সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: একুশের নির্বাচন (WB Assembly Election 2021) শিক্ষা দিয়েছিল। উপনির্বাচন ধাক্কা দিল আরও খানিক। ভবানীপুরের উপনির্বাচন ছাড়াও সামশেরগঞ্জ, জঙ্গিপুরও প্রায় শূন্য হাতে ফিরিয়েছে গেরুয়া শিবিরের সৈনিকদের। বাংলায় সংগঠন জোরদার করা দূর অস্ত। পরপর হারের রেকর্ড গড়ে মনোবল আরও ভাঙছে বিজেপির (BJP)। ভবানীপুর উপনির্বাচনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে ৫৮ হাজারের বেশি ভোটে হেরেছেন বিজেপি প্রার্থী প্রিয়াঙ্কা টিবরেওয়াল। তিনি একুশের বিধানসভা ভোটে এন্টালি থেকেও পরাজিত হয়েছিলেন। উল্লেখযোগ্যভাবে তার ব্যবধানও ছিল ৫৮ হাজার। অন্যদিকে, জঙ্গিপুরে বিজেপি দ্বিতীয় স্থান দখল করলেও, সামসেরগঞ্জে বিজেপি নেমে গিয়েছে একেবার তৃতীয় স্থানে। তবে একদা শাসকের চেয়ারে বসে থাকা বামেদের অবস্থা আরও খারাপ। তিনটি কেন্দ্রে জামানত বাজেয়াপ্ত হয়েছে প্রার্থীদের।
সামসেরগঞ্জে (Samserganj) ভোটের পরিসংখ্যান বলছে, বিজেপি প্রার্থী মিলন ঘোষ পেয়েছেন মাত্র ১০ হাজার ৭৭৭ ভোট। তাঁর চেয়ে বেশি ভোট ঝুলিতে ভরেছেন কংগ্রেসের জইদুর রহমান। ফলে সামসেরগঞ্জে জইদুর দ্বিতীয় স্থানে। এবং বিজেপি যথারীতি তৃতীয়। আর সিপিএম প্রার্থী মোদাস্সর হোসেনের পারফরম্যান্স আরও খারাপ। তিনি পেয়েছেন মাত্র ৬১৪৫ ভোট। আবার জঙ্গিপুরের তৃণমূল প্রার্থী জাকির হোসেন জিতেছেন ৯২ হাজার ৬১৩ ভোটে। অর্থাৎ নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিজেপির সুজিত দাস এতগুলো ভোটই কম পেয়েছেন। এই পরিসংখ্যানেই স্পষ্ট, প্রথম ও দ্বিতীয় স্থানে থাকা প্রার্থীদের ভোটপ্রাপ্তির ফারাক ঠিক কতখানি।
এবার আসা যাক মূল ফোকাসে থাকা ভবানীপুরে (Bhabanipur)। সেখানে একুশের নির্বাচনে বিজেপি তারকা প্রার্থী অভিনেতা রুদ্রনীল ঘোষ ২৮ হাজারের বেশি ভোটে হেরেছিলেন। সেবার তৃণমূল প্রার্থী ছিলেন শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়। তবে ভবানীপুরকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কেন্দ্র হিসেবে বাড়তি গুরুত্ব দিয়ে রুদ্রনীলকে যুদ্ধের ময়দানে এগিয়ে দিয়েছিল গেরুয়া শিবির। কিন্তু তিনি তেমন একটা দাগ কাটতে পারেননি, ভোটের ফলাফলেই তা স্পষ্ট। উপনির্বাচনে আবার ভবানীপুর এলাকার জনবিন্যাসের কথা মাথায় রেখে দলের লড়াকু নেত্রী প্রিয়াঙ্কা টিবরেওয়ালকে (Priyanka Tibrewal)প্রার্থী হিসেবে দাঁড় করিয়েছিল বিজেপি। তবে তাঁর ব্যর্থতা আরও বড়। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে ৫৮ হাজারেরও বেশি ভোটে পরাজিত প্রিয়াঙ্কা। হেরেই দলের সাংগাঠনিক খামতি মেনে নিলেন প্রিয়াঙ্কা। বললেন, “আমাদের দলের সাংগাঠনিক খামতি ছিল। সেটা মেরামত করতে হবে। ভোটে লড়তে হলে সংগঠন মজবুত হওয়া দরকার।” তবে লড়াকু প্রিয়াঙ্কা বলেন, “হেরেছি ঠিকই তবে ভবানীপুর (Bhabanipur) ছাড়ব না।”
বাংলার মাটি দখলের লক্ষে যত বেশি ঝাঁপিয়েছে বিজেপি, ততই ধাক্কা খেতে হয়েছে। একুশের নির্বাচন তার প্রকৃষ্ট উদাহরণ। ৭৭ জন বিধায়ক নির্বাচিত হওয়ার পরও তা ধরে রাখতে পারেনি গেরুয়া শিবির। এই মুহূর্তে বিধায়কের সংখ্যা ৭১। ছ জন ইতিমধ্যেই দল ছেড়ে যোগ দিয়েছেন তৃণমূলে। ফলে বলাই বাহুল্য যে জমি শক্ত করতে এসে আসলে জমি ক্রমশ হারাচ্ছে পদ্মশিবির।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.