গোবিন্দ রায়: মতুয়া মহাসংঘের মামলায় পুলিশের ভূমিকা নিয়ে তীব্র ভর্ৎসনা কলকাতা হাই কোর্টের। কোনও কিছু খতিয়ে না দেখে শুধুমাত্র এফআইআরে শান্তনু ঠাকুরের বিরুদ্ধে শুধুমাত্র খুনের ধারা যোগ করেনি পুলিশ, পর্যবেক্ষণ আদালতের। কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশে শর্তসাপেক্ষে ব্যবহার করা যাবে মতুয়া মহাসংঘের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট। এবার থেকে ওই অ্যাকাউন্ট থেকে খরচ করা টাকার হিসাবনিকেশ রাখতে হবে বলেই জানান বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা।
ঘটনার সূত্রপাত বেশ কয়েকদিন আগে। তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ মমতাবালা ঠাকুর দাবি করেন, বেআইনিভাবে মতুয়া মহাসংঘের অ্যাকাউন্টে কোটি কোটি টাকা জমা করেছেন শান্তনু ঠাকুর। থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। তার ফলে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ করে দেয় পুলিশ। সেই দ্বন্দ্বের জলই গড়ায় কলকাতা হাই কোর্টে। পুলিশ বেআইনিভাবে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ করেছে বলে দাবি করে আদালতের দ্বারস্থ হন শান্তনু। ওই মামলার পরিপ্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার শর্তসাপেক্ষ ওই ফ্রিজ হওয়া অ্যাকাউন্টটি ব্যবহারের নির্দেশ দেন বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা। ওই অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করলে তার পুঙ্খানুপুঙ্খ হিসাব রাখতে হবে বলেই জানান বিচারপতি। আদালতের দেওয়া শর্ত অনুযায়ী, হিসাব দিতে হবে থানাকে। তার আগে ব্যাঙ্কে গ্যারেন্টার হিসেবে দেড় কোটি টাকা জমা দিতে হবে হাই কোর্টের রেজিস্ট্রারের কাছে।
বিচারপতির পর্যবেক্ষণ, “রাজনৈতিক প্রতিহিংসা এমন শত্রুতা বাড়ার মূল কারণ। দুপক্ষই যেহেতু রাজনৈতিকভাবে দুটি ভিন্ন মেরুতে আছেন, সেখানে মতুয়া মহাসংঘের রাশ কার হাতে থাকবে, তা নিয়ে দ্বন্দ্ব অস্বাভাবিক নয়।” এর পরই গাইঘাটা থানার পুলিশের ভূমিকা নিয়ে জোর সমালোচনা করেন বিচারপতি। তাঁর মতে, “অভিযোগ পাওয়ার পরে ন্যূনতম অনুসন্ধান করার চেষ্টা করেনি পুলিশ। সরাসরি FIR করা বেশি সহজ মনে করেছে। আবার ওসি প্রতারণা-সহ একাধিক ধারা জুড়ে দিয়েছেন। শুধুমাত্র খুনের ধারা যুক্ত করতে বাকি রেখেছেন। আদালত মনে পরে এটা বেআইনি।” এই এফআইআরের ভিত্তিতে কীভাবে অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ হল, সে প্রশ্নও তোলেন বিচারপতি। আগামী তিন সপ্তাহের মধ্যে সব পক্ষকে আদালতে হলফনামা জমা দেওয়ার নির্দেশ রাজাশেখর মান্থার।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.