।
আজ প্রধানমন্ত্রী ও মুখ্যমন্ত্রীর বৈঠক নিয়ে বিজেপি সঙ্গে তৃণমূলের আঁতাতের অভিযোগ তুলেছে বাম-কংগ্রেস। এই অভিযোগের সমালোচনা করে পালটা জবাব দিয়েছে বিজেপি নেতৃত্ব। দিলীপ ঘোষ বলেছেন, ‘ওদের (বাম-কংগ্রেস) এই কথা নতুন নয়। এই গান গাইতে গাইতে ওরা বিসর্জনে চলে গিয়েছে।’ কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়র বক্তব্য, ‘প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কোনও রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী দেখা করবেন, যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোয় এটাই স্বাভাবিক। CAA ও NRC নিয়ে রাজ্যের তরফে কোনও বক্তব্য থাকলে প্রধানমন্ত্রীকে জানাতেই পারেন মুখ্যমন্ত্রী। কেন্দ্র ও রাজ্যের আলোচনা সবসময়ই চলে। এটা তো খুশির বিষয়। কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে সবসময়ই সৌজন্যের আবহাওয়া থাকে। আর যে বাম ও কংগ্রেস এসব সেটিংয়ের কথা বলছে বর্তমানে তাদের কোনও প্রাসঙ্গিকতা নেই। ইস্যু করতে হবে তাই করছে।’
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.