রূপায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়: বিতর্ক মাথায় নিয়েই নব্য আর আদি নেতা-কর্মীদের ক্ষোভের মধ্যেই মুরলীধর সেন লেনে বিজেপির রাজ্য দপ্তর ভাঙার কাজ শুরু হয়ে গেল। প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ (Dilip Ghosh), রাহুল সিনহাদের ঘর ভাঙার কাজ শুরু হল। দীর্ঘ চার দশক ধরে দশজন সভাপতি বিজেপির এই অফিসে বসেছেন। বুধবার কয়েকজন নেতা অফিসে আসেন। আর তার পর দিন বৃহস্পতিবার বিকাল থেকেই তড়িঘড়ি ভাঙার কাজ শুরু হয়েছে। গোটা অফিসে নাকি ৪২টি লোকসভা কেন্দ্রের আইটির কাজ হবে।
প্রশ্ন, সেজন্য কর্মীদের আবেগ যে অফিসের সঙ্গে জড়িয়ে আছে, সেই পুরোনো ও অনেক ঘটনার সাক্ষী পার্টি অফিস ভাঙতে হবে কেন? তাহলে কি দিলীপ ঘোষ বা রাহুল সিনহারা (Rahul Sinha) এখানে জনসংযোগ না করতে পারেন, আসল লক্ষ্য সেটাই? রাজ্য বিজেপির ক্ষমতাসীন শিবিরের বিরুদ্ধে একরাশ ক্ষোভ ও প্রশ্ন রয়েছে দলের বড় অংশের। বঙ্গ বিজেপির পুরনো নেতাকর্মীরা কেউই স্থায়ীভাবে সল্টলেকের নয়া কার্যালয়ে যেতে চাইছিলেন না। দলের বড় অংশই চাইছে না সমস্ত রাজনৈতিক কাজকর্ম বন্ধ করে দেওয়া হোক মুরলীধর সেন লেনের (Murli Dhar Sen Lane) পার্টি অফিস থেকে।
যে পার্টি অফিসে শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় থেকে শুরু করে অটলবিহারী বাজপেয়ীর মতো রাজনৈতিক মহীরুহরা এসেছেন, এই অফিসের একটা আলাদা গুরুত্ব রয়েছে। অথচ সেই মুরলীধর সেন লেনের পার্টি অফিসের তকমাই মুছে দিচ্ছে বর্তমান বঙ্গ বিজেপির শাসক শিবির। মুরলীধর সেন লেনের পুরনো পার্টি অফিসে সমস্ত নেতা-কর্মীদের অবাধ প্রবেশ রয়েছে। শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে ঘরে আড্ডা থেকে সাংগঠনিক আলোচনাও চলতো। যখন দিলাীপ ঘোষ, রাহুল সিনহার মতো প্রাক্তন রাজ্য সভাপতিরা এসে বসেন তাঁদের ঘরে পুরনো নেতা-কর্মীদের ভিড় থাকে। বঙ্গ বিজেপির আদি শিবিরের অভিযোগ, সল্টলেকের কার্যালয়ে এই সুযোগ নেই। সেক্টর ফাইভে এই কার্যালয় পুরো কর্পোরেট অফিসের মতো। দলের নিচুতলার নেতা-কর্মীদের অবাধ প্রবেশ নেই।
তাছাড়া, কলকাতার প্রাণকেন্দ্র থেকে অনেক দুরে সল্টলেকের কার্যালয়। গাড়ি ছাড়া যাওয়া খুবই সমস্যার। তাই দলের পুরনোরা চাইছেন, মুরলীধর সেন লেনের পার্টি অফিসের গুরুত্বের কথা বিবেচনা করে এখানেও রাজ্য নেতাদের ঘর থাকুক। কিন্তু কর্মীদের সেই দাবিকে মান্যতা না দিয়ে শুরু হয়ে গেল রাজ্য অফিস ভাঙার কাজ। উৎখাত করা হচ্ছে দিলীপ ঘোষ আর রাহুল সিনহাদের। রাজ্য বিজেপির ক্ষমতাসীন শিবির চাইছে এই পার্টি অফিস থেকে শুধুমাত্র আইটি-র কাজকর্ম চলবে। রাজ্য বিজেপির ক্ষমতাসীন শিবির যেনতেন প্রকারে চাইছে মুরলী ধর সেন লেনের পার্টি অফিস যাতে কোনও নেতারা আর ব্যবহার করতে না পারেন। এমনই অভিযোগ বিজেপির আদি শিবিরের।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.