সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: দেশজুড়ে হিংসা, ধর্মের নামে হানাহানি, বিতর্কিত আইনের জেরে ধর্মীয় রেষারেষি, এবং সর্বোপরি ‘রাষ্ট্রের দমন-পীড়নে’ নাগরিকদের প্রাণহানি। নিন্দুকের বলছেন, এ এক কঠিন সময়। আর কঠিন সময়ে প্রতিবাদ হবে না! তা তো হতে পারে না। কেউ রাস্তায় নামছেন, কেউ সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রতিবাদে সরব হচ্ছেন, আবার কেউ সচেতনতা বাড়াতে সভা-সংগঠন করছেন। প্রতিবাদে অভিনবত্বও এসেছে। কখনও দেখা গিয়েছে, কেউ সাঁতার কেটে হিংসার প্রতিবাদ করছেন, আবার কখনও দেখা গিয়েছে খেলার মাঠে ব্যানার নিয়ে হাজির পডু়য়া। অভিনবত্বের তালিকায় নবতম সংযোজন শিক্ষা-তথা জ্ঞানের আতুড়ঘর কলকাতা বইমেলার একটি স্টল। এই স্টলটিতে আদ্যোপান্ত সংবিধানের মূল ভিত্তি ধর্মনিরপেক্ষতাকে প্রতিষ্ঠা করতে চেয়েছে ‘সৃষ্টিসুখ’ কর্তৃপক্ষ।
স্টলের গেটেই দুই ভাষায় লেখা সংবিধানের প্রস্তাবনা। যাতে ভারতকে ধর্মনিরপেক্ষ সমাজতান্ত্রিক গণতন্ত্র রূপে প্রতিষ্ঠা করার অঙ্গীকার করা হয়েছে। গোটা স্টলের আনাচে-কানাচে লেখা মণীষীদের বাণী। কোথাও নজরুলের (Kazi Nazrul Islam), ‘হিন্দু না ওরা মুসলিম..’ আবার কোথাও কবিগুরুর (Rabindranath Tagore) ‘ধর্মের পাশে মোহ যাঁরে এসে ধরে, অন্ধ সে জন মারে আর শুধু মরে।’ বাদ যাননি লালন ফকির, ফৈয়জ আহমেদ ফৈয়জরাও। লালনের ‘জগৎ বেড়ে জাতের কথা’র পাশে ঠাঁই পেয়েছে ফৈয়জ আহমেদের ‘হম দেখেঙ্গে…’ আসলে, এসব কিছুর একটাই লক্ষ্য, একটাই উদ্দেশ্য। ধর্মের ধ্বজাধারীদের মনে করিয়ে দেওয়া, বহুযুগ ধরে ধর্মনিরপেক্ষতাই ভারতের ভিত্তি। আর এই ভিত্তিকে টলানো যাবে না কোনওভাবেই।
সৃষ্টিসুখের কর্ণধার রোহন কুদ্দুস সরাসরিই বললেন, “দেশে এই যা সময় চলছে! সিএএ বলুন, এনআরসি বলুন বা এনপিআর বলুন, অশান্তির মূলে হয়তো এগুলোই। আমরা, আমাদের বন্ধুবান্ধব সকলেই সোশ্যাল মিডিয়ায় হোক, বা অন্য কোনওভাবে প্রতিবাদ করেছি। আসলে আমাদের দেশটা তো সবার। সেটা আরও একবার মনে করিয়ে দেওয়ার চেষ্টা মাত্র। খুব পরিচিত কিছু মানুষের কালজয়ী কিছু কথা, আর সেই সঙ্গে দুই ভাষাতেই সংবিধানের প্রস্তাবনা দিয়ে আমরা স্টল সাজিয়েছি। এবার এটাকে যদি আপনারা প্রতিবাদ বলেন, তাহলে প্রতিবাদ। যদি, মনে করিয়ে দেওয়া বলেন, তাহলে মনে করিয়ে দেওয়া।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.